২য় পর্বের লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/barua910/posts/10156517846324302
বছর চারেক আগে লিখেছিলাম যত দিন যাচ্ছে এর প্রয়োজনীয়তা তত বেশী উপলব্ধি করছি কারন ধর্মের বেসাতি তথা অপব্যাখ্যা বেড়ে চলছে।
বিহার দান যেমন মহা পূন্য তেমনি সংঘ বিচ্ছেদ ও মহা পাপ – অতএব একি পাড়ায় ভায়ে ভায়ে, ভিক্ষুতে ভিক্ষুতে সংঘাত করে যদি দুটি মন্দির হয় তাতে কি হলো মহাদান আর মহাপাপ দুটি একসাথে – এভাবে নৌকা তীরে ভিড়বে কী? তাই দানে পূন্য দানে পাপ।
দান করে নাকী প্রচার করতে নাই – তা ত্রিপিটক যারা পড়েছেন তারা নিশ্চই জানেন সমগ্র ত্রিপিটকে হাজার হাজার জায়গায় ওই দানবীর ঐ দান করেছেন ইত্যদির বিবৃতি আছে – তা হলে প্রশ্ন হলো সে প্রচার যা স্বয়ং ত্রিপিটকে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তাতে কী পাপ হয়েছে? না নিশ্চই নয় কারন তা পড়ে আপনি আমি দানের মহত্ব অনুধাবন করতে পারি। তবে আজ কেন কেউ দান করে প্রচার করলে শুনতে পাই – দান করে প্রচার করতে নেই – ওটা কি ফতূয়া দেয়া হয় না? এখানেই শেষ নয় – উপদেশ শুনি – বাম হাতে দান করলে যেন ডান হাত না জানে – সেভাবে দান করলে পূন্য হয় – হা এ কথাটা মিথ্যে নয় তবে প্রশ্ন হচ্ছে এ দিয়ে কী ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে – পরিশুদ্ধ ত্যাগ ই হচ্ছে দান – তবে লোকুচুরি খেলতে বলা হয়নি। কেন তার ব্যাখ্যা পাবেন পড়ে যান। কিন্তু দুখের বিষয় যারা এভাবে শুধু বাম হাত আর ডান হাতের ব্যাখ্যা দিয়ে দানের ব্যাখা শেষ করেন তারা দানের পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দেন না যেমন দান সম্পর্কে এও বলা হয়েছে অনপুযুক্ত বস্তু বা কর্ম দিয়ে দেয়া দান নয় যেমন আপনি কাউকে অস্ত্র দান করলে সেটা দান হবে না। ঠিক তেমনি আপনি কাউকে এক লক্ষ টাকা দান করলেন পুণ্য কাজ করার জন্য কিন্তু তিনি তা দিয়ে যথাইচ্ছা অপচয় করলেন কিংবা ধংসযজ্ঞ পরিচালনা করলেন তবে তাতে কী পূন্য হবে? তাই ত্রিপিটকে উক্ত ধর্ম , যার আদিতে কল্যান, মধ্যে কল্যান এবং অন্তে কল্যান। উপরে উল্লেখিত ভাবে করলে তো, তা হবার কথা নয়। তবে তারা আমাদের কি বোঝাতে চাইছেন? বাস্তবতা এরকম নয় কি – কত দান করেছেন তা উল্লেখ না হলে হিসেব-নিকেশ থাকবে না। অতএব যথাইচ্ছা অপচয় করলে কে কি বলার আছে। কেঊ তো জানতেই পারবে না আপনি কত টাকা দিয়েছেন – তা হলে এভাবে আপনারা দুর্নীতি করার সুযোগ করে দিচ্ছেন নয় কী এবং তাতে কী আপনাদের পূন্য হবে? দুর্নীতি করার সুযোগ করে দিলে বুঝি পূন্য হয়? প্রশংসিতের প্রশংসা করা পূন্য বলা হয়েছে তবে যে দান করেছে তা আপনারা প্রচার করলে পূন্য হবে না কেন? শুধু তাই নয় কারো দানে সাধুবাদ দিলে ও পুন্য হয় তবে প্রচার বা প্রকাশ না করলে লোকে সাধুবাদ দেবে কি করে? তাই বলা হয়েছে আহার দান করলে আপনার বল, বর্ন ইত্যাদি লাভ হবে বলে জ্ঞাত করতে – এটা ও তো প্রশংসা। যখন আপনি কোন ভিক্ষুকে কিছু দান করেন বিনয় মতে তিনি তা প্রথমে অনুমোদন করেন বা ঋন স্বীকার করেন অর্থাৎ কৃতজ্ঞতা বোধ করবেন তাই যদি হয় তবে দানীর দান প্রচারে আপনাদের অসুবিধা কোথায় – আপনাদের হিংসায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি কৃতজ্ঞতাবোধ তো করেনি না বরং ভাবটা এমন যে তিনি চীবর পরিহিত বলে তাকে প্রশ্ন ও করা যাবে না তার দান প্রাপ্তি একান্ত অধিকার। এ প্রসংগে ভুলে যাবেন না ত্রিপিটকেই উক্ত ভিক্ষু সংঘ বিশুদ্ধ। অর্থ কি – অবিশুদ্ধ চীবর পড়লেই (চীবর ধারন আর পড়ার মধ্যে পার্থ্ক্য আছে) তিনি বিশুদ্ধ হয়ে যান না এবং ভুল করলে তাকে পরিশুদ্ধ করার বিধান ও রেখে গেছেন তথাগত। এ ও বলা হয়েছে কেউ কেউ ভিক্ষু হন না খেতে পেয়ে ইত্যাদি। অর্থাৎ দান প্রাপ্তি তাদের অধিকার নয় বরং বিনয় অর্থাৎ দেয়া এবং নেয়া কৃতজ্ঞতার বন্ধনে। এও শুনি দান করে আবার হিসাব চাইছেন – এটা আবার কেমন দান হলো – উত্তরটা এরকম – হিসাব চাওয়ার অর্থ উনি যা দিয়েছেন তা ফেরত চাইছেন না বরং যথোপযুক্তভাবে ব্যবহৃত হলো কিনা তা জানতে চাইছেন অর্থাৎ স্বচ্ছতা – জবাব দিহিতা যে ধর্মে প্রশংসিত সে ধর্মের অনুসরনকারীদের সে ধরনের আচরন অসংগত নয় কী? এখন দয়া করে কমেন্ট করার আগে মনে রাখবেন এটা পর্ব এক অর্থাৎ অনেক কথা এখন ও বলা হয়নি অতএব অনেক বিষয় এই পর্বে অনুভূত হবে না অতএব কোন প্রশ্ন থাকলে ইনবক্স করবেন এবং আর ও তিনটি পর্বের অপেক্ষা করবেন। কোন ফেইক আইডি থেকে কোন কমেন্ট করবেন না কারন যিনি ফেইক আইডি ব্যবহার করেন তিনি ফেইক নন কি এবং ফেইক আইডি হলে তা রিপোর্ট করা ও ধর্ম করার সামিল।