প্রার্থনার প্রয়োজনীয়তা কেন?

 

আমরা প্রতিদিন অনেক কুশল কর্ম সম্পাদন করি। জ্ঞাতে, অজ্ঞাতে পুণ্য সঞ্চয় করি। আমরা রাস্তা দিয়ে হাটার সময় কাউকে এক টাকা দান করি। কিংবা কতকিছু উচ্ছিষ্ট ফেলে দিই। সবখানেই সঠিক চেতনায় দানময় চিত্তে দান করলে তার ফল হয় অপ্রমেয়। এভাবে যেই পুণ্যসমূহ সঞ্চয় করি সেই পুণ্যের বিপরীতে আমাদের যদি সঠিক প্রার্থনা না থাকে তাহলে সব বিফলে যাবার মতই হবে। আমাদের মধ্যে শ্রদ্ধা, শীল, শ্রুত, ত্যাগ এবং প্রজ্ঞা এই পঞ্চধর্ম বিদ্যমান থাকা সত্ত্বে ও যদি প্রার্থনা না থাকে তাহলে গতি অনির্দিষ্ট। আর যাদের পঞ্চধর্ম বিদ্যমান নাই কিন্তু প্রার্থনা আছে তাহলে তাদের গতিও অনির্দিষ্ট। মজ্ঝিম নিকায়ের সংখ্যারুপ্পত্তি সূত্রে উক্ত হয়েছে, একটি যষ্টি আকাশের দিকে নিক্ষেপ করিলে পড়িবার সময় কোথায় পড়বে তাহার যেমন নির্দিষ্ট নেই, তেমনি শ্রদ্ধাদি পঞ্চ ধর্ম আর প্রার্থনা দুইটি যাহাদের নাই, তাহারা মরণের পরে কোথায় জন্মগ্রহণ করিবে, তাহার কোন স্থিরতা নাই। সেজন্য আমাদের যে কোন পুণ্যকর্ম করিয়া প্রার্থনা করা উচিত।

একমুষ্টি পত্রদানের সামান্য পুণ্য হউক বা বেলাম ব্রাক্ষ্মণের দানের তুল্য মহাকুশলই হউক সংসারের ভোগ-বিলাস কামনা করিয়া দান করিলে তদ্বারা ভোগ সম্পত্তি মাত্রই লাভ হয় কিন্তু অনন্ত সংসার দু:খের অবসান হয় না। আমাদের যে কোন পুণ্যকর্ম করে অতীব শ্রদ্ধার সহিত প্রার্থনা করে বলতে হবে, আমার সকল পুণ্য নির্বাণ লাভের হেতু হউক। এইরকম প্রার্থনা করলে অর্হত্ত্ব মার্গফল, পচ্চেক বোধিজ্ঞান সহ সর্বজ্ঞতা জ্ঞান পর্যন্ত লাভ করিতে পারে।

 

সূত্র – সদ্ধর্ম রত্নাকর, শ্রী ধর্মতিলক স্থবির