আমরা ধর্মকে কিভাবে দেখছি?
আমরা ধর্মকে অন্ধ ব্যক্তি যেভাবে হাতিকে দর্শন করে ঠিক সেভাবেই দেখছি। অন্ধ মানুষ
চোখে দেখে না, তাই হাতির শুড়ে হাত দিয়ে বলেছে এটা তো সর্প। হাতির পা-কে মনে করেছে
গাছ। পেটকে মনে করেছে বাশেঁর বেড়া। হাতির দাতেঁ হাত দিয়ে বলেছে বল্লম। কানকে মনে
করেছে কুলা। আমরাও
ধর্মকে এভাবেই দেখছি। ধর্মের সঠিক রূপ, সঠিক প্রতিচ্ছবি আমরা জ্ঞান চক্ষুতে দেখার
চেষ্টা করি না। আমরা মনে করি পঞ্চশীল নিলেই ধর্ম। অষ্টশীল মানে একবেলা উপবাস থাকলেই
ধর্ম হয়ে যাচ্ছে। ছোয়াইং দিলেই ধর্ম হয়ে যাচ্ছে। যেমন সেদিন একজন ভান্তে দেশনার সময়
বলেছেন, কাজের মেয়েকে দিয়ে পিন্ডাচরণের ছোয়াইং দে। কারণ তারা ঘুম থেকে এত ভোরে উঠতে
পারেন না। এই উদাহরণ দিলাম ধর্মকে আমরা সেভাবেই চিনি, জানি। আমরা সঠিকভাবে ধর্ম
পালন এবং ধারণ করতে জানিনা বলেই সমাজে ধর্মের অবক্ষয় হচ্ছে। এখন আমাদের সন্তানেরা
ধর্মান্তরিত হচ্ছে। কেন এরকম হচ্ছে? কারণ আমরা নিজেরা ধর্ম বুঝি না, আচরণ করি না,
সন্তানদেরও
সেভাবে ধর্মীয় আচার আচরণ শিখাতে পারি না। সন্তানরা ধর্ম বুঝে
না বলেই অন্য ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এরা জানে না ধর্মান্তরিতের
কারণে মৃত্যুর পর তাদের জন্য নরকের দ্বার অবধারিত। এজন্য কিন্তু আমরাই দায়ী। আমরা
নিজেরা ধর্ম জানি না, জানবার চেষ্টা করি না। তাই আচরণ করতে পারি না সঠিকভাবে। আচরণ
করার কিংবা ধর্মকে আয়ত্ব করার কথা চিন্তা করি না। এভাবে জন্মগত বৌদ্ধ হয়ে আর কতদিন
থাকব? বুদ্ধ বলেছেন---জন্মের দ্বারা কেউ চন্ডাল বা ব্রাক্ষ্মণ হয় না, কর্মের
দ্বারাই সব হয়। তাহলে আমরা কর্মের দ্বারা বৌদ্ধ হই না কেন? দিন তো দ্রুতই শেষ হয়ে
যাচ্ছে। আমাদের আগামী হোক সুন্দর শুভ চেতনায় ধর্মীয় মানসিকতায়, শুভ্রতায় অনন্য। এই
প্রত্যাশা রইল।