ইলা মুৎসুদ্দী
নির্দোষ কর্ম সম্পাদন। নির্দোষ কর্ম কলতে- যে কাজে কোন দাগ বা মালিন্য নেই। যা’ জ্ঞানিগণ অবশ্যই প্রশংসা করেন। যেমন পঞ্চ অধর্ম বাণিজ্য পরিবর্জন, কুশল কর্ম সম্পাদন, মাতা-পিতা শ্রমণ-ব্রাহ্মণগণের ভজন-পূজন, পঞ্চশীল পালন, উপোসথ দিবসে অষ্টশীল গ্রহণও যাবতীয় অকুশল কর্ম বর্জন প্রভৃতি নির্দোষ কর্ম। সংসারে কতেক মানুষ এমন কাজ করে বসে- যার ফলে রাজকীয় দণ্ড, সামাজিক দণ্ড ভুগিতে হয় এবং পরিশেষে নারকীয় যন্ত্রণাও ভোগ করতে হয়। সুতরাং সেই সব দোষজনক পাপকর্ম বর্জন করে নির্দোষ দানাদি পবিত্র কর্ম সম্পাদন করাই উত্তম মঙ্গল।
মানুষ ইচ্ছা করলে নিজকে সুপথে সুন্দরভাবে চালিত করতে পারে কিন্তু মোহ-মুগ্ধ মানুষ সেদিকে লক্ষ্য রাখে না। তারা আপন সুখের প্রত্যাশী হয়ে অন্য প্রাণীকে নিপীড়ন করে থাকে। ইহা একান্তই আপন জীবনের অহিতকর। তাই বুদ্ধ বলেন- ‘অত্তানং চে পিয়ং জঞ্ঞে রক্খেয্য তং সুরক্খিতং’ যদি নিজকে ভালবাস, নিজকে প্রিয় বলে মনে কর, তবে আপন আÍাকে সুন্দরভাবে রক্ষা কর। বস্তুতঃ যারা প্রাণীহত্যাদি দুশ্চরিত কর্ম সম্পাদন করে, তারা নিজকেই কলুষিত করে এবং নিজকে প্রিয়জ্ঞান করলেও তাহা জ্ঞানীর দৃষ্টিতে তারা নিজকে ততো প্রিয় মনে করে না। যেহেতু তারা পাপধর্মে নিমগ্ন। এরূপ মানুষ ঘোর তামসিকরূপে পরিগণিত। এমন পাপী মানুষের মুক্তি কদাচ সম্ভব নয়। পরন্তু যারা প্রাণীহত্যাদি দুশ্চরিত কর্ম হতে বিরত হয়ে আপন জীবনকে পরিশুদ্ধভাবে চালিত করে, তারা নিজকে ভালবাসে এবং আপন মুক্তির পথ সুপ্রশস্ত করে।
সূত্র ঃ বিশ্বমঙ্গল ও বিবিধ প্রসঙ্গ, শ্রী কোণ্ডাঞো ভিক্ষু।