৫১.কণিকার বর্গ

১.ত্রিকণিকারপুষ্পিয়স্থবির অপদান

১.বত্রিশ মহাপুরুষলক্ষণবিশিষ্ট সুমেধ সম্বুদ্ধ বিবেককামীহয়ে হিমালয়ে গিয়েছিলেন।

২.মহাকারুণিক শ্রেষ্ঠ মুনি পুরুষোত্তম সুমেধ হিমালয়ে প্রবেশ করে পদ্মাসনে উপবেশন করেছিলেন।

৩.তখন আমি এক বিদ্যাধর ছিলাম। আমি আকাশে বিচরণ করতাম। তখন আমি সুনির্মিত ত্রিশূল নিয়ে শূন্যে বিচরণ করতাম।

৪.পর্বতশীর্ষে যেমন আগুন, পূর্ণিমার আকাশে যেমন চাঁদ তেমনি বুদ্ধও সুষ্পিত শালরাজের ন্যায় বনে জ্যোতির্ময় ছিলেন।

৫.সেই নলাগ্নি বণসদৃশ বুদ্ধরশ্নি আপন ঔজ্জ্বল্যে বন হতে বিচ্ছুরিত হচ্ছিল। তা দেখে আমার চিত্ত প্রসন্নতায় ভরে উঠেছিল।

৬.আমি বনে দেগন্ধী কণিকার পুষ্প দেখতে পেয়েছিলাম। সেখান থেকে তিনটি পুষ্প নিয়ে বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে পূজা করেছিলাম।

৭.বুদ্ধের অমিতপুণ্যপ্রভাবে তখন আমার সেই তিনটি পুষ্প ঊধ্ববৃন্ত ও অধোপত্র হয়ে শাস্তাকে ছায়াদান করছিল।

৮.সেই সুকৃত কর্মের ফলে ও প্রার্থনা অনুযায়ী মনুষ্যদেহ ত্যাগ করে আমি তাবতিংস দেবলোকে জন্মেছিলাম।

৯.সেখানে আমার একটি ষাট যোজন দীর্ঘ ও ত্রিশ যোজন প্রস্থ সুনির্মিত ব্যামপ্রাসাদ ছিল এবং তা ‘কণিকার’ নামে পরিচিত হতো।

১০.আমার সেই ব্যাম প্রাসাদে সহস্রকাণ্ডবিশিষ্ট শত মালা হিরন্ময় ধ্বজালু ও লাখো চূড়া প্রাদুর্ভূত হতো।

১১.আমার ইচ্ছানুযায়ী স্বর্ণময়, মণিময় ও লোহিতঙ্গময় ফলক ও পালঙ্ক প্রাদুর্ভূত হতো।

১২.আমার মহার্ঘ শয্যা হতো নরম তুলাবৃত, সূক্ষ্ণঊর্ধ্বলোমযুক্ত ও বালিসমেত।

১৩.আমি যখন ভবন হতে বের হয়ে ভ্রমণ করতে চাইতাম তখন দেবসংঘ আমার সাথে থাকত।

১৪.আমি ফুলের উপরদাঁড়াতাম। আমার চারপাশে শতযোজন জায়গা জুড়ে কণিকার পুষ্পে আচ্ছন্ন শামিয়ানার হতো আচ্ছাদনী থাকত।

১৫.ষাট হাজার তুর্য সকাল-সন্ধ্যা আমাকে সেবা করত এবং রাতদিন অতন্দ্রভাবে নিত্য আমাকে পরিবৃত করে থাকত।

১৬.তখন আমি নাচ, গান, বাদ্য বাজনায় ও রতিক্রিয়ায় রমিত হতাম এবং পঞ্চকামগুণে আমোদিত হতাম।

১৭.তখন আমি তাবতিংস স্বর্গে নারী-পরিবেষ্টিত হয়ে উত্তম ব্যামপ্রাসাদে খেয়ে-দেয়ে ও পান করে আমোদিত হতাম।

১৮.আমি পাঁচশত বার দেবরাজত্ব করেছিলাম, তিনশতবার চক্রবর্তী রাজা হয়েছিলাম, আর প্রাদেসিক রাজা তো অসংখ্যবার হয়েছিলাম।

১৯.আমি ভবসংসারে জন্মপরিভ্রমণকালে মহাভোগসম্পত্তি লাভ করতাম। আমার ভোগসম্পত্তির কোনো ঘাটতি ছিল না। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

২০.দেবলোক ও মনুষ্যলোক এই দুই লোকেই শুধু আমি জন্মগ্রহণ করেছি। অন্য কোনো গতি হয়েছিল বলে আমার জানা নেই। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

২১.আমি শুধু ক্ষত্রিয় ও ব্রাহ্মণ এই দুই কুলেই জন্মগ্রহণ করেছি। কখনও আমি নীচকুলে জন্মাইনি। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

২২.হস্তিযান, অশ্বযান ও সচল সিবিকাযান এই সমস্তই আমি লাভ করতাম। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

২৩.দাস-দাসী ও সুসজ্জিত নারী সবকিছুই আমি লাভ করতাম। ইহা আমার বুদ্ধ পূজারই ফল।

২৪.কোশেয়্য কম্বল, ক্ষৌমবস্ত্র ও কার্র্পাস সবকিছুই আমি লাভ করতাম। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

২৫.নতুন বস্ত্র, নতুন ফল ও নতুন রসালো ভোজন বকিছুইস আমি লাভ করতাম। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

২৬.ইহা খাও, ইহা ভোজন কর, এই শয্যায় শয়ন কর- সবকিছুই আমি লাভ করতাম। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

২৭.আমি সর্বত্রই পূজিত হতাম। আমি সকলের প্রিয় হতাম। আমার পরিষদ ছিল সব সময় ঐক্যকব্দ। আমি জ্ঞাতিগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হতাম। ইহা আমার বুদ্ধারই ফল।

২৮.আমি শীত কী, উষ্ণ কী জানতাম না। পরিদাহ বলতে আমার কিছুই ছিল না। এমনকি আমার হৃদয়ে কখনও চৈতসিক দুঃখও ছিল না।

২৯.আমি সুবর্ণবর্ণের অধিকারী হয়ে ভবভবান্তরে জন্মপরিভ্রমণ করতাম। বিবর্ণতার দেখা আমি কখনই আমি পাইনি। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

৩০.দেবলোক হতে চ্যুত হয়ে পূর্বকৃতপুণ্যপ্রভাবে আমি শ্রাবস্তীর এক ধনাঢ্য মহাশাল কুলে জন্মেছিলাম। পঞ্চকামগুন ত্যাগ করে আমি অনাগারিক প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেছিলাম এবং জন্মের মাত্র সাত সৎসর বয়সে অর্হত্ত্ব লাভ করেছিলাম।

৩২.চক্ষুষ্মান বুদ্ধ আমার গুণের কথজেনো আমাকে উপসম্পদা প্রদান করেছিলেন। আমি অতীব তরুন পূজনীয়। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

৩৩.আমার দিব্যচক্ষু অত্যন্ত বিশুদ্ধ। আমি সমাধিতে অভিজ্ঞ ও অভিজ্ঞালাভী। ইহা আমার বুদ্ধ পূজারই ফল।

৩৪.আমি প্রতিসমিদালাভী,্ভ ঋদ্ধিপাদে দক্ষ ও ধর্মে পারমীলাভী। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

৩৫.আজ থেকে তিনহাজার কল্প আগে আমি যেই বুদ্ধপূজারইফল। সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধ পূজারই ফল।

৩৬.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৩৭.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৩৮.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানত্রিকণিকারপুষ্পিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [ত্রিকণিকারপুষ্পিয়স্থবির অপদান প্রথম সমাপ্ত]

২.একপাত্রদায়ক স্থবির অপদান

৩৯.হংসবতী নগরে আমি এক কামার ছিলাম। একদিন আমি স্রোতোত্তীর্ণ, অনাক্ত, বিরজ বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।

৪০-৪১. আমি বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে একটি সুনির্মিত মৃত্তিকা পাত্র দান করেছিলাম। ঋজুভূত ভগবানকে পাত্র দান করে জন্মজন্মন্তরে আমি স্বর্ণময়, মণিময়, রৌপ্যময় ও চর্মময় থালা বা পাত্র লাভ করেছিলাম।

৪২.আমি তাদৃশ পাত্রে তা থালায় করে ভাত খেতাম। ইহা আমার পূর্বকৃতপুণ্যফল। আমি যশস্বী ও ধনীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হতাম।

৪৩.উর্বর ক্ষেত্রে অল্পমাত্র বীজ রোপন করা হলেও সঠিকসময়ে ও সঠিক পরিমাণে বারিবর্ষণ হলে কৃষক যেমন বিপুল ফল লাভে খুশি হন।

৪৪.অনুরূপভাবে এই বুদ্ধক্ষেত্রে রোপিত আমার এই পাত্রদান মুষলধারেপ্রীতি বর্ষিত হলে আমাকে ফলে পরিতৃপ্ত করবে।

৪৫.সংঘের মধ্যে ও গণের মধ্যে অন্য যাকিছু ক্ষেত্র আছে তন্মধ্যে এই বুদ্ধক্ষেত্র তুল্য অন্য কিছু সেই যা সকলপ্রাণিকে সুখ দান করে।

৪৬.হে পুরুষ শ্রেষ্ঠ, আপনাকে নমস্কার। হে পুরুষোত্তম, আপনাকে নমস্কার। একটি মাত্র পাত্র দান করে আমি অচলপদ নির্বাণ লাভ করেছি।

৪৭.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই পানপাত্র দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার পাত্রদানেরই ফল।

৪৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৪৯.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৫০. চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানএকপাত্রদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [একপাত্রদায়ক স্থবির অপদান দ্বিতীয় সমাপ্ত]

৩.কাসুমারফুলিয়স্থবির অপদান

৫১.আমি পর্বতমধ্যে উপবিষ্ট কণিকার পুষ্পের মতো উজ্জ্বল লোকশ্রেষ্ঠ, নরোত্তম বিরজ বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।

৫২.আমি অতীব প্রসন্নমনে নতশিরে কতাঞ্জলিৃ হয়ে কাসুমারিক ফল নিয়ে বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে দান করেছিলাম।

৫৩.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই বিপাক।

৫৪.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৫৫.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৫৬.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানকাসুমারফলিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [কাসুমারফলিয়স্থবির অপদান তৃতীয়সমাপ্ত]

৪.অবটফলিয় স্থবির অপদান

৫৭.সয়মূ্ভ অপরাজিত সহস্ররশ্মি ভগবান বিবেক হঠে উঠে এসে ভিক্ষার জন্য বের হয়েছিলাম।

৫৮.আমি নরোত্তম ভগবানকে দেখে ফাল হাতে তার কাছে গিয়েছিলাম এবং প্রসন্নমনে অবটফল দান করেছিলাম।

৫৯.আজ থেকে চুরানব্বই কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই বিপাক।

৬০.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৬১.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৬২.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানঅবটফলিয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [অবটফলিয স্থবির অপদান চতুথসমাপ্তর্]

৫.পাদফলিয় স্থবির অপদান

৬৩.পরমপূজনীয় সুবর্ণ বর্ণ সম্বুদ্ধকে রথে চরে যেতে দেখে আমিতাঁকে পাদফল দান করেছিলাম।

৬৪.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই বিপাক।

৬৫.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৬৬.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৬৭.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানপাদফলিয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [পাদফলিয় স্থবির অপদান পঞ্চম সমাপ্ত]

৬.মাতুলুঙ্গফলদায়কস্থবির অপদান

৬৮.আমি কনিকাপুষ্পের মতো উজ্জ্বল, পূর্ণিমারচাঁদের ন্যায় স্নিগ্ধ ও দীপবৃক্ষের ন্যায় জ্বলন্ত লোকনায়ক বুদ্ধকে দেখতেপেয়েছিলাম।

৬৯.আমি মাতুঙ্গফল হাতে নিয়ে পরম দাক্ষিণের বীর শাস্তাকে প্রসন্নমনে নিজ হাতে দান করেছিলাম।

৭০.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই বিপাক।

৭১.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৭২.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৭৩.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানমাতুলঙ্গফলদায়কস্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [মাতুলুঙ্গফলদায়কস্থবির অপদান ষষ্ঠ সমাপ্ত]

৭.অজেলিফলদায়ক স্থবির অপদান

৭৪.তখন বিদ্যাচরণসম্পন্ন, সমাধিকুশলমুনিঅজ্জুনোনামক সম্বুদ্ধ হিমালয়ে বসবাস করছিলেন।

৭৫.কুমমাত্র্ভ জীবনীশক্তিদায়ক অজেলিফল নিয়ে আমি শাস্তাকে দান করেছিলাম।

৭৬.আজ থেকে চুরানব্বই কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই বিপাক।

৭৭.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৭৮.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৭৯.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানঅজেলিফলদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [অজেলিফলদায়ক স্থবির অপদান সপ্তম সমাপ্ত]

৮.অমোদফলিয় স্থবির অপদান

৮০.পরম পূজনীয় সুবর্ণবর্ণ সম্বুদ্ধকে রথে চড়ে যেতে দেখে আমিতাঁকে অমোদফল দান করেছিলাম।

৮১.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই বিপাক।

৮২.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৮৩.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৮৪.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানঅমোদফলিয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [অমোদফলিয় স্থবির অপদান অষ্টম সমাপ্ত]

৯.তালফলদায়ক স্থবির অপদান

৮৫.সয়মূ্ভ অপরাজিত সহরশ্মি ভগবান বিবেক হতে উঠে এসে ভিক্ষার জন্য বের হয়েছিলেন।

৮৬.আমি নরোত্তম ভগবানকে দেখে ফল হাতে তাঁর কাছে গিয়েছিলাম এবং প্রসন্নমনে তালফল দান করেছিলাম।

৮৭.আজ থেকে চুরানব্বই কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে তালফলদানেরই বিপাক।

৮৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৮৯.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীবশুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৯০.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মান তালফলদায়কস্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন।

[তালফলদায়ক স্থবির অপদান নবম সমপ্ত]

১০.নারিকেলফলদায়ক স্থবির অপদান

৯১.তখন আমি এক আরামিক ছিলাম। একদিন আমি বিরজ বুদ্ধকে সুনীল আকাশ পথ দিয়ে যেতে দেখেছিলাম।

৯২.আমি নারিকেল নিয়ে বুদ্ধশ্রেষ্ঠ দান করেছিলাম। মহাযশস্বী বুদ্ধ আকাশেদাঁড়িয়েই আমার দান গ্রহণ করেছিলাম।

৯৩.অতীব প্রসন্নমনে বুদ্ধকে ফল দান করে সাথে সাথে আমার মনে ভীষণ রকম সুখাবহ ভক্তি উৎপন্ন হয়েছিল।

৯৪.তখন আতি বিপুলপ্রীতি ও সুখ লাভ করেছিলাম। আমি যেখানে জন্মগ্রহণ করতাম সেখানে রত্ন উৎপন্ন হতো।

৯৫.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই বিপাক।

৯৬.আমার দিব্যচক্ষু বিশুদ্ধ। আমি সমাধিতে দক্ষ ও অভিজ্ঞাপ্রাপ্ত। ইহা আমার ফল দানেরই বিপাক।

৯৭.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৯৮.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীবশুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৯৯.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মাননারি ফলদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [নারিকেলফলদায়ক স্থবির অপদান দশম সমাপ্ত]

[কণিকার বর্গ একান্নতম সমাপ্ত]

স্মারক-গাথা

ত্রিকণিকার, একপাত্র, কাসুমারি, অবটফল, পাদফল, মাতুলুঙ্গ, অজেলি, অমোদফলিয়, তালফল ও নারিকেল এই দশে মিলে সর্বমোট নিরানব্বইটি গাথায় এই বর্গ সমাপ্ত।