উপবাদান্তরায়

 

প্রতি গালি, নিন্দা, ঠাট্টা, বিদ্রুপ ইত্যাদি অবমাননা সূচক বাক্যাদি প্রয়োগ সহকারে অবজ্ঞা প্রদর্শন করাকে উপবাদান্তরায় বলে। উহা স্বর্গ মোক্ষ লাভের অন্তরায়। যে সকল ব্যক্তি উক্তরূপ পাপানুষ্ঠান করে তাদের পক্ষে মার্গফল লাভ করা দূরে থাকুক, তারা কাম সুগতি ভূমিতেও জন্ম পরিগ্রহ করতে পারে না। অধিকন্তু মৃত্যুর পর অপায় ভূমিতে জন্ম গ্রহণ করে অশেষ দুঃখ দুর্দশা বোগ করতে থাকে। এই অন্তরায় আর্য উপবাদান্তরায় নামেও বর্ণিত। আর্য দ্বিবিধ-যথাঃ দর্শনার্য ও আচারার্য। যে ব্যক্তি মার্গ জ্ঞানে চার আর্য-সত্য প্রত্যক্ষ করে নির্বাণ সাক্ষাৎ করেন, তিনি দর্শনার্য নামে প্রসিদ্ধ। আর যে ব্যক্তি চার আর্য সত্য প্রত্যক্ষ করার জন্য বিদর্শন ভাবনায় অবিরাম ভাবে নিমগ্ন তিনি আচারার্য নামে অভিহিত। সেরূপ আর্য পুরুষের প্রতি-অবমাননা-সূচক গ্লানিকর অপবাদ করলে আর্যোপবাদ অন্তরায় হয়। এই অন্তরায় যদি জ্ঞাতসারে কিংবা অজ্ঞাতসারে হয়ে থাকে, তবে তা প্রতিকার করা কর্ত্তব্য। অন্তরায় হয়েছে বলে ধারণা জন্মিলেই তৎক্ষণাৎ আর্যপুরুষের নিকট উপস্থিত হয়ে বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করলে অন্তরায় মুক্ত হওয়া যায়। আর যদি সেই আর্য পুরুষ জীবিত না থাকে, তবে অনুতপ্ত হৃদয়ে শ্রদ্ধার সাথে মৃত আর্য-পুরুষের উদ্দেশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও অন্তরায় মুক্ত হওয়া যায়।