ফ্রান্সে নানা আয়োজনে শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত
শিল্প সংস্কৃতি, সভ্যতার প্রাণ কেন্দ্র ফ্রান্সে গত ১৬ অক্টোবর রবিবার বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার থেকে ফ্রান্সে বাংলাদেশী বৌদ্ধ বিহার গুলোতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গতকাল ভোর থেকে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ব বৌদ্ধ সম্প্রদায়। সকাল থেকে বিহারের ধর্মীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেয় বিপুল সংখ্যক পূন্যাথী। আর তাতে বৌদ্ধ বিহারগুলো রূপ নেয়, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মহা মিলন মেলায়।
আর প্রবারণা পূর্ণিমার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানের মহোৎসব। হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভের পর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা উৎসব পালন করা হয়ে থাকে। পূজনীয় ভিক্ষুসংঘের ত্রৈমাসিক বর্ষাব্রত শেষে আসে এ প্রবারণা তিথি প্রবারণা হলো আত্মশুদ্ধির ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের অনুষ্ঠান। প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে দেশের প্রতিটি বিহারে শুরু হবে পবিত্র কঠিন চীবর দানোৎসব। এ ছাড়া এ উপলক্ষে প্রভাত ফেরি, ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ, জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষুসংঘের পিন্ডদান, শীল গ্রহণ, প্রদীপ পূজাসহ দিনশেষে সন্ধ্যা থেকে তীথির মূল আকর্ষণ পবিত্র ফানুস উড়ানো উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। প্রচলিত আছে গৌতম বুদ্ধের চুল আকাশে ভেসে যাওয়ার ঘটনাকে উপলক্ষ্য করে ফানুস বাতি উড়িয়ে পূজো করা হয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা টানা তিন মাস (আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা) বৌদ্ধ বিহারের কুঠিরে বসবাস করে ধ্যান সাধনা করেন। এই তিন মাস সাধনাকে বর্ষাবাস নামে অভিহিত করা হয়। আশ্বিন মাসের পূর্ণিমায় বর্ষাবাস সমাপনের আনুষ্ঠানিকতাকেই বলা হয় প্রবারণা পূর্ণিমা। বৌদ্ধ ধর্মমতে এই পূর্ণিমা তিথিতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা নিজ কৃত অপরাধ বা পাপ স্বীকার করে পরিশুদ্ধ হন। ফলে এটি প্রবারণা পূর্ণিমা নামে খ্যাত।
এদিকে ফ্রান্সে বাংলাদেশী বুদ্ধগয়া প্রজ্ঞাবিহার ধ্যান কেন্দ্র, কুশলায়ন বৌদ্ধ ভাবনা কেন্দ্র, সার্বজনীন বৌদ্ধবিহার, ইউরোপিয়ান বুড্ডিষ্ট সেন্টার অনুরূপ এ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
এছাড়া বাংলাদেশী এসব বৌদ্ধ বিহারগুলোতে তিনমাস ব্যাপী পঞ্চশীল, অষ্টশীল গ্রহণ,ভাবনা, পিণ্ডদান ,প্রদীপ পুজা, ফানুস উত্তোলন সহ ধর্মীয় দেশনার আয়োজন করা হয়।
এবার প্রথম ইউরোপিয়ান বুড্ডিষ্ট সেন্টার ছাড়া সব বিহারে ফানুশ বাতি উত্তোলন করা হয়।
উল্লেখ্য যে ফ্রান্সে বর্তমানে তিনটি বাংলাদেশী স্থায়ী বৌদ্ধ বিহার ও ২ টি ভাড়া নেয়া বাসায় বৌদ্ধ বিহার স্থাপন করা হয়েছে।