কতাঞূতা কতবেদী
সারিপুত্র দেশিত ক্রোধ বিনাশের উপায়।
দোষ ভেদে জগতে ৫-প্রকার মানব
——————————-
(১) কারো কায়িক দোষ থাকে মানসিক দোষ থাকে না।
(২) কারো বাচনিক দোষ থাকে কায়িক দোষ থাকে না।
(৩) কারো কায়িক এবং বাচনিক উভয় দোষ থাকে।
(৩) কারো কায়িক,বাচনিক উভয় দোষ থাকলেও মাঝে মধ্যে দোষ থাকে না।
(৫) কারো কারো কায়িক,বাচনিক দোষ থাকে না তাই সর্বদা ভাল মন মানসিক থাকে।
কারোর প্রতি সেরূপ ক্রোধ উৎপন্ন হলে ক্রোধ বিনাশের জন্য ভদন্ত সারিপুত্র ভন্তে ভিক্ষুগণকে নিম্নরূপে উপদেশ দিয়েছিলেন।
সারিপুত্র ভন্তের ৫টি ক্রোধ বিনাশের উপদেশ
—————————————
(১) পাংশুকূলিক ধূতাঙ্গ ভিক্ষু পথের নোংরা কাপড় দেখে কাপড়ের উপর বাম পা ভর দিয়ে ডান পা দিয়ে ভাজ খুলে সে কাপড় থেকে ভালাংশ টুকু ছিড়ে নেন।
(২) শেত্তলা ঢেকে রাখা এক পুকুরে একজন পিপাসার্ত ক্লান্ত পথিক এসে পুকুরে নেমে শেত্তলাগুলো সরে দু’হাতে জল পান করে নিলেন।
(৩) ক্রোধ বিনাশের উপায়- গরুর খুরচিহ্নে অল্পজলের একজন ক্লান্ত পিপাসার্ত ক্লান্ত পথিক এসে খুরের জল দেখে এই অল্পজল আমি দু’হাতে হোক,পট দিয়ে হোক নাড়াচাড়া করলে ঘোলা হতে পারে বরং চার হাত,পা ভর করে মুখ দিয়ে পান করলে ভাল হবে মনে করে জল পান করে গেলেন।
(৪) একজন দীর্ঘ পথের পথিক রোগাক্রান্ত হয়ে কায়িক,মানসিক মারাত্মক অসুখ হলে সামনে পেছনেও দূরত্ব গ্রাম থাকায় সে উপযুক্ত চিকিৎসা,আহার পায়নি। দূর গ্রামে যাওয়ারও লোক পায়নি। অন্য একজন পথিক সে রোগা লোকটিকে দেখে মৈত্রী,করুণা,মুদিতা পোষণ করতে পারে যে- ওহো! এই রোগী পথিক গ্রামে পৌছনো লোক,উপযুক্ত আহার ঔষধপথ্য পেলে খুব ভাল হতো। পথচারী রোগী যেন পথে না মরুক এরূপ মৈত্রি,করুণা,মুদিতা পোষণ করা ছাড়া কিছুই করার থাকে না।
(৫) এক পুকুরে শীতল স্বচ্ছ মিষ্টিজল। বিভিন্ন গাছগাছালি ঘেরা মনোরম পুকুর পারে একজন ক্লান্ত পিপাসার্ত পথিক এসে পুকুরে নেমে জলপান করার পর স্নান সেরে শীতলা গাছে নিচে বসলে পরে শুয়ে পরলেন।
প্রথমত লোক
——————
দোষযুক্ত কায়িক আচরণ না করা,দোষমুক্ত বাচনিক আচরণ করার উপায়ে ক্রোধ বিনাশ করতে হয়।
দ্বিতীয়ত লোক
——————–
দোষমুক্ত বাচনিক আচরণ না করা। দোষমুক্ত আচরণ করার উপায়ে ক্রোধ বিনাশ করা।
তৃতীয়ত লোক
——————-
দোষযুক্ত কায়িক বাচনিক আচরণ না করা। কখনো কোন সময় দোষ উৎপন্ন হলে ভাল আচরণ করার উপায় দিয়ে ক্রোধ বিনাশ করা।
চতুর্থত লোক
——————
দোষযুক্ত কায়িক,মানসিক আচরণ,কখনো কোন সময়ে খারাপ আচরণ মনে পুনরাবৃত্ত হলে সে বিষয়ে মনোযোগ না দেওয়া ভাল। অসদাচরণ সে ধরনের লোকের প্রতি মৈত্রী,করুণা ও মুদিতা আচরণ করা।
ওহো! এই লোক কায়িক,বাচনিক ও মানসিক দোষগুলো পরিহার করে ত্রিদ্বারে ভাল আচরণ করলে কতই ভালো হতো!
কারন এই লোক মরণের পর অপায় গতি না হোক এরূপ চিন্তা করে মৈত্রী,করুণা ও মুদিতা পোষণ করা।
পঞ্চম লোক
—————-
দোষমুক্ত কায়িক,বাচনিক ও ভাল মন মানসিক আচরণ করা। সেরূপ উপায়ে সে লোকের প্রতি থাকা ক্রোধকে বিনাশ করা।
বিভিন্ন দিক থেকে দোষমুক্ত করে দিতে পারে এমন লোকের কারনে মানসিক পরিশুদ্ধ হয়।
কোন একজন লোকে সবকিছু যেমন ভাল থাকে না তেমন সবকিছু মন্দও না। ভাল আর মন্দ দ্বিত্ব থাকে। (অং-পালি-ত)।
যেটি ভাল সেটিকে আচরণ করলে ক্রোধাগ্নির নিষ্ঠুর আচরণ স্বীকার হয় না। খারাপ আচরণ করলে তো অবশ্যই কষ্ট পাবে।
এই উপদেশ শ্রবন করে সবার অল্প হলেও জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে।