গৌতম বুদ্ধের সময়ে অনাগত আর্যমিত্র বুদ্ধাংকুর কে ছিলেন?

একদা তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ অজিত থেরকে নিয়ে জেতবন বিহার থেকে কপিলাবস্তু নিগ্রোধারামে অবস্থান করছিলেন। তখন মহাপ্রজাপ্রতি গৌতমী  দুইটি চীবর এনেছিলেন দান করার জন্য। একটি বুদ্ধকে দান করার পর আরেকটি বুদ্ধকে দান করতে গেলে বুদ্ধ বললেন, চীবরটি ভিক্ষুসংঘের যে কোন একজন ভিক্ষুকে দান করুন।

তখন মহাপ্রজাপ্রতি গৌতমী  বড় থেকে ছোট সকল ভিক্ষুর কাছে চীবরখানা দান করতে চাইলেন। কিন্তু কোন ভিক্ষুই সেই চীবরখানি গ্রহণ করতে সাহস করলেন না। কারণ তথাগত মহাকারুণিক যে চীবর গ্রহণ করছেন না, সেই চীবর আর কোন ভিক্ষুর পক্ষে গ্রহণ করার সাহস হলো না। ঠিক সেই সময়ে একজন কনিষ্ঠ ভিক্ষু চীবরটি গ্রহণ করলেন। সেই কনিষ্ঠ ভিক্ষুটি আর কেহ নন, তিনি হলেন ভদন্ত অজিত থের। অজিত থের চীবরটি গ্রহণ করায় ভিক্ষুদের মধ্যে গুঞ্জন সৃষ্টি হলো। কারণ যে চীবর বড় বড় মহাথেরগণ গ্রহণ করেননি, সেই চীবর নিসংকোচে অপরিচিত, অখ্যাত, নবীন এক ভিক্ষু কোন সাহসে গ্রহণ করলো?

ভিক্ষুদের এরকম সমালোচনা বুদ্ধের কর্ণগোচর হলে, বুদ্ধ সকল ভিক্ষুগণকে সমবেত করে বললেন, তোমরা অজিত থেরকে অপরিচিত, অখ্যাত আখ্যা দিয়ে ভুল করেছো। তাকে ছোট করার মানসে তোমাদের এরকম হীন শব্দ ব্যবহার করা উচিত হয়নি। কারণ কনিষ্ঠ ভিক্ষু হলেও  অজিত থের যেমন তেমন ভিক্ষু নন। গৌতম বুদ্ধের প্রশংসা শুনে ভিক্ষুসংঘগণ অবাক হয়ে গেলেন। তখন ভগবান বুদ্ধ বললেন, “এই অজিত থের আগামী ভদ্রকল্পে আর্যমিত্র বুদ্ধ নামে আবির্ভূত হবেন। ইনিই বোধিসত্ত্ব অজিত থের।“

তখন উপস্থিত সকলে অজিত থেরকে সম্মান এবং পূজা করেছিলেন। বোধিসত্ত্ব অজিত থের সেদিনই ভগবান বুদ্ধ কর্তৃক আর্যমিত্র বুদ্ধাংকুর বলে পরিচিত হলেন।

 

সূত্র-দেশনা কল্পতরু