রাজা সোনাদাসী

 

সোনা দেবী স্বর্গে উৎপন্ন হয়ে চিন্তা করলেন, কোন পুণ্যের ফলে আমি এরূপ রূপ লাবণ্য ধন সম্পদ লাভ করেছি? তখন দিব্য চক্ষু দিয়ে দেখলেন, পৃথিবীতে থাকাকালীন তিনি ছিলেন খুবই গরীব ঘরের মেয়ে, রাজার দাসী। রাজা ভিক্ষুসংঘসহ বুদ্ধকে ফাং করে ছোয়াইং দান করেছিলেন। আর দাসী কায়-মনো-বাক্যে দানকার্যে অংশগ্রহণ করেছিলেন মাত্র। দাসী চিন্তা করলেন, কোনদিন নিজের পকেট থেকে একটাকা দান করতে পারিনি। সেই রাজা, যিনি আমার পরম কল্যাণমিত্র , রাজার পুণ্যকর্মের ফলে আমি সেই পুণ্যকর্মে  অংশগ্রহণ করতে পেরেছিলাম সেই রাজা এখন কোথায়? দেখলেন রাজা তার অনেক নীচে চতুর্মহারাজিক স্বর্গে উৎপন্ন হয়েছেন। সোনাদাসী উৎপন্ন হয়েছেন পরনিম্মিত বসবত্তী স্বর্গে। দাসী দেবী রাজার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চতুর্মহারাজিক স্বর্গে দিব্য জ্যোতিতে আবির্ভূত হলে রাজা দেবতা হাতজোড় করে নমষ্কার করে বললেন, হে মহান দেবী—আপনি কোত্থেকে এসেছেন? দাসী দেবী হেসে বললেন, রাজা আপনি আমাকে চিনতে পারছেন না? রাজা বললেন, চিনবো কি করে?

 

তখন দাসী দেবী বললেন হে রাজন মনে করে দেখুন পৃথিবীতে থাকাকালীন সোনা দাসী নামে কেউ ছিল কিনা? তখন রাজা বললেন, হা চিনতে পেরেছি। আপনি আমার বেতনধারী চাকরানী ছিলেন। তখন দাসী দেবী বললেন, হা আমি চাকরাণী ছিলাম। আপনার সে দানকর্মে আমি ভিক্ষুসংঘের সেবা করেছিলাম মন প্রাণ দিয়ে। আপনি শুধু টাকা দিয়েছিলেন। আপনার কায়িক এবং বাচনিক কোন পরিশ্রম করেননি। ভান্তে এটি নেন, এগুলো খাবেন কিংবা ভান্তেদের পরিবেশন করেননি। তাই আপনার পুণ্যাংশ তিন ভাগের এক ভাগ আর আমি পরিপূর্ণভাবে দান করেছি। তাই আমার দান আপনার দানের চাইতে শ্রেষ্ঠতর হয়েছে। এই কারণে আমি আপনার চাইতে অনেক উপরের স্বর্গে উৎপন্ন হয়েছি। দেখুন শুধুমাত্র টাকা পয়সা দিলেই সঠিকভাবে পুণ্য অর্জিত হয় না। কায়-মনো-বাক্যে অন্যের পুণ্য কাজে অংশগ্রহণ করলে সেই পুণ্য মহাফল দেয়। সকলের জয়মংগল হোক।