বুদ্ধের অবর্তমানে যাকে আমরা আমরা পূজা করি
তা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের জানতে হবে জাদী সম্পর্কে। এক কথায় বলতে গেলে, যাহা
পূজার যোগ্য, যাহা অঞ্জলিবদ্ধ হয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের যোগ্য তাহাই জাদী। অর্থাৎ ইট,
পাথর দিয়ে সাজিয়ে বুদ্ধের ধাতু স্থাপনক্রমে সর্ব প্রাণীর পূজার যোগ্য, প্রণামযোগ্য
এবং শ্রদ্ধা গ্রহণের যোগ্য যাহা তাহাই জাদী।
জাদী তিন রকমের। যথা – ১) শরীর ধাতু জাদী, ২)
পরিভোগ জাদী এবং ৩) উদ্দেশ্য জাদী।
১। শরীর ধাতু জাদী – এই জাদী বুদ্ধের
জীবিতকালে হয় না। বুদ্ধের পরিনির্বাণের পরেই এটা হয়। তাই বুদ্ধ বলেছিলেন, আমার
পরিনির্বাণের পর শরীর ধাতু জাদী পাওয়া
যাবে।
২। পরিভোগ জাদী – ভগবান বুদ্ধের ব্যবহার্য্য
জিনিসপত্র যেমন বুদ্ধের চীবর, স্যাবাইক, চেয়ার, খাট এবং বুদ্ধ যেখানে বসে বুদ্ধত্ব
প্রাপ্ত হয়েছিলেন সেই বোধিবৃক্ষ হচ্ছে পরিভোগ জাদী।
৩। উদ্দেশ্য জাদী – ভগবান বুদ্ধকে উদ্দেশ্য
করে সোনা, রূপা, পিতল, লোহা বিভিন্ন কিছু দিয়ে যে সমস্ত বুদ্ধের প্রতিচ্ছবি বা
মূর্তি বানানো হয় সেগুলোকে উদ্দেশ্য জাদী বলে।
জগতের প্রথম ধাতু জাদী – রাজকুমার সিদ্ধার্থ
সংসার ত্যাগ করে অনোমা নদীর তীরে অধিষ্ঠান পূর্বক যখন চুল কেটে আকাশে নিক্ষেপ
করেছিলেন তখন দেবরাজ ইন্দ্র সেই চুল সোনার ভান্ডে করে দেবলোকে নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠা
করেন চুলামনি জাদী। আমরা আশ্বিনী পূর্ণিমায় ফানুস উড়িয়ে সেই চুলামনি জাদীকেই পূজা
করি। এইভাবেই দেবরাজ ইন্দ্র বুদ্ধের বুদ্ধত্ব প্রাপ্তির পূর্বেই স্বর্গে চুলামনি
নামক জাদী স্থাপন করেন।
সূত্র – দেশনা কল্পতরু।