মন ভালো করার স্যাম্পল প্রেসক্রিপশানঃ বৌদ্ধধর্ম ও ইশ্বর – এ ধরনের অন্যান্য প্রসংগ এবং পন্ডিতদের আস্ফালন
প্রথমতঃ এ লেখায় যাকে আপনি বলছি তিনি আপনি নন উনি ।
২য়তঃ পন্ডিত বলতে যাকে বুঝিয়েছি তিনি ও আমি বা আপনি নন উনি ।
এ ধরনের অনেক বিষয় নিয়ে আজকাল অনেককে দেখেছি বিভিন্নভাবে উত্তর দিতে । এক পক্ষ ইশ্বরবাদে বিশ্বাসি অন্য পক্ষ বিশ্বাসি নয় । এ দুপক্ষের বেশিরভাগের উত্তর দেখে মনে হয় একে অপরকে ঘায়েল করাই যেন মুল লক্ষ্য । যেমনঃ যাই হউক না কেন ছলে বলে কৌশলে জিততে হবে । যেন হার জিতের লড়াই । কিন্তু তাদের এ যুদ্ধ শেষ হয় না । কারন দুপক্ষের ই মনোভাব এমন যে যাই হোক না কেন তাল গাছটি কিন্তু আমার । প্রশ্নোত্তর পর্বে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে নিয়ন্ত্রনে আনাই যেন লক্ষ্য !!!
দুপক্ষের কাছেই জানতে ইচ্ছে করে আপনাদের প্রশ্নোত্তর পর্বের কারন বা কি পেতে চান এ ধরনের প্রশ্নোত্তর পর্বে আপনারা যখন অংশ গ্রহন করেন ??? যা সত্য তাই গ্রহন করতে ??? না কি যা মিথ্যা তাই গ্রহন করতে ??? না কি আপনি যে পক্ষের ছলে বলে কৌশলে সে পক্ষকে জিতিয়ে দিতে ??? যদি তাই না হয় তবে প্রথমত বেরিয়ে আসতে হবে পক্ষ বা দলের ভয়ানক গন্ডি থেকে ???
সম্প্রতি শ্রদ্ধেয় দালাই লামাকে বলা হয়ে ছিল আপনি তো বুদ্ধ ধর্মের প্রতিনিধি আপনি আমাদের কথা বুঝবেন কি করে ??? তিনি উত্তরে যা বলেছেন তাতে তাকে প্রথমে দলের গন্ডি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে তাই তিনি উত্তর দিয়েছেন আমি যার প্রতিনিধিত্ব করি তা হচ্ছে মানবতার, মানুষের মুল্যবোধের, মনুষ্যত্বের । প্রশ্ন হচ্ছে এ ধরনের উত্তর দেওয়াতে কি যারা কোন বাদে বিশ্বাসি তারা তার গুষ্টি উদ্ধার করবেন ??? না কি বলবেন এটা বুদ্ধ ধর্মের সাথে বেইমানি ??? তার দলের গন্ডি থেকে বেরিয়ে এসে সত্য ভাষন অথচ বিপক্ষকে হেয় না করে সম্মান দিয়ে বলাটাকে কি আমরা গ্রহন করবো ??? ধর্ম আমরা কেন করি ??? আমাদের সুখের জন্য ??? নাকি এই দলাদলির উন্মক্তায় নিজেদের অসুখি করার জন্য ??? যে কাজ করে সুখ হয় না তা করে লাভ কি ???
একটি উদাহরন যেমন ধরুন মনে করুন ইশ্বরে বিশ্বাস করার কোন যুক্তি সঙ্গত কারন আপনার পক্ষের নেই। কিন্তু আপনার পক্ষ যা করছেন তাতে আপনার দলের দলপতি নিজেই যেন ইশ্বর হয়ে গেছেন অথবা আপনারা আপনাদের দলপতিকে ইশ্বর বানিয়ে ফেলেছেন, তবে আপনার পক্ষের ইশ্বরে বিশ্বাস আর না বিশ্বাসের পার্থক্য কতটুকু ???
এ পর্যন্ত এসে সমস্যা আরো বেড়ে গেলো এই যে এর পরে আরেক পক্ষ বলবেন এটা তো আমাদের ও কথা, তাই তো আমরা বলছি – গুরুবাদ নিপাত যাক । এ ক্ষেত্রে ও একটি প্রশ্ন – আপনি যে পক্ষ অবলম্বন করেছেন সে পক্ষের কি কোন গুরু নেই ??? তাহলে তো সমস্যা গুরুবাদের ও নয় ???
এ পর্যন্ত এসে আরেক সমস্যা দেখা দিল , এক পক্ষ বললেন আসলে উনাদের গুরু দেখতে শুনতে সুপুরষ নন – মহা পুরুষের যে সমস্ত থাকার কথা তা তার নেই বলে আমরা তাকে গুরু বলে মেনে নিতে পারি না ??? অপর পক্ষ বললেন নারীদের বঞ্চিত করা যাবে না জয় মা কালি ??? দুপক্ষের দুই রকম দেখা ??? এক পক্ষ উনাকে দেখছেন কালো বলে ??? আরেক পক্ষ দেখছেন ভালো বলে ??? কে দেখছেন ??? মন কি এক ই ব্যাক্তিকে কালো ও ভালো দুইভাবে ই দেখতে পারে ???
অনেকের মতো আজান ব্রম্ম বংশ মহাথেরোকে ও প্রশ্ন করা হয়েছিলো ঈশ্বর সম্বন্ধে বৌদ্ধ ধারণা কী ??? তিনি যা বলেছেন তা নিম্নরুপঃ
একজন সুপরিচিত খ্রিস্টান আমাকে ঈশ্বর সম্পর্কে বৌদ্ধদের ধারণা ব্যাখ্যা করার অনুরোধ জানালেন । আমার পক্ষে অধিকতর সহজ ছিল প্রাচীন বৌদ্ধশাস্ত্র থেকে অথবা আমার গুরুরা আমাকে যা শিখিয়েছিলেন তা উদ্ধৃত করা। কিন্তু এতে প্রশ্নের কোনো সুরাহা হতো না। সেজন্য আমি প্রশ্নের উত্তর এমনভাবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম যাতে তা জ্ঞানের আরো গভীরে যেতে পারে এবং বিশ্বের দুটি মহৎ আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের মধ্যে বৃহত্তর সংহতি সৃষ্টি করতে পারে ।
আমার বন্ধু, অ্যাবট, যিনি আমার পাশে বসে আছেন, প্রায়শ আমাকে বলেছেন যে, তাঁর গভীর বিশ্বাস হচ্ছে-প্রত্যেকেই ঈশ্বরকে খুঁজছে । আমি আমার বন্ধুকে এত বেশি শ্রদ্ধা করি যে, তাঁর বিশ্বাসকে আমি সত্য বলে গ্রহণ করি । এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে আমি এবং অন্য বৌদ্ধরা কী খুঁজে বেড়াচ্ছি?
আমরা খুঁজছি শান্তি, করুণা, সত্য, শ্রদ্ধা, ক্ষমা এবং নিঃশর্ত ভালোবাসা। এটাই যদি বৌদ্ধদের অভিষ্ট হয়, তাহলে বলব, ঈশ্বরবিশ্বাসীরা এবং প্রত্যেকে যে ঈশ্বরকে খুঁজছে এই অভিষ্টই সে ঈশ্বর । এ হচ্ছে শান্তি, করুণা, সত্য, শ্রদ্ধা, ক্ষমা এবং নিঃশর্ত ভালোবাসা। । ঈশ্বর সম্পর্কে এটিই বৌদ্ধদের উপলব্ধি । উপস্থি’ত অন্য ধর্মবিশ্বাসীরাও আমার এই উত্তরে প্রীত হয়েছিলেন ।
নিজে সুখি হন এবং অপরকে সুখী হতে দিন ??? জগতের সকল প্রানী সুখী হউক ???