৪৮.নলমালি বর্গ

১.নলমালিয় স্থবির অপদান

১.আমি পরম পূজনীয় সুবর্ণ বর্ণ লোকনায়ক সম্বুদ্ধকে গভীর বনের মধ্য দিয়ে যেতে দেখেছিলাম।

২.আমি তখন নলখাগড়ার পুটলি নয়ে িবন হতে বের হবার সময় স্রোতোত্তীর্ণ অনাসক্ত সম্বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।

৩.আমি পরম দাক্ষিণেয়, মহারীর, সর্বলোকের প্রতি পরম অনুকম্পাকারী বুদ্ধকে অতীব প্রসন্নমনে নলখাগড়ার পুটলি দিয়ে পুজা করেছিলাম।

৪.আজ থেকে একত্রিশকল্প আগে আমি যেই নলখাগড়ার পুটলিদান করেছিলাম, সেই

থেকে একবারই আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ইহা আমার বুদ্ধপূজা করারই ফল।

৫.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৬.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৭.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মাননলমালিয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [নলমালিয় স্থবির অপদান প্রথম সমাপ্ত]

২.মণিপূজকস্থবির অপদান

৮.সর্ববিধ ধর্মে বিশেষ পারদর্শী জিন পদুমুত্তর সম্বুদ্ধ বিবেকসুখ লাভের ইচ্ছায় সুনীল আকাশমার্গ গিয়ে যাচ্ছিলেন।

৯.হিমালয়ের অনতিদূরে বিশাল একটি প্রাকৃতিক হৃদ ছিল। আর সেখানে আমার পুণ্যসমূত্ভ বিশাল ভবনটি ছিল।

১০.ভবন হতে বের হয়ে আমি ইন্দ্রশ্রেষ্ঠের ন্যায় উজ্জ্বল ও সূর্যের ন্যায় তীক্ষ্ণ লোকনায়ক বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।

১১.আমি বাগানে কোনো ফুলইদেখতে পেলাম না, যেগুলো দিয়ে লোকনায়ক বুদ্ধকে পূজা করা যায়। তারপর আমি অতীব প্রসন্নচিত্তে শাস্তাকে বন্দনা করেছিলাম।

১২.আমার মাথার মণিটি হাতে নিয়ে আমি লোকনায়ক বুদ্ধকে পূজা করেছিলাম। এই মণি পূজার দ্বারা আমার শুভ ফল হোক!

১৩.পরম পূজনীয় লোকবিদপদুমুত্তর শাস্তা অন্তরীক্ষেদাঁড়িয়ে এই গাথা ভাষণ করেছিলেন

১৪.তোমর সংকল্প পূরণ হোক! তুমি বিপুল সুখের অধিকারী হও! আর এই মণিপূজার দ্বারা মহাযশস্বী হও!

১৫.ইহা বলার পর বুদ্ধশ্রেষ্ঠ পদুমুত্তর ভগবান মন যেখানে চায় সেখানে চলেগিয়েছিলেন।

১৬.আমি দেবলোকে ষাট কল্প দেবরাজত্ব করেছিলাম, বহু শতবার রাজ চক্রবর্তী হয়েছিলাম।

১৭.দেবলোকে আমি যখন পূর্বকৃত কর্ম স্মরণ করতাম তখন আমার উজ্জল আলোকবর্তিকরূপ মণি উৎপন্ন হতো।

১৮-১৯. বৈচিত্রময় বস্ত্রধারী, পা হতে মাথা পর্যন্ত মণিকুন্তলধারী, সদাহাস্যময়ী, বিচক্ষণ, সুঢৌল নিতম্বের অধিকারী ছিয়াশি হাজার নারী নিত্য আমাকে পরিবেষ্ঠিত করে থাকত। ইহা আমার মণি পূজারই ফল।

২০.আমার জন্য স্বর্ণময়, মণিময় ও লোহিতময় দ্রব্যসামগ্র তৈরি হতো, আর আমি যখনি চাইতাম তখনি পরিধেয় বস্ত্র পেতাম।

২১.আমি যখনি যেভাবে চাইতাম ঠিক সেভাবেই আমার সংকল্প অনুযায়ী সুন্দর সুন্দর ঘরবাড়ি আর মহার্ঘ শয্যা উৎপন্ন হতো।

২২.মানুষদের জন্যপুণ্যক্ষেত্র ও সকল প্রাণির জন্য ওষুধ যারা এমনপুণ্যসম্পত্তি লাভ করে তাদের জন্য ইহা পরম লাভ।

২৩.অতীতে আমি লোকনায়ক বুদ্ধকে দেখেছিলাম। তাই আমি সুকর্ম করতেপেরেছিলাম। আজ আমি বিনিপাত অপায় হতে সম্পূর্ণ মুক্ত আর অচলপদ অমৃত নির্বাণলাভী।

২৪.আমি দেবলোকে অথবা মনুষ্যলোকে যেখানেই জন্মগ্রহণ করিনা কেন, সর্বত্রই কী দিনে কী রাতে সব সময় আলো থাকত।

২৫.সেই সণিপূজার ফলে আমি দেবমনুষ্য সম্পত্তি ভোগ করেছি। আমি জ্ঞানালোকের দেখা পেয়েছি, অচলপদ নির্বাণ লাভ করেছি।

২৬.আজ থেকে লক্ষ কল্প আগে আমি যেই মণিপূজাকরেছিলাম, সেই থেকে একবারই আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ইহা আমার মণিপূজারইফল।

২৭.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

২৮.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

২৯.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানমণিপূজকস্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [মণিপূজকস্থবির অপদান দ্বিতীয় সমাপ্ত]

৩.উক্কাসাতিক স্থবির অপদান

৩০.তখন কৌশিক নামক ভগবান (পচ্চেকবুদ্ধ) চিত্রকূট পর্বতে বসবাস করছিলেন। তিনি ছিলেন ধ্যানী, ধ্যানরত ও বিবেকাভিরত মুনি।

৩১.নারী-পরিবৃত হয়ে হিমালয়ে প্রবেশ করলে পরে আমি পূর্ণিমার পঞ্চদর্শী চাঁদের ন্যায় কৌশিক বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।

৩২.সেই সময় শত শত উল্কা হাতে নিয়ে (নারীগণ) আমি বুদ্ধকে পরিবেষ্টিত করে ছিলাম। এভাবে সাত দিন সাতরাত কাটিয়ে অষ্টম দিনে গিয়েছিলাম।

৩৩.আমি ধ্যান হতে উত্থিত সয়মূ্ভ অপরাজিত কৌশিক বুদ্ধকেপ্রসন্নমনে বন্দনা করে একবার ভিক্ষা দান করেছিলাম।

৩৪.হে দ্বিপদশ্রেষ্ঠ লোকশ্রেষ্ঠ নরোত্তম, সেই কর্মের ফলে আমি তুষিত স্বর্গে জন্মেছিলাম। ইহা আমার একবার ভিক্ষা দানেরই ফল।

৩৫.রাত-দিন আমার চারপাশে সব সময় আলোকিত থাকত এবং আমি শতযোজন আলোকিত করে অবস্থান করতাম।

৩৬.আজ থেকে পঞ্চন্ন কল্প আগে আমি চতুরন্তবিজয়ী, জম্বুদীপের অধিশ্বর চক্রবর্তী রাজা হয়েছিলাম।

৩৭.তখন আমার সুনির্মিত, বিশাল ও সমৃদ্ধ একনগর ছিল, তা ত্রিশ যোজন দীর্ঘ ও বিশ যোজন প্রস্থ।

৩৮.দশ প্রকার শব্দে ও মনোজ্ঞ সুর-তালে সদা মুখরিত শোভন নামক সেই নগরটি স্বয়ং বিশ্বকর্মাই নির্মাণ করেছিলেন।

৩৯.সেই নগরে কোনো কাঠখণ্ড ও মাটি ছিল না। সমস্ত নগরই ছিল স্বণময়। আর তা প্রতিনিয়ত চতুর্দিকে আলো ছড়াত।

৪০.বিশ্বকর্মর নির্মিত সেই নগরটি চতুর্দিকে শকু প্রাচীর পরিবেষ্ঠিত। তন্মধ্যে তিনটি ছিল মণিময় আর সামনেরটি তালপাতার উপর পুণ্ডরীক ফুলে আচ্ছাদিত এবং নানান সুগন্ধীতে ভরা দশ হাজার পুস্করিণী ছিল।

৪১.সেই নগরে পদ্ম, উৎপল ও পণ্ডরীক ফুলে আচ্ছাদিত এবং নানান সুগন্ধীতে ভরা দশ হাজার পুষ্করিণী ছিল।

৪২.আজ থেকে চুরানব্বই কল্প আগে আমিযেই উল্কাধারণ করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ইহা আমার উল্কাধারণেরই ফল।

৪৩.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৪৪.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৪৫.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানউল্কাসতিক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [উল্কাসতিক স্থবির অপদান তৃতীয়সমাপ্ত]

৪.সুমনবীজনিয়স্থবির অপদান

৪৬.আমি বিপশ্বী ভগবানের উত্তম বোধিপাদপে গিয়ে হাতে বিজনী নিয়ে বোধিবৃক্ষকে বাতাস করেছিলাম।

৪৭.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি বোধিবৃক্ষকে বাতাসকরেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বাতাস করারই ফল।

৪৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৪৯.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৫০.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানসুমনবীজনিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [সুমনবীজনিয়স্থবির অপদান চতুথসমাপ্তর্]

৫.কুল্মাসদায়কস্থবির অপদান

৫১.পিণ্ডাচারণে রত মহর্ষি বিপশ্বী ভগবানের খালি পাত্র দেখে কুল্মাসদিয়ে পাত্রটি পূর্ণ করেদিয়েছিলাম।

৫২.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই ভিক্ষা দিয়েছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার কুল্মাস দানেরইফল।

৫৩.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৫৪.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৫৫.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানকুল্মাসদায়কস্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [কুল্মাসদায়কস্থবির অপদান পঞ্চম সমাপ্ত]

৬.কুশ-অষ্টদায়ক স্থবির অপদান

৫৬.বশীভূত ব্রাহ্মণ কাশ্যপ ভগবানকে আমি অতীব প্রসন্নমনে কুশ-অষ্টক দান করেছিলাম।

৫৭.এই ভদ্রকল্পেই আমি কুশ-অষ্টক দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার কুশ-অষ্টক দানেরই ফল।

৫৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৫৯.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৬০.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মান কুশঅষ্টকদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [কুশ-অষ্টকদায়ক স্থবির অপদান ষষ্ট সমাপ্ত]

৭.গিরিপুন্নাগিয়স্থবির অপদান

৬১.তখন শোভিত নামক সয়মূ্ভ সম্বুদ্ধ চিত্রকূট পর্বতে বসবাস করেছিলেন। আমি একদিন গিরিপুন্নাগ পুষ্প হাতে নিয়েতাঁকে পূজা করেছিলাম।

৬২.আজ থেকে চুরানব্বই কল্প আগে আমিযেই, বুদ্ধপূজা করেছিলাম। , সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধপূজারইফল।

৬৩.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৬৪.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৬৫.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানগিরিপন্নগিয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [গিরিপুন্নগিয়স্থবির অপদান সপ্তম সমাপ্ত]

৮.বল্লিকারফলদায়ক স্থবির অপদান

৬৬.তখন সুমন নামক সয়মূ্ভ সম্বূদ্ধ তক্করা নামক জায়গায় বসবাস করছিলেন। আমি বল্লিকারফল হাতে নিয়ে তাঁকে দান করেছিলাম।

৬৭.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই, ফলদিয়ে বুদ্ধকেপূজা করেছিলাম। , সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ফল দানেরই ফল।

৬৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৬৯.বুদ্ধেরকাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৭০.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানবল্লিকারফলদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [বল্লিকারফলদায়ক স্থবির অপদান সপ্তম সমাপ্ত]

৯.পানধিদায়ক স্থবির অপদান

৭১.লোকশ্রেষ্ঠ, নরোত্তম, চক্ষুষ্মান অনোমদর্শী ভগবান দিবাবিহার হতে বের হয়ে এসে পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন।

৭২.আমি ও সুনির্মিত যান নিয়ে পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন সেখানে আমি পরম চারুদর্শন সম্বুদ্ধকে পদব্রজে হেঁটে যেতে দেখেছিলাম।

৭৩.তখন আমার চিত্ত প্রসন্নতায় ভরে উঠেছিল এবং সেই যানকে নিয়ে গিয়ে তাঁর পদমূলে রেখে এই কথা নিবেদন করেছিলাম।

৭৪.হে মহাবীর, সুগতেন্দ্র, বিণায়ক, এইযানে আরোহন করুন, যাতে করে সমস্ত প্রয়োজন ও আশা-আকাঙ্খা পূরণ হোক।

৭৫.লোকশ্রেষ্ঠ, নরোত্তম অনোমদর্শী ভগবান যানে আরোহন করে এই কথা বলোছিলেন :

৭৬.যে ব্যক্তি অতীব প্রসন্নমনে নিজ হাতে আমাকে একটি যান দান করেছে, এখন আমি তার ভূয়শী প্রশংসা করব। মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শ্রবণ কর।

৭৭.বুদ্ধের কথা অবগত হযে সকল দেবতারা উগগ্রচিত্ত, উৎফুল্ল ও কৃতাঞ্জলি হয়ে সমবেত হয়েছিল।

৭৮.এই ব্যক্তি যান দানের ফলে সুখীহবে। দেবলোকে জন্ম নিয়ে পঞ্চান্নবার দেবরাজত্ব করবে।

৭৯.হাজারবার রাজচক্রবর্তী হবে, আর প্রাদেসিক রাজা তো অসংখ্যবার হবে।

৮০.আজ থেকে অপরিমেয় কল্প পরে ওক্কাকুকুলে গৌতম গোত্রে এক শাস্তা পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করবেন।

৮১.তাঁর ধর্মে ধর্মৌরসজাত উত্তরাধিকারী হবে এবং অভিজ্ঞা দ্বারা সর্বাসব ক্ষয় করে সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়েই নির্বাপিত হবে।

৮২.সে দেবলোকে অথবা মনুষ্যলোকেপুণ্যবান হয়েই জন্মগ্রহণ করবে এবং দেবলোকে দেবযান আর মনুষ্যলোকে মনুষ্যযান লাভ করবে।

৮৩.সেখানে আমার জন্য সিবিকা প্রাসাদ উৎপন্ন হয়েছিল এবং সব সময় আমার জন্য সুসজ্জিতহস্তি, বাদ্যযন্ত্রসমেত রথ উৎপন্ন হয়েছিল।

৮৪.এমনকি গৃহত্যাগ করার সময়ও আমি রথ যোগে গৃহত্যাগ করেছিলাম। আর মাথার চুল কাটার সময় আমি অর্হত্ত্ব লাভ করেছিলাম।

৮৫.বাণিজ্যে নিয়োজিত হয়ে একটি যান দান করতে পারাটা আমার জন্য পরম লাভ। তার ফলেই আজ আমি পরমসুখ নির্বাণ লাভ করেছি।

৮৬.আজ থেকে অপ্রমেয় কল্প আগে আমি যেই, বুদ্ধকেযান দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার যান দানেরই ফল।

৮৭.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৮৮.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৮৯.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানপানধিদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [পানধিদায়ক স্থবির অপদান নবম সমাপ্ত]

১০.পুলিনচংক্রমিয়স্থবির অপদান

৯০.পূর্বে আমি গভীর অরন্যে এক পশুশিকারী ছিলাম। শিকারের জন্য পশু-পাখি খুঁজতে খুঁজতে আমি বুদ্ধের চংক্রমণ স্থানটির দেখা পেয়েছিলাম।

৯১.আমি স্মৃতিমান সুগতের চংক্রমণস্থানে অতীব প্রসন্নমনে কোলে করে বালি নিয়ে গিয়ে ছিটিয়ে দিয়েছিলাম।

৯২.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই, বালি ছিটিয়েছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বালি ছিটানোরই ফল।

৯৩.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৯৪.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৯৫. চারি প্রতিসম্ভিদা, অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানপুলিচংক্রমিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [পুলিনচংক্রমিয় স্থবির অপদান দশম সমাপ্ত]

[নলমালি বর্গ আটচল্লিশতম সমাপ্ত]

স্মারক-গাথা

নলমালি, মণিপূজকদ উল্কাসতিক, সুমনবীজনীয়, কল্মাসদায়ক, কুশষ্টকদায়ক, গিরিপুন্নাগিয়,

বল্লিকারফল, পানধি ও পুলিনচংক্রমিয় এই দমে মিলে মোট পঁচানব্বইটি গাথায় এই বর্গ হয়েছে সমাপ্ত।