আর্য্যোপোসথের অচিন্তনীয় ফল

একদা তথাগত মহাকারুণিক ভগবান বুদ্ধ মহাউপাসিকা বিশাখাকে আর্য্যোপোসথ পালনের আশ্চর্য্য ফল সম্বন্ধে দেশনায় বলেছেন, হে বিশাখে, আর্য্যোপোসথ মহাফলদায়ক, মহাজ্যোতিসম্পন্ন ও মহাফলদায়ক। কিরূপে? যেমন সপ্তরত্ন পরিপূর্ণ অতি সমৃদ্ধ অংগ, মগধ, কাশী, কোশল, বজ্জী, মল্ল, চেতিয়, বংগ, মচ্ছা, সুরসেন, অস্সক, অবন্তী, গান্ধার ও কম্পোজ এই ষোড়শ মহাজনপদের যিনি অধীশ্বর, এসব রাজ্যের একাধিপত্য সুখে সুখী, তিনি কতো বড় ভাগ্যবান ও পুণ্যবান। কিন্তু বিশাখে এই অত্যাশ্চর্য্য সুখ অষ্টাংগ উপোসথের তুলনায় খুবই নগন্য। এক অহোরাত্র উপোসথশীল পালনে যেই মহাপুণ্য অর্জিত হয়, সেই তুলনায় মনুষ্য সম্পদ, রাজ চক্রবর্ত্তীর সম্পদও অতি অকিঞ্চিৎকর।

অষ্টাংগ উপোসথশীল রক্ষার পুণ্য এতোটাই মহান যে, সেই পুণ্যের প্রভাবে কেহ কেহ মৃত্যুর পর চতুর্মহারাজিক, কেহ তাবতিংস, যাম, তুষিত, নির্মাণরতি ও পরনির্মিত বশবর্তী দেবকুলে উৎপন্ন হয়।

তাবতিংস স্বর্গের একরাত্রি মনুষ্যলোকের গণনায় একশত বৎসর। তাবতিংস দেবতাদের পরমায়ু এক হাজার বৎসর। মনুষ্য গণনায় তিন কোটি ষাট লক্ষ বৎসর।

যাম দেবতার পরমায়ু দুই হাজার বৎসর। তাদের একদিন মনুষ্য গণনায় ২০০ বৎসর।মনুষ্য গণনায় ১৪ কোটি ৪০ লক্ষ বৎসর।

মনুষ্য লোকের ৪০০ বসরে তুষিত দেবতার একদিন।তুষিত দেবতাদের পরমায়ু চার হাজার বৎসর। মনুষ্য গণনায় ৫৭ কোটি ষাট লক্ষ বৎসর।

৮০০ বসরে হয় নির্মাণরতি দেবতার একদিন। নির্মাণরতি দেবতাদের পরমায়ু আট হাজার বৎসর।

মনুষ্য গণনায় ১৬০০ বসরে পরনির্মিত বশবর্ত্তী দেবতার এক দিবারাত্র। দিব্য গণনায় তথাকার দেবতাদের পরমায়ু ষোল হাজার বৎসর।

বিশাখে, দেবগণ সুদীর্ঘকাল এইভাবে অনুপম দিব্যসুখে অভিরমিত হয়, সুখী হয়। একারণেই বলছি, দিব্য সুখের তুলনায় মনুষ্যসুখ অতি নগন্য, দুর্গততুল্য।

সম্যক সম্বুদ্ধের মুখ-নিসৃত আর্যোপোসথ পালনের আশ্চর্য্য ফল সম্পর্কে জেনে আমাদের উচিত এভাবেই অষ্টাংগ উপোসথ শীল পালন করত: দিব্য সুখের অধিকারী হবার প্রচেষ্টায় রত থাকা। সকলের মধ্যে ধর্মজ্ঞান উপন্ন হোক, সকলেই সুখী হোক এই কামনা করি।

 

 

সূত্র – শ্রীম শীলালংকার মহাস্থবির রচিত বিশাখা।