বন্ধ করে দেওয়ার ৭ মাস পর আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে দর্শনার্থীদের জন্যে আবারও খুলে দেওয়া হচ্ছে বান্দরবানের স্বর্ণমন্দির খ্যাত বুদ্ধ ধাতু জাদি মন্দির।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও বান্দরবানের সাংসদ বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপির সাথে এক বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন স্বর্ণ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ও ওয়ার্ল্ড বুদ্ধ শাসন সেবক সংঘের প্রেসিডেন্ট ভিক্ষু উ পঞ্চা জোত থের।
প্রসঙ্গত, কয়েকজন পযটকের আপত্তিকর আচরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে স্বর্ণ মন্দিরে পর্যটকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে অল্প কিছু লোকের অপরাধের কারণে হঠাৎ করে স্বর্ণ মন্দিরের মত স্থাপত্য শৈলীর একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ভিক্ষু উ পঞা জোত থের।
এদিকে স্বর্ণ মন্দির পরিচালনা কমিটির একজন মুখপাত্র জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর অনুরোধ, ধর্মপ্রাণ মানুষের প্রত্যাশা এবং দূর-দূরান্ত থেকে আসা লাখো দর্শনার্থীর চাহিদার বিষয় বিবেচনা করে মন্দির খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্বর্ণ মন্দির অঙ্গণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। তবে ভিক্ষুদের সোয়াইং (দুপুরের আহার) গ্রহণ এবং ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার জন্য দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত মন্দিরে প্রবেশাধিকার বন্ধ রাখা হবে।
মুখপাত্র জানান, নতুন করে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো এবং মন্দিরের নিরাপত্তার প্রয়োজনে স্বর্ণ মন্দিরের বিভিন্ন পয়েন্টে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
উল্লেখ্য, সাবেক বোমাং রাজকুমার ও মুন্সেফ জীবন ছেড়ে ভিক্ষুত্ব গ্রহণকারী উ চ হ্লা (ভিক্ষুত্ব গ্রহনের পর নাম পরিবর্তিত হয়ে ‘উ পঞা জোত থের’) স্থানীয় ধর্মানুরাগীদের সহায়তা ও স্বেচ্ছাশ্রমে নব্বইয়ের দশকে এই স্বর্ণ মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। মায়ানমারের ‘শৈডাগন’ প্যাগোডার আদলে বান্দরবান শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে পুলপাড়া এলাকার সুউচ্চ পাহাড় চূড়ায় স্থাপিত এই জাদি সবার দৃষ্টি কাড়ে। অল্প ক’দিনের মধ্যেই এটি বান্দরবানের জিওগ্রাফিক্যাল সিম্বল (পরিচিতিমুলক স্থাপনা) হয়ে ওঠে। এই বৌদ্ধ মন্দিরে মায়ানমার, চীণ, থাইল্যান্ড, ভারতসহ কয়েকটি দেশের বিভিন্ন শতকের বুদ্ধ মূর্তি স্থান পেয়েছে।