সতিপট্ঠান মানে স্মৃতিপ্রস্থান ধর্ম। এই ধর্মের মর্মার্থ যারা নিয়মিত ধ্যান অনুশীলন
করেন এবং যারা খন্ডকালীন ভাবনা করেন কিংবা ধ্যান কোর্সে অংশগ্রহণ করেছেন তারা খুব
তাড়াতাড়ি অনুধাবণ করতে পারবেন। মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই। আমরা যদি সঠিকভাবে অলসতা
ত্যাগ করে একটু সচেষ্ট হই, ধর্মকে ধারণ করার চেষ্টা করি তাহলে সফলতা আমাদের আসবেই।
আমরা হতে পারব যে কোন একটা মার্গফলের অধিকারী। নির্বাণ আমাদের মধ্যেই বিরাজ করছে।
আমরা শুধু নিজেদের চিনতে পারছি না বলেই নির্বাণকে অনেক দূরের বলে চিন্তা করছি।
আমাদের মধ্যে আমিত্বভাব খুবই প্রবল। বলা হয় শক্ত পাথর ক্ষয় করা সম্ভব কিন্তু
অবিদ্যার খোলস থেকে আমাদের বের হবার পথ তার চাইতে অনেকগুণ শক্ত। যাহা ক্ষয় করা অনেক
কষ্টের।
বুদ্ধ বলেছেন হে ভিক্ষুগণ, চারটি স্মৃতিপ্রস্থান আছে। যাহা সম্যকসম্বুদ্ধ,
পচ্চেকবুদ্ধ, শ্রাবকগণ এবং সত্ত্বগণের চিত্তের ক্লেশ আবর্জনাদি বিশুদ্ধির একমাত্র
মার্র্গ, শোক-পরিদেব নির্মুলের, দু:খ দৌর্মনস্য নিবারণের একমাত্র পথ, চারটি মার্গ
(জ্ঞান) দর্শনের এবং নির্বাণকে স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করার একটি মাত্র মার্গ।
তথাগত আরো বলেছেন, যে রাস্তা আমি বুদ্ধ স্বয়ং অনুসরণ করেছি, অতীতের সমস্ত বুদ্ধগণ
অনুসরণ করেছেন এবং ভবিষ্যতে যত বুদ্ধ উৎপন্ন হবেন তারা ও
অনুসরণ করবেন, যাহা অনুসরণ করে আমার শিষ্য শ্রাবকবৃন্দ পরমসুখ অসংষ্কৃত নির্বাণ লাভ
করেছেন, যাহার দ্বারা সত্ত্বগণের চিত্তের আবর্জনা, অবসাদ, ক্লান্তি দূরীভূত হয়,
চিত্ত বিশুদ্ধ হয়, শোক-পরিদেব স্তিমিত হয়, মনের উত্তাপ নিবে যায়, চিত্তের মধ্যে
জ্ঞান উৎপন্ন হয়, যে জ্ঞান শীল, সমাধি, প্রজ্ঞা অর্থাৎ নির্বাণ পাওয়ার
জ্ঞান। এক কথায় কেউ যদি নির্বাণ ধাতুতে উপনীত হতে চায়
তাহলে সতিপট্ঠানের রাস্তা অনুসরণ করতে
হবে। সতিপট্ঠান চার ভাগে বিভক্ত। কায়ানুপস্সনা, বেদনানুপস্সনা, চিত্তানুপস্সনা,
ধম্মানুপস্সনা। এই সতিপট্ঠান চর্চা করে আপনি ও হতে পারেন অজর অমর
নির্বাণ পথের পথিক। তাহলে আর দেরী কেন? আজই শুরু করে দিন সতিপট্ঠান চর্চা।
সকলের মধ্যে ধর্মজ্ঞান উৎপন্ন হোক এই কামনা করছি।