পূর্বজন্মের কুবাক্যের কুফল কিভাবে অনুসরণ করেছিল?
ইলা মুৎসুদ্দী
কাশ্যপ বুদ্ধের আবির্ভাবকালে এই ভিক্ষুণী সম্ভ্রান্ত বংশে জন্মগ্রহণ করিয়া আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভের ফলে ভিক্ষুণী-ব্রত গ্রহণ করিয়া শীল পালনে তৎপর হন। কিন্তু অপেক্ষাকৃত বয়োবৃদ্ধ অর্হত্ত্ব প্রাপ্ত এক ভিক্ষুণীকে বেশ্যা নামে অভিহিত করার পাপে নিতি নরকে গমন করেন। গৌতম বুদ্ধের সময়ে তিনি কাশীতে একজন খ্যাতনামা সমৃদ্ধিশালী নাগরিকের সন্তানরূপে পুনর্জন্ম গ্রহণ করেন। কিন্তু তাঁহার পূর্বজন্মের কুবাক্যের কুফল এখনও তাঁহাকে অনুসরণ করিতেছিল। সেই হেতু তাঁহাকে নিজেও গণিকাবৃত্তি অবলম্বন করিতে হয়। পরবর্তীকালে তাঁহার সংসার ত্যাগ ও ভিক্ষুণীরূপে অভিষেকের বিবরণ বিনয় পিটকান্তর্গত চুল্ল বগ্গে বর্ণিত আছে। তিনি শ্রাবস্তী নগরে ভগবান বুদ্ধের সমীপে গমন পূর্বক তাঁহার নিকট অভিষেক লইবার কামনা করেন। কিন্তু বারাণসীর বারনারীগণ তাঁহার গমন পথের বাধা স্থাপন করায় তিনি বার্তাবহ প্রেরণ পূর্বক বুদ্ধের মন্ত্রণা জিজ্ঞাসা করেন। ভগবান তাঁহাকে বার্তাবহ দ্বারা অভিষিক্ত হইবার অনুমতি দান করেন। অভিষেকের পর তিনি অর্ন্তদৃষ্টির অনুশীলন করিয়া অনতিবিলম্বে অর্হত্ব লাভ করিলেন, ধর্মের পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারিণী হইলেন।
উল্লাসে তিনি গাহিলেন ঃ
কাশীরাজ্যের রাজস্বের পরিমাণ বিপুল, আমারও পারিশ্রমিক তদপেক্ষা কম ছিল না।
নগরবাসীগণ উহাই মূল্যরূপে নির্দ্দিষ্ট করিয়া আমাকে অমূল্য মনে করিত।
কিন্তু আমার সকল সৌন্দর্য্য এখন আমার নিকট বিরক্তিকর, শ্রান্তিজনক; আমি মোহমুক্ত,
পুনর্জন্ম ও মৃত্যুর চক্রে আমি আর ঘুর্ণিত হইব না! আমি ত্রিবিদ্যার ফল প্রাপ্ত হইয়াছি।
সূত্র – ভিক্ষু শীলভদ্র রচিত থেরী গাথা