একটি নৌকার মাধ্যমে যদি আপনি নদীর ঐপারে যেতে
চান তাহলে আপনার নৌকা ছিদ্রবিহীন হতে হবে। ছিদ্র হলে ঐপারে পৌছানো সম্ভব নয়। পা যদি
দুর্বল হয়, বেশিক্ষণ দাড় টানা যাবে না। তাহলে গন্তব্যে পৌছানো যাবে না। যদি ঠিকভাবে
নৌকার হাল ধরা যায়, শক্তি সামর্থ্য থাকে এবং নৌকায় কোন ছিদ্র না থাকে, তাহলে
গন্তব্যে পৌছানো যাবেই।
যেমন :
১। মজবুত নৌকা
২। ভালো দাড়
৩। ভালো হাল
৪। নৌকা আরোহীর সক্ষম দুই পা
৫। শক্ত সক্ষম দুটি হাত।
এই পাচটি উপাদান পরিপূর্ণ থাকলে নদীর অপর
পাড়ে পৌছানো যাবেই। এখানে এপার হচ্ছে ভব সংসার। ঐপার হচ্ছে নির্বাণ, পরম শান্তির
জায়গা।
১। পা দুটি বলতে শীলকে বলা হয়েছে। শীল বিহীন
ব্যক্তি কখনো নির্বান লাভ করতে পারবে না। শীলে প্রতিষ্ঠিত হবার পরেই সমাধি, প্রজ্ঞা
উৎপন্ন হবে। তাই শীল পরিপূর্ণ হতে হবে।
২। হাত দুটো বলতে শ্রদ্ধার কথা বলা হয়েছে।
শ্রদ্ধা পূর্ণ থাকলে ভব নদী পার সহজ হয়ে যায়।
৩। নৌকার দাড় বলতে বীর্যকে বলা হয়েছে। দাড়
টানলে নৌকা অগ্রসর হয়, ঠিক তেমনি বীর্য ধারণ করলে উন্নতি হয়, অবনতি হয় না।
৪। নৌকার হাল বলতে প্রজ্ঞাকে বুঝায়। হাল যেমন
সঠিক গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারে, তেমনি প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি নিজের অভীষ্ট লক্ষ্যে
পৌছাতে পারে।
৫। নৌকা বলতে চেতনাকে বোঝানো হয়েছে। চেতনার
অর্থ কর্ম। পাপ-পুণ্য উভয়ই চেতনা প্রসূত।
বুদ্ধ বলেছেন, চেতনাকেই আমি কর্ম বলি।
তাহলে ভব নদী পার হতে হলে আমাদের পরিপূর্ণ
ভাবে সকল কুশল কর্ম নির্বিঘ্নে সম্পাদন করতে হবে। অর্থাৎ শ্রদ্ধা চিত্তে সঠিক
চেতনায় দান, শীল, ভাবনা এবং শীল সমাধি প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ হতে হবে। তাহলে নির্বাণ
আমাদের অতি নিকটেই চলে আসবে।