মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা
ইলা মুৎসুদ্দী
প্রভাতসূর্য, এসেছে রুদ্রসাজে
দুঃখের মাঝে তোমারি তূর্য বাজে
অরুণ বহ্নি জ্বালাও চিত্ত মাঝে,
মৃত্যুর হোক লয়।
Happy New Year 2017। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে প্রকৃতি যেমন নব সাজে সজ্জিত হয়, তেমনি নতুন বছরের আগমনে আমাদের সকলের মনে এক অপূর্ব শিহরণ জেগেছে বসন্তের একান্ত হিল্লোলে।
মনুষ্যত্ব অর্জন অতীব দুর্লভ। এ মনুষ্যত্ব কেহ জন্মের সাথে সাথে সঙ্গে করে নিয়ে আসে না। জন্মের পরেই প্রত্যেক মানুষকে তা তিল তিল করে কর্মের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। মানবতা এমন একটি বিশ্বাসের প্রক্রিয়া, যা সব মানুষের প্রয়োজন। ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ সম্পর্ক বিচারের শক্তি অর্জনই হচ্ছে মনুষ্যত্ব। মানবীয় গুণাবলীর উৎকর্ষ সাধন ছাড়া মনুষ্যত্ববোধের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা চাই এদেশের সর্বস্তরে মানবীয় গুণাবলীর চর্চা হোক। সকল উদ্বেগ-আশংকা, অস্থিরতা কাটিয়ে সমাজে এবং রাষ্ট্রে ফিরে আসুক শান্তির বারতা। মানবতার জয় হোক। বিশ্বজনীন চেতনার দ্বারাই সহাবস্থান সম্ভব হয়। বিশ্বজনীন অনুভবেই অর্জিত হয় মানবমৈত্রী।
2016 সালে ঘটে গেল অজস্র ঘটনা, দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় নিহত হলো সহস্রাধিক। এভাবেই এক একটা খারাপ ক্ষণ অতিবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে আমরা একটি কঠিন সময় অতিক্রান্ত করছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে আবারও অসাম্প্রদায়িকতার দাবানল জ্বলে উঠেছে। মানুষে মানুষে হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি, হানাহানি, হত্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের নৈতিকতা বোধ লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এজন্য শিশুদের শৈশবকাল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। অভিভাবকমহলকে সচেতন হতে হবে এবং ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। শিশুদের মধ্যে নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে পারলেই আমাদের দেশ ও সমাজ হবে নিষ্কন্টক পবিত্র। কারণ যার মধ্যে নৈতিকতা এবং সততার জোর থাকবে সে কোনদিন অপকর্মে লিপ্ত হবে না। আমাদের আরো প্রয়োজন মৈত্রী ভাবনা। একমাত্র মৈত্রী ভাবনাই পারে বিশ্বে শান্তি আনয়ন করতে। আমাদের পারষ্পরিক মৈত্রীপরায়নতা নেই বলেই বার বার আমরা বড় বড় বিপর্যয় ও বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছি। যার দরুন হাজারো মানুষের মৃত্যু আমাদের হৃদয় কাঁদিয়ে যায়। যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদেরকে পুণ্য দান করছি যাতে তারা সকলেই সুগতি প্রাপ্ত হয় আর যারা বিভিন্নভাবে আহত হয়ে বেঁচে আছে তারা যেন দ্রুত আরোগ্য লাভ করে সুস্থ জীবন ফিরে পায়। পরিশেষে কবির কয়েকটি চরণ দিয়ে ইতি টানছি এবং সকলের সুস্থ, নীরোগ দীর্ঘায়ু জীবন কামনা করছি। পরিশেষে কবির ভাষায় বলি —–
গাহি সাম্যের গান
যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে
সব বাধা ব্যবধান,
যেখানে মিশিছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রীশ্চান।