অতীতকালে একদা একজন পচ্চেক বুদ্ধ রোগাক্রান্ত
হয়ে পড়েন। সেই রোগের একমাত্র ঔষধ ছিল মধু। অন্য একজন পচ্চেক বুদ্ধ মধু ভিক্ষা করতে
বারাণসীতে আগমন করলে একজজন দাসী পচ্চেক বুদ্ধকে মধুর দোকান দেখিয়ে দেন। পচ্চেক
বুদ্ধ উক্ত মধু বণিকের দোকানে উপস্থিত হলে বণিক পাত্রপূর্ণ করে মধু দান করেন এবং
প্রার্থনা করেন যেন এই পুণ্যের প্রভাবে ভবিষ্যত কোন এক জন্মে তিনি জম্বুদ্বীপের
একচ্ছত্র সম্রাট হন এবং তার আদেশ যেন নিম্নে, উর্ধ্বে এক যোজনব্যাপী প্রবর্তিত হয়।
দাসী তা শুনে পচ্চেক বুদ্ধের পাত্র বহন করতে অসুবিধা
দেখে নিজের এক ছোট কাপড় থলেরূপে ব্যবহারের জন্য দান করে প্রার্থনা করেন ---মধু বণিক
যখন জম্বুদ্বীপের সম্রাট হবেন, তখন তিনি যেন এই পুন্যপ্রভাবে রাজার অগ্রমহিষী হতে
পারেন। পচ্চেক বুদ্ধ আশীর্বাদ করে
বললেন, তোমাদের ইচ্ছা পূর্ণচন্দ্র মণিজ্যোতির মত পরিপূর্ণ হবে। উভয়ে মৃত্যুর পর
দেবলোকে উৎপন্ন হয়ে দেবসুখ ভোগের পর আয়ুক্ষয়ে দেবপুত্র পাটলিপুত্র নগরে বিন্দুসার
রাজার জৌষ্ঠপুত্র অশোক কুমার হয়ে এবং দেবদীতা অন্যরাজ্যে রাজকন্যা অসন্ধিমিত্রা হয়ে
জন্মগ্রহণ করেন। পিতার মৃত্যুর পরে অশোক কুমার বিনা অভিষেকে চার বছর রাজ্য শাসন
করেন। বুদ্ধের পরিনির্বাণের ২১৮ তম বৎসরে তিনি অসন্ধি পৃথিবীর নিম্নে, উর্ধ্বে এক
যোজনব্যাপী তার আদেশ প্রবর্তিত হতে থাকে। দেবতা, নাগ, যক্ষগণ তার সেবায় নিযুক্ত
থাকে। তার খাদ্য ভোজ্য, বস্ত্র এবং আহারাদি সব দ্রব্য সামগ্রী দেব কর্তৃক আহরিত অতি
উপাদেয় ছিল। তার অগ্রমহিষী দেবকন্যার মত অসাধারণ সুন্দরী ছিলেন।
সেই সম্রাট অশোক ভারতের বিভিন্ন স্থানে ৮৪
হাজার বিহার, চুরাশি হাজার স্তুপ নির্মাণ করেন। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ধর্মবাণী
শিলালিপিতে লিপিবদ্ধ করান। জগতের হিতের জন্য তিনি বিভিন্ন দেশে সদ্ধর্মের প্রচারক
দল প্রেরণ করেন। আপন পুত্র মহেন্দ্র এবং কন্যা সংঘমিত্রাকে বুদ্ধ শাসনে দান করে
বুদ্ধ শাসনের উত্তরাধিকারী হন। এভাবে ধর্মের দ্বারা রাজ্য শাসন করে তিনি পৃথিবীর
ইতিহাসে “অদ্বিতীয় সম্রাট” বলে কীর্তি অর্জন করেন।
দেখুন পচ্চেক বুদ্ধকে মধু দান করে, দাসী
বস্ত্র দান করে সেই পুণ্য প্রভাবে কিরকম পুণ্যের সুফল লাভ করেছেন? সত্যিই অতুলনীয়
দানের প্রভাব।
সূত্র – দান
ও
ফল, উ গুণবদ্ধন পঞ্ঞা থের