ইলা মুৎসুদ্দী
সামন্তচক্ষু বুদ্ধ ভবিষ্যৎ বাণী প্রকাশ করে বল্লেন “হে আমার প্রিয় শিষ্য মণ্ডলী, যে ব্যক্তি সপ্তাহ-কাল যাবৎ আমাদেরকে মহাদান দিয়েছে, তার দানের সফলতা ও লাভী শ্রেষ্ঠত্বপদ প্রার্থনা পরিপূর্ণ হবে দেখে আমি ঈষৎ হেসেছি। এখন আমি তাঁর দানের ফল বর্ণনা করবো তোমরা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ কর। জগতের মহাঋদ্ধি সম্পন্ন দেবগণও বুদ্ধ বাক্যের সারাংশ উপলব্ধি করতে পেরেছে, সেজন্য তারা সকলে বুদ্ধ-মুখ নিঃসৃত সদ্ধর্ম বাণী শ্রবণ মানসে এখানে উপস্থিত হয়েছে। শ্রেষ্ঠীপুত্র প্রসন্ন চিত্তে যেই বুদ্ধ-প্রমুখ ভিক্ষুসংঘকে মহাদান করেছে, সে তার কৃতপুণ্যের প্রভাবে বহু সহস্রবার দেবলোকে উৎপন্ন হবে। আকাশে তার অভিলাষিত স্বর্ণময়, মণিময়, বৈদূর্যময় বিমান উৎপন্ন হবে। এভাবে বহুকাল দিব্যসুখ ভোগ করবে। তারপর বহুবার চক্রবর্তী রাজা হয়ে সুখ উপভোগ করবে। প্রদেশ রাজা যে কতোবার হবে তার ইয়ত্তা নেই। পুনরায় সম্বুদ্ধ স্মিত-মধুর উদাত্ত কণ্ঠে শ্রেষ্ঠীপুত্রকে বল্লেনÑ “হে নরপতি, তোমার এ প্রার্থনা পূর্ণ হবে। আমার পর অনুক্রমে জগতে আবির্ভূত হবেন- সুমেধ, সুজাত, প্রিয়দর্শী, অর্থদর্শী, ধর্মদর্শী, সিদ্ধার্থ, তিষ্য, ফুস্স, বিপর্শ্বী, সিখী, বেস্সভূ, ককুসন্ধ, কোণাগমন ও কশ্যপ সম্বুদ্ধ। এ চৌদ্ধজন সম্যক্ সম্বুদ্ধ অতীত হলে তারপর আসবেন গৌতম বুদ্ধ। তিনি বহুশত সৌধমালা পরিশোভিত জন-বহুল শস্য-শ্যামলা সুবিশাল কপিলাবাস্তুর শাক্যকুল চূড়ামণি মহারাজ শুদ্ধোধনের ঔরসে, মহামায়াদেবীর পুণ্য-পূত গর্ভে জন্ম গ্রহণ করবেন। তাঁর অগ্রশ্রাবক হবেন সারীপুত্র ও মহামোদ্গল্যায়ন এবং অগ্রশ্রাবিকা হবে ক্ষেমা ও উৎপলবর্ণা। সেবক হবেন আনন্দ। সে সময়ে লাভী ভিক্ষুদের মধ্যে অগ্রস্থান লাভ করবে “সীবলী স্থবির”। তাঁর মাতার নাম হবে সুপ্রবাসা ও পিতার নাম হবে মহালি কুমার। বৃজি বংশে হবে তাঁর জন্ম। তিনি সাতবৎসর সাতমাস সাতদিন গর্ভযন্ত্রণা ভোগ করার পর জন্ম গ্রহণ করবেন এবং সপ্তাহ কালের মধ্যে অর্থাৎ সাতবৎসর বয়সে তিনি প্রতিসম্ভিদা সহ অরহত্ব ফলে প্রতিষ্ঠিত হবেন। হে নরপতি, এই অপ্রতিম পুণ্যের অমিত-প্রভাবে সেই পদমর্যাদা তুমিই লাভ করবে। তখন তোমারই নাম হবে “সীবলী”।
সূত্র-শ্রীমৎ মেত্তাবংশ ভিক্ষু রচিত লাভী শ্রেষ্ঠ অর্হৎ সীবলী