৫২.ফলদায়ক বর্গ

১.কুরঞ্চিয় ফলদায়কস্থবির অপদান

১.অতীতে আমি এক পশুশিকারী ছিলাম। আমি শিকারে খোঁজে গহীন অরণ্যে বিচরণ করতাম। একদিন আমি সর্ববিধ ধর্মে বিশেষ পারদর্শী বিরজ বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।

২.আমি কুরঞ্চিয় ফল নিয়ে অতীব প্রসন্নমনেনিজ হাতে তাদৃশপুণ্যক্ষেত্র বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে দান করেছিলাম।

৩.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই বিপাক।

৪.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৫.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৬.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি। ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানকুরঞ্চিয়ফলদায়কস্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন।

[কুরঞ্চিয় ফলদায়কস্থবির অপদান প্রথম সমাপ্ত]

২.কপিত্থফলদায়ক স্থবির অপদান

৭.পরম পূজনীয় সুবর্ণবণসম্বুদ্ধকে রথে চড়ে যেতে দেখে আমিতাঁকে কপিত্থফল দান করেছিলাম।

৮.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই বিপাক।

৯.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

১০.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

১১.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানকপিত্থফলদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [কপিত্থফলফলদায়ক স্থবির অপদান দ্বিতীয় সমাপ্ত]

৩.কোশম্বফলিয় স্থবির অপদান

১২.রাজকীয় মুকুটের মতো শোভামান দেবাতিদেব নরশ্রেষ্ঠকেরথে চড়ে যেতে দেখে তখন আমি কোসম্বফল দান করেছিলাম।

১৩.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে ফলদানেরই সুফল।

১৪.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

১৫.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

১৬.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানকোসম্বফলিয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [কোসম্বফলিয় স্থবির অপদান তৃতীয়সমাপ্ত]

৪.কেতকপুষ্পিয়স্থবির অপদান

১৭.তখন পুরুষোত্তম ভগবান বিনতা নদীর তীরে বসবাস করছিলেন। একদিন আমি সুসমাহিত, একাগ্রচিত্ত, বিরজ বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।

১৮.তখন আমি অতীব প্রসন্নমনে মধুগন্ধী কেতকপুষ্প দিয়ে বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে পূজা করেছিলাম।

১৯.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই ভগবান তথাগতকে পুষ্পপূজা করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধপূজারইফল।

২০.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

২১.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

২২.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানকেতকপুষ্পিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [কেতকপুষ্পিয়স্থবির অপদান চতুথসমাপ্তর্]

৫.নাগপুষ্পিয়স্থবির অপদান

২৩.পরম পূজনীয় সুবর্ণবর্ণ সম্বুদ্ধকে রথে চড়ে যেতে দেখে আমিতাঁকে নাগ পুষ্প দিয়ে পূজা করেছিলাম।

২৪.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই ভগবান তথাগতকে পুষ্পপূজা করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধপূজারই ফল।

২৫.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

২৬.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

২৭.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মাননাগপুষ্পিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [নাগপুষ্পিয়স্থবির অপদান পঞ্চম সমাপ্ত]

৬.অর্জুনপুষ্পিয়স্থবির অপদান

২৮.তখন আমি চন্দ্রভাগা নদীর তীরে এক কিন্নরী ছিলাম। একদিন আমি সয়সমূ্ভ অপরাজিত বিরজবুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।

২৯.আমি অর্জুনপুষ্প নিয়ে প্রসন্নমনে কৃতাঞ্জলি হয়ে সয়মক্ভে পূজাকরেছিলাম।

৩০.সেই সুকৃত কর্মের ফলে ও প্রার্থনা অনুযায়ী কিন্নরদেহ ত্যাগ করে আমি তাবতিংস দেবলোকে জন্ম নিয়েছিলাম।

৩১.সেখানে আমি ছত্রিশবার দেবেন্দ্র হয়ে দেবরাজত্ব করেছিলাম। আমি দশবার রাজচক্রবর্তী রাজা হয়েছিলাম।

৩২.আর প্রাদেসিক রাজা তো অসংখ্যবার হয়েছিলাম। অহো, ইহা আমার সুক্ষেত্রে বপন করা বীজেরই ফল!

৩৩.অতীতে পুণ্যথাকায় আমি অনাগারিক প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেছিলাম। শাক্যপুত্রের শাসনে আজ আমি অত্যন্ত পূজনীয়।

৩৪.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৩৫.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৩৬.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানঅর্জনপুষ্পিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [অর্জনপুষ্পিয়স্থবির অপদান ষষ্ঠ সমাপ্ত]

৭.কুটজপুষ্পিয়স্থবির অপদান

৩৭.হিমালয়ের অদূরে বসল নামক এক পর্বত ছিল। সেই পর্বতের মধ্যে সুদর্শন বুদ্ধ বসবাস করছিলেন।

৩৮.একদিন হেমবর্ণ পুষ্প হাতে নিয়ে আকাশপথে যাচ্ছিলাম। সেখানে আমি স্রোতোত্তীর্ণ, অনাসক্ত সমুদ্ধক্ভে দেখতে পেয়েছিলাম।

৩৯.তখন আমি কুটজ পুষ্প হাতে নিয়ে নতশিরে কৃতাঞ্জলি হয়ে সয়মূ্ভ সহর্ষি বুদ্ধকে দান করেছিলাম।

৪০.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই তথাগতকে পুষ্পপূজা করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধকে পুষ্পপূজারই ফল।

৪১.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৪২.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৪৩.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানকুটজপুষ্পিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [কুটজপুষ্পিয়স্থবির অপদান সপ্তম সমাপ্ত]

৮.ঘোষসংজ্ঞক স্থবির অপদান

৪৪.বহু অতীত জন্ম আগে আমি গহীন অরণ্যে এক পশুশিকারী ছিলাম। একদিন আমি দেবসংঘ পরিবৃত বিরজ বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।

৪৫.তখন তিনি চতুরার্যসত্য প্রকাশ করে অমৃতপদ দেশনা করছিলেন। লোকবন্ধু শিখী বুদ্ধের মধুর ধর্মকথা আমি শুনতে পেয়েছিলাম।

৪৬.আমি অদ্বিতয়ি পদ্গল ভগবানের মধুর ধর্মকথায় অতীব প্রসন্নচিত্ত হয়েছিলাম। তাতে প্রসন্নচিত্ত হয়ে আমি এই দুস্তর ভব অতিক্রম করেছিলাম।

৪৭.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই সংজ্ঞা লাভ করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ঘোষসংজ্ঞা লাভেরই ফল।

৪৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৪৯.বুদ্ধেরকাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৫০.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানঘোষসংজ্ঞক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [ঘোষসংজ্ঞক স্থবির অপদান অষ্টম সমাপ্ত]

৯.সর্বফলদায়ক স্থবির অপদান

৫১.আমি তখন বরুণ নামক মন্ত্রধর ব্রাহ্মণ ছিলাম। আমার দশটি পুত্রকে ত্যাগ করে বনে প্রবেশ করেছিলাম।

৫২.সুবিভক্ত, মনোরম একটি আশ্রম তৈরি করে ও একটি পণশালা তৈরি করে আমি গহীন বনে বসবাস করছিলাম।

৫৩.পরম পূজনীয় লোকবিদ পদুমুত্তর বুদ্ধ আমাকে উদ্ধারেরানসেম আমার আশ্রমে এসছিলেন।

৫৪.বুদ্ধের আগমনে ও অমিতপুণ্যপ্রভাবে সমগ্র বনসণ্ড বিপুল আলোয় আলোকিত হয়েছিল। তখন গহীন বন যেন জ্বল জ্বল করছিল।

৫৫.বুদ্ধশ্রেষ্ঠের এমন অতিপ্রাকৃত প্রভাব দেখে আমি একটি পাত্রে করে ফল দিয়ে পূজা করেছিলাম।

৫৬.সম্বদ্ধের কাছে গিয়ে গোটা ঝুড়িটিসহ দান করেছিলাম। বুদ্ধ আমার প্রতি অশেষ অনুকম্পাবশত এই কথা বলেছিলেন :

৫৭.যষ্ঠিতে ভর দিয়ে আমার পেছন পেছন আস। নিজ হাতে সংঘকে পরিভোগ করাও। তোমার বহু পুণ্যহবে।

৫৮.তখন আমি সেই ঝুড়িটি নিয়ে ভিক্ষুসংঘকে দান করেছিলাম। তাতে আমি অতীব প্রসন্নচিত্ত হয়ে আমি তুষিত স্বর্গে উৎপন্ন হয়েছিলাম।

৫৯.সেখানে আমি পুণ্যপ্রভাবে দিব্যে নাচ, গান, বাদ্যবাজানার দ্বারা নিয়ত সুখ ভোগ করেছিলাম।

৬০.আমি দেবলোকে অথবা মনুষ্যলোকে যেখানেই জন্ম গ্রহণ করিনা কেন, সর্বত্রই আমার ভোগসম্পত্তির কোনো কমতি ছিল না। ইহা আমার ফলদানেরই ফল।

৬১.বুদ্ধকে ফর দান করেআমি সসগরা পূথিবীর চারটি দ্বীপ শাসন করেছিলাম।

৬২.আকাশে যত পাখি উড়ে থাকে, তারাও আমার বশে আসত। ইহা আমার ফল দানেরই ফল।

৬৩.সমগ্রবনভূমি জুড়ে যত যক্ষ, ভূত, রাক্ষস, কমাণ্ড, গরুল আছে, তারা সবাই আমার পরিচর্যা করত।

৬৪.মৌমাছি, ডাঁশ, মশক - তারাও আমার বশে আসত। ইহা আমার বুদ্ধকেফল দানেরই ফল।

৬৫.ভীষণ শত্তিশালী সুপর্ণ নামক শকুন পাখিরাও আমার আশ্রয়ে চলে আসত। ইহা আমার ফল দানেরই ফল।

৬৬.ঋদ্ধিমান মহাযশস্বী দীর্ঘায়ুসম্পন্ন নাগেরাও আমার বশে আসত। ইহা আমার ফলদানেরই ফল।

৬৭.সিংহ, বাঘ, নেক্রেবাঘ, ভালুক- সবাই আমার বশে আসত। ইহা আমার ফলদানেরই ফল।

৬৮.আকাশবাসী, ভূমিবাসী, গৃহ-নক্ষত্রবাসী সকলেই আমার আশ্রয়ে আসত। ইহা আমার ফলদানেরই ফল।

৬৯.সুদুর্শন, সুণিপুন, গমীর্ভ ও সুপ্রকাশিতকে স্পর্শ করেআমি এখন অবস্থান করছি।

৭০.আমি অষ্ট বিমোক্ষ, স্পর্শ করে সম্পূর্ণ অনাসক্ত, বীর্যবান ও প্রজ্ঞাবান হয়ে অবস্থান করছি। ইহা আমার ফল দানেরই ফল।

৭১.মার্গফললাভী যেসব ক্ষীণদোষ, মহাযশস্বী বুদ্ধপুত্রগণ আছেন আমি তাদের অন্যতম। ইহা আমার ফলদানেরই ফল।

৭২.পূর্বকৃতপুণ্যপ্রভাবে অভিজ্ঞার পূর্ণতা সাধন করে ও সর্বাসব ক্ষয় করে সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়েই আমি অবস্থান করছি।

৭৩.যেসব বুদ্ধপুত্র ত্রিবিদ্যালাভী, ঋদ্ধিমান, মহযশস্বী, দিব্যশ্রোত্রলাভী আছেন আমি তাদের একজন।

৭৪.আজ থেকে লক্ষ কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ফলদানেরই সুফল।

৭৫.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৭৬.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৭৭.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানসর্বফলদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [সর্বফলদায়ক স্থবির অপদান নবম সমাপ্ত]

১০.পদুমধারিক স্থবির অপদান

৭৮.হিমালয়ের অদূরে রোমস নামক এক পর্বত ছিল। সেই পর্বতের খোলা আকাশের নিচে তখন সমব্ভ নামক বুদ্ধ বসবাস করছিলেন।

৭৯.আমি আমার ভবন হতে বের হয়ে তার উপর পদ্ম ধারণ করেছিলাম। একদিন যাবৎ ধারণ করার পর আমি পুনরায় নিজ ভবনে ফিরে এসেছিলাম।

৮০.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই বুদ্ধপূজা করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধপূজারইসুফল।

৮১.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।

৮২.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

৮৩.চারি প্রতিসমিদা্ভ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।

ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানপদুমধারিকস্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [পদুমধারিকস্থবির অপদান দশম সমাপ্ত]

[ফলদায়ক বর্গ বায়ান্নতম সমাপ্ত]

স্মারক-গাথা

কুরঞ্চিয়, কপিত্থফল, কোসম্ব, কেতক, নাগপুষ্প, অর্জুন, কুটজি, ঘোষকসংজ্ঞক, সর্বফলদায়ক স্থবির ও পদুমধারিক এই দশে মিলে সর্বমোট তিরাশিটি গাথায় এই বর্গ সমাপ্ত।