সুখের লাইসেন্সঃ স্নেহাশীষ প্রিয় বড়ুয়া
গাড়ি চালাতে , বিয়ে করতে, প্রফেশনাল কাজ করতে এমনকি মদ বিক্রি করতে এ রকম কত কিছুর জন্যই লাইসেন্সের দরকার হয় – তেমনি সুখী হওয়ার জন্য একটি লাইসেন্স নয় কেন ??? হলে কি হয় ???
এমন বহু মানুষ আছেন যারা মনে করেন সুখ তাদের কপালে নেই । এমনি এক ব্যক্তি তিনি ও ছিলেন অসুখি কারন তিনি কারো সাথে কোন সম্পর্ক ভাল রাখতে পারতেন না , কখন ও কোন সুযোগ এলেও তার ফলাফল পেতেন না, সম্ভবতঃ অতীতের কর্মফল ইত্যাদি ইত্যাদি । তিনি মনে করতেন, সুখী হওয়ার অধিকার তার নেই । তার মতো এমন আরো বহু মানুষ আছে । এ ভাবে পথ চলতে চলতে তিনি আচার্য আযান ব্রম্ম বংশের কথা শুনতে পেলেন যে ভাবনা করলে সুখী হওয়া যায় । তাই তিনি আযান ব্রম্মের মেডিটেশান কেন্দ্রে গিয়ে মেডিটেশান করতে বসলেন কিন্তু দুখের বিষয় তিনি মনযোগ দিতে পারছেন না যেমন করে তিনি কোন সম্পর্ক রাখতে পারেন না, কোন ভাবেই তিনি মনকে ধ্যানে বসাতে পারছেন না যেমন করে তিনি কোন সুযোগ ধরে রাখতে পারেন না এভাবে কোন কিছুতে কাজ না হলে তিনি আচার্যের কাছে তার সমস্যা ব্যাখ্যা করলেন । আচার্য যা করেছিলেন তা নিম্নরুপঃ
আমার প্রতি তার গভির শ্রদ্ধা ছিল । সেটা অতিশ্যোক্তি, তবে এর একটা সুবিধা ও আছে । আমি তাকে একটা “সুখী লাইসেন্স” দিয়েছিলাম। সেখানে একজনের স্বাক্ষর ছিল যাকে তিনি বিশ্বাস করতেন । এই স্বাক্ষরকারী ছিলাম আমি ।
তিনি সেই লাইসেন্সটিকে এত শ্রদ্ধা করেছিলেন যে তিনি একে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিলেন। তিনি সেটি ফ্রেমে বাঁধিয়ে দেয়ালে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। এটা নিরন্তর তাঁকে মনে করিয়ে দিত যে, কর্তৃত্বসম্পন্ন একজন লোক তাঁকে সুখী হওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এর ফলে, তিনি আনন্দের মুহূর্তগুলোকে প্রত্যাখ্যান করা থেকে বিরত হলেন এবং নিজেকে সুখী করতে চাইলেন। ধ্যানকর্মে বিঘ্নসহ তাঁর অনেক সমস্যা অচিরেই এ ভাবে হারিয়ে গিয়েছিল ।
তবে একমাত্র সমস্যা যা হয়েছিল সেটা এরকমঃ তিনি তাঁর এক বন্ধুকে এই কথা বলেছিলেন এবং তাঁর সেই বন্ধু সুখের লাইসেন্সের একটি কপি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। শিগগিরই আমার স্বাক্ষরিত সুখের লাইসেন্সের জন্য এত অনুরোধ আমার কাছে আসতে লাগল যে, ধ্যানের জন্য সময় না পেয়ে আমি আমার নিজের সুখই কিছুকালের জন্য হারিয়ে ফেলেছিলাম।