৪৫.বিভীতক বর্গ

১.বিভীতক মিঞ্জিয় স্থবির অপদান

১.সর্ববিধ ধর্মে সবিশেষ পারদর্শী মহাবীর ককুসন্ধ বুদ্ধ জনসংসর্গ হতে বিছিন্ন হয়ে গভীর বনে চলে গিয়েছিলেন।

২.বীজশাঁস(বহেরার ভিতরে থাকা শাঁস)নিয়ে আমি লতার জড়িয়ে দিয়েছিলাম। ঠিক সেই সময় ভগবান পর্বতের মধ্যে ধ্যান করছিলেন।

৩.হঠাৎ আমি দেবাতিদেব বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম। তারপর আমি অতীব প্রসন্নমনে পরম দাক্ষিণেয়্য বীরকে বীজশাঁসদান করেছিলাম।

৪.এই ভদ্রকল্পেই আমি যেই বীজশাঁসদান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বীজশাঁসদানেরই ফল।

৫.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৬.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৭.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানবিভীতকমিঞ্জিয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [বিভীতকমিঞ্জিয় স্থবির অপদান প্রথম সমাপ্ত]

২.কোলদায়ক স্থবির অপদান

৮.তখন আমি ছিলাম অজিনবস্ত্র পরিহিত, বল্কবস্ত্রধারী। একদিন আমি বড় ঝুড়িতে করে এক ঝুড়ি কলা আমার আশ্রমে নিয়ে এসেছিলাম।

৯.সেই সময় শিখী বুদ্ধ ছিলেন একা, অদ্বিতীয়। একদিন তিনি সবকিছু জেনে-বুঝে আমার আশ্রমে উপস্থিত হয়েছিলেন।

১০.অতীব প্রসন্নমনে আমি সুব্রত বুদ্ধকে বন্দনা করেছিলাম এবং দুহাতে কলা নিয়ে বুদ্ধকে দান করেছিলাম।

১১.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার কলা দানেরই ফল।

১২.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

১৩.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

১৪. চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানকোলদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [কোলদায়ক স্থবির অপদান দ্বিতীয় সমাপ্ত]

৩.বিল্লিয় স্থবির অপদান

১৫.আমি চন্দ্রভাগা নদীতীরে একটি আশ্রম তৈরি করেছিলাম। সমগ্র আশ্রমটি ছিল বিল্ববৃক্ষে সমাচ্ছন্ন এবং নানা ধরণের বৃক্ষ-পরিশোভিত।

১৬.আশ্রমে সুগন্ধ বেল দেখে আমি বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে স্মরণকরেছিলাম। তারপর আমি ভীষণভাবে তুষ্ট ও শ্রদ্ধাপ্রুত হয়ে কাঁধে করে এক ভার নিয়ে এসেছিলাম।

১৭.আমি অনুত্তরপুণ্যক্ষেত্র বীর ককুসন্ধ বুদ্ধের কাছে গিয়ে অতীব প্রসন্নমনে বেলফল দান করেছিলাম।

১৮.এই ভদ্রকল্পেই আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ফলদানেরই সুফল।

১৯.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

২০.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

২১.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানবিল্লিয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [বিল্লিয় স্থবির অপদান তৃতীয়সমাপ্ত]

৪.বহেরাদায়ক স্থবির অপদান

২২.এক সময় সুপুষ্পিত শালরাজের ন্যায় বত্রিশ মহাপুরুষলক্ষণ সম্পন্ন সুবর্ণবর্ণ সম্বুদ্ধ গভীর বনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন।

২৩.বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে যেতে দেখে আমিএকটি তৃণমাদুর বিছিয়ে দিয়ে প্রার্থনা করেছিলাম এই বলে : হে বুদ্ধ, আমাকে অনুকম্পা করুন। আমি আপনাকে ভিক্ষা দিতে ইচ্ছা পোষণ করি।

২৪.পরম অনুকম্পাপরায়ণ, মহাকারুণিক, মহাযশস্বী অর্থদর্শী ভগবান আমার মনের কথা অবগত হয়ে আমার আশ্রমে নেমে ছিলেন।

২৫.নামার পর সম্বুদ্ধ আমার বিছানো তৃণমাদুরে বসেছিলেন। তখন আমি হাতে বহেরা

নিয়ে বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে দান করেছিলাম।

২৬. আমার প্রাথনার্র কারণে অথদর্র্শী জিন সেগুলো খেয়েছিলেন। তাতে আমার চিত্ত প্রসন্নতায় ভরে উঠেছিল এবং আমি অথদর্র্শী জিনকে বন্দনা নিবেদন করেছিলাম।

২৭.আজ থেকে আঠার কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ফলদানেরই সুফল।

২৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

২৯.বুদ্ধের কাছে আসাটাআমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৩০.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মান বহেরাদায়কস্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [বহেরাদায়ক স্থবির অপদান চতুথসমাপ্তর্]

৫.উত্তলিপুষ্পিয়স্থবির অপদান

৩১.সদ্য নতুন পত্রপল্লব গজিয়ে ওঠাহলুদাং নিগ্রোধ বৃক্ষমূলে নীলকান্ত মণিফুল হতে নিয়ে আমি বোধিপূজা করেছিলাম।

৩২.এই ভদ্রকল্পেই আমি যেইবোধিপূজাকরেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বোধিপূজা করারই ফল।

১২.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

১৩.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

১৪.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মান উত্তলিপুষ্পিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [উত্তলিপুষ্পিয়স্থবির অপদান পঞ্চম সমাপ্ত]

৬.অম্বটকীয় স্থবির অপদান

৩৬.অভিজাত পশুরাজ সিংহের ন্যায় বেস্‌সভূ মুনি সুপুষ্পিত শালবনে প্রবেশ করে গিরিদুর্গে বসেছিলেন।

৩৭.আমি অনুত্তরপুণ্যক্ষেত্র বেস্‌সভূ মুনিকে অতীব প্রসন্নমনে নিজ হাতে অম্বাটকপুষ্প দিয়ে পূজা করেছিলেন।

৩৮.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই পুষ্পপূজাকরেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তেহয়নি। ইহা আমার বুদ্ধপূজা করারইফল।

৩৯.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৪০.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৪১.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধেরশাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানঅম্বাটকীয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [অম্বাটকীয় স্থবির অপদান ষষ্ঠ সমাপ্ত]

৭.সিংহাসনিক স্থবির অপদান

৪২.আমি সকল সত্ত্বগণের পরম হিতৈষী পদুমুত্তর ভগবানকে অতীব প্রসন্নমনে একটি সিংহাসন দান করেছিলাম।

৪৩.দেবলোকে অথবা মনুষ্যলোকে যেখানেই জন্ম নিই না কেন, সর্বত্রই আমি বিপুল ব্যাম লাভ করি। ইহা আমার সিংহাসন দানেরই ফল।

৪৪.আমার জন্য প্রতিনিয়ত বহু স্বর্ণময়, রৌপ্যময়, লৌহময় ও মণিময় পালঙ্ক উৎপন্ন হয়।

৪৫.পদুমুত্তর বুদ্ধের বোধিবৃক্ষে একটি আসস তৈরি করে আমিসব সময় উচ্চকুলে জন্মগ্রহণ করে থাকি। অহো, ধর্মের কী সুফল।

৪৬.আজ থেকে লক্ষ কল্প আগে আমি একটি সিংহাসন দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে সিংহাসন দানেরই ফল।

৪৭.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৪৮.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৪৯.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি। ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানসিংহাসনিক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [সিংহাসনিক স্থবির অপদান সপ্তম সমাপ্ত]

৮.পাদপীঠীয় স্থবির অপদান

৫০.শ্রেষ্ঠ মহাকারুণিক মুনি মহাযশস্বী সুমেধ সম্বুদ্ধ নিজে নিবৃত হয়ে বহুত্ত্বকে সংসার দুঃখ হতে মুক্ত করেছিলেন।

৫১.মহর্ষি সুমেধ ভগবানের সিংহাসনের চারপশে আমি অতীত প্রসন্নচিত্তে একটি পাদপীঠ (পা রাখার চৌকি) তৈরি করে দিয়েছিলাম।

৫২.সুবিপাকী ও সুখদায়ীকুশলকর্ম করার পর আমিপুণ্যকর্ম সংযুক্ত হয়ে তাবতিংস দেবলোকে জন্মেছিলাম।

৫৩.পুণ্যকর্ম সমন্বিত হয়ে সেখানে অবস্থানকালীন প্রতি পদক্ষেপে আমার জন্য স্বর্ণময় পীঠ (চৌকি) আবির্ভূত হতো।

৫৪.যারা ধর্মশ্রবণের সুযোগ লাভ করে তাদেরলাভই পরম লাভ। আর তারাই পরম নিবৃত বুদ্ধের পূজা করে বিপুল সুখ লাভ করে ।

৫৫.বানিজ্য করতে গিয়ে আমিও সুকর্মই করেছিলাম। বুদ্ধের জন্যে পাদপীঠ তৈরি করে দিয়ে জন্মে জন্মে আমি স্বর্ণময় পীঠ লাভ করে থাকি।

৫৬.যে কোনো কার্যোপলক্ষে যেদিকেই আমি যাই না কেন, আমার পায়ের পাতা সব সময় স্বর্ণময় পীঠেই পতিত হয়। ইহা আমার পুণ্যকর্মেরই ফল।

৫৭.আজ থেকে ত্রিশ কল্প আগে আমি যে কর্ম করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার পাদপীঠ দানেরই ফল।

৫৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৫৯.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৬০.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানপাদপীঠীয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [পাদপীঠী স্থবির অপদান অষ্টম সমাপ্ত]

৯.বেদিকারক স্থবির অপদান

৬১.পদুমুত্তর ভগবানের উত্তম বোধিপাদপে একটি বেদিতৈরি করে দিয়ে আমি আতীব প্রসন্নচিত্ত হয়েছিলাম।

৬২.এর ফলে নির্মিত-অনির্মিত ছোট-বড় বহু জিনিসপত্র অন্তরীক্ষ হতে বর্ষিত হতো। ইহা আমার বেদি দানেরই ফল।

৬৩.প্রতিপক্ষের সাথে যুদ্ধের সময় ভয়ানক কোনো দৃশ্য দেখতে পেলেও আমি কখনো ভয় পেতাম না। ইহা আমার বেদি দানেরই ফল।

৬৪.আমার সংকল্পের কথা জ্ঞাত হয়ে আমার জন্য শুভ ব্যাম একং মহার্ঘ্য শয্যা উৎপন্ন হতো। ইহা আমার বেদি দানেরই ফল।

৬৫.আজ থেকে লক্ষ কল্প আগে আমি যেই বেদি তৈরি করে দিয়েছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বেদি দানেরই ফল।

৬৬.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৬৭.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৬৮.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি। ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানবেদিকারক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [বেদিকারক স্থবির অপদান নবম সমাপ্ত]

১০.বোধিঘরদায়ক স্থবির অপদান

৬৯.আমি অতীব প্রসন্নমনে দ্বিপদশ্রেষ্ঠ সিদ্ধার্ ভগবানের জন্যে একটি বোধিঘর তৈরি করেছিলাম।

৭০.এর ফলে আমি তুষিত স্বগে জন্ম নিয়ে নত্নময় ঘরে বসবাস করেছিলাম এবং তাতে শীত, উষ্ণ অথবা প্রবল বাতাস আমার শরীরকে কষ্ট দিতে পারতো না।

৭১.আজ থেকে পঁয়ষট্টি কল্প আগে আমি চক্রবর্তী রাজা হয়েছিলাম এবং আমার জন্য বিশ্বকর্মা কাশিক নামক নগর নির্মাণ করেছিলেন।

৭২.সেই নগরটি ছিল দশ যোজন দীর্ঘ ও আট যোজন প্রস্থ। সেই নগরে কোনো কাঠ, বল্মী ও মৃত্তিকা ছিল না।

৭৩.বিশ্বকর্মার তৈরি করা মঙ্গল নামক প্রাসাদটি ছিল একযোজন দীর্ঘ ও অর্ধযোজন প্রস্থ।

৭৪.সেই প্রাসাদে চুরাশি হাজার স্বর্ণময় স্তম,্ভ মণিময় দ্বারপ্রকোষ্ঠ ও রৌপ্যময় আচ্ছাদনী ছিল।

৭৫.বিশ্বকর্মার তৈরি করা ঘরটি ছিল সম্পূর্ণ স্বর্ণময়। তাতে আমি বসবাস করেছিলাম। ইহা আমার ঘরদানেরই ফল।

৭৬.দেবমনুষ্য লোকে সর্ববিধ সম্পত্তি ভোগ করে আজ আমি পরম শান্তিপদ, অনুত্তর নির্বাণ লাভ করেছি।

৭৭.। আজ থেকে ত্রিশ হাজার কল্প আগে আমি যেই বোধিঘর তৈরি করে দান দিয়েছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ঘর দানেরই ফল।

৭৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৭৯.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৮০.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি। ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানবোধিঘরদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [বোধিঘরদায়ক স্থবির অপদান দশম সমাপ্ত]

[বিভীতক বর্গ পঁয়তাল্লিশতম সমাপ্ত]

স্মারক-গাথা

বিভীতক, কোলদায়ক, বিল্লিয়, বহেরাদায়ক, উত্তলিপুষ্পিয়, অম্বাটকীয়, সিংহাসনীয়, পাদপীঠীয়, বেদিকারক ও বোধিঘরদায়ক মোট আশিটি গাথায় এই বর্গ সমাপ্ত।