সময় খুবই দ্রুত চলে যাচ্ছে। সেই সাথে ফুরিয়ে আসছে আমাদের জীবনের আয়ু। কেউ হয়তো কাল মারা যাবে, কেউবা পরশু। অনিশ্চিত জীবন প্রদীপ আমাদের। কোন কালাকাল নেই। যে কোন মুহুর্তে মৃত্যু এসে ছিনিয়ে নিতে পারে আমাদের জীবন। তো এই জীবনের সঞ্চিত পুণ্যরাশি শুধুমাত্র নিয়ে যেতে পারব। আর কিছুই তো নিতে পারব না। তাই বলছি আগামী বছর কঠিন চীবর দান করবেন এই আশায় থাকবেন না। আজকে যাহা পার কর, কালকের আশা নাহি কর, জাননা কখন মর, করস্মৃতি মরণং। আপনারা জানেন কঠিন চীবর দান এর ফল কতই অপ্রমেয় অনন্ত। অনেকেই চিন্তা করেন একটা পরিপূর্ণ চীবর দান করতে না পারলে তো কঠিন চীবর দান হবে না। এ নিয়ে অনেকেই খুবই মন খারাপ করেন। মন খারাপ করার কিছুই নেই। ত্রিচীবর(সংঘাটি, অর্ন্তবাস, উত্তরাসঙ্ঘ) এ তিনের যে কোন একটি চীবর দ্বারা কঠিন চীবর দান করা যেতে পারে। কঠিন চীবর সারা বছর দান করা যায় না। বছরে মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে এই দান করা যায়। আশ্বিনী পূর্ণিমার পরবর্তী দিন থেকে শুরু করে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই ৩০ (ত্রিশ) দিন কঠিন চীবর দানের কাল। বিশেষ সময়কালে দান করতে হয় বলে তাকে কাল-দান বলা হয়। বুদ্ধ বলেছেন, জগতে প্রচলিত যত প্রকার দান আছে সর্বাপেক্ষা কঠিন চীবর দান হল দানের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। এ দানের দ্বারা শ্রেষ্ঠ সর্বপ্রকার পূণ্য লাভ হয়। এই পৃথিবীতে যতপ্রকার দান আছে যা একখানা কঠিন চীবর দানের তুলনায় ঐ দানের ফল ষোল ভাগের একভাগও হয় না। একনিষ্ট ব্রক্ষ্মলোক পরিমাণ উচ্চ রৌপ্য পর্বত দান করলেও একখানা কঠিন চীবর দানের তুলনায় ঐ রৌপ্য পর্বত দানের ষোল ভাগের একভাগও হয় না। তাই সকলের প্রতি অনুরোধ রইল একটি কঠিন চীবর দান করুন, দান করার দিন অষ্টশীল রেখে দান করুন এবং অপ্রমেয় পুণ্যের অধিকারী হোন। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।
