১.একাবিহারিক স্থবির অপদান
১.এই ভদ্র কল্পে ব্রহ্মবন্ধু মহাযশস্বী (বুদ্ধ) কাশ্যপ গোত্রে জন্মেছিলেন।
২-৩. তিনি ছিলেন নিষ্প্রপঞ্চ, নিরালম্বন, আকাশসম মনের অধিকারী, শূন্যতাবহুল, নিয়ত অনিমিত্তরত, অসঙ্গচিত্ত, ক্লেশমুক্ত, কুলসংর্সগবিরাগী, মহাকারুনিক বীর ও বিনয়োপায় বিশারদ।
৪.তিনি পরকৃত্য সম্পাদনে অতিউৎসাহী, সদেবলোককে বিনয়নকারী, নির্বাণগমন মার্গপ্রদর্শক ও গতিপঙ্ক বিশোধনকারী।
৫.অমৃতের পরম আস্বাদলাভী, জরা-মৃত্যু নিবারণকারী, লোকতারকা (বুদ্ধ) মহাপরিষদের মধ্যে উপবিষ্ট ছিলেন।
৬.সুমধুর কোকিলকন্ঠী, ব্রহ্মনির্ঘোষ নাথ তথাগত সংসার দুঃখে জর্জরিত সত্ত্বগণকে মহাদুর্গতির খাদ হতে উদ্ধারকারী।
৭.একদিন লোকনায়ক বুদ্ধবিরজধর্ম দেশনা করার সময় জ্ঞানদৃষ্টিতে আমাকে দেখতে পেলেন। তাঁর ধর্মকথা শুনেই আমি অনাগারিক প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেছিলাম।
৮.প্রব্রজ্যা গ্রহণের পর আমি জিনশাসনের কথা ভাবতে ভাবতে একাকী রমনীয় একবনে সংসর্গপীড়িত হয়ে বসবাস করেছিলাম।
৯.আমি এখন সৎকায়বিরাগী, হেতুভূত, মানসিক কলুষতাত্যাগী ও সংসর্গভয়দশী।
১০.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
১১.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
১২.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মান একবিহারিক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [একবিহারিক স্থবির অপদান প্রথম সমাপ্ত]
২.একশঙ্খীয় স্থবির অপদান
১৩.বিপশ্বী ভগবানের একটি মহাবোধিবৃক্ষ ছিল। বহুমানুষ তখন সমাগত হয়ে সেই উত্তম বোধিবৃক্ষকে পূজা করতেন।
১৪.তখন আমি ভেবেছিলাম, ইনি নিশ্চয় হেলাফেলায় করারমতো কিছু নন। ইনি নিশ্চিতভাবে বুদ্ধশ্রেষ্ঠই হবেন। শাস্তার ঈদৃশ বোধিবৃক্ষ অতীব পূজনীয়।
১৫.তার পর থেকে আমি হাতে শঙ্খ নিয়ে প্রত্যহ বাজিয়ে বাজিয়ে বোধিবৃক্ষকে পূজা করেছিলাম এবং বন্দনা করেছিলাম।
১৬.মৃত্যুর ঠিক পূর্বমুহুর্তে আমার কৃতকর্ম আমাকে দেবলোকে নিয়ে গিয়েছিল। আমার নিথর দেহ ভূলন্ঠিত। আমি দেবলোকে রমিত হয়েছিলাম।
১৭.প্রমোদদান কারীরা ষাট হাজার তূর্য নিয়েনিত্য বাজিয়ে বাজিয়ে আমাকে সেবা করত। ইহা আমার বুদ্ধপূজা করারই ফল।
১৮.আজ থেকে একাত্তর কল্প আগে আমি চতুরন্তবিজেতা, জম্বুদীপের অধিশ্বর সুদর্শন রাজা হয়েছিলাম।
১৯.তখন আমাকে শত শত তূর্যপ্রতিনিয়ত পরিবেষ্টিত করে থাকত। এভাবেই আমি স্বকৃত কর্ম ভোগ করেছিলাম। ইহা আমার সেবা করারই ফল।
২০.দেবলোকে অথবা মনুষ্যলোকে আমি যেখানেই জনগ্রহণ্ম করি না কেন, এমনকি মাতৃগর্ভে থাকাকালেও নিত্য ভেরি বাজানো হতো।
২১.সম্বুদ্ধকে সেবা করার পর ও দেবমনুষ্য উভয় সম্পত্তি ভোগকরার পর আজ আমি পরম সুখ, অচলপদ, অমৃত নির্বাণ লাভ করেছি।
২২.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই কর্ম করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধপূজা করারইফল।
২৩.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
২৪.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
২৫.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানএকশঙ্খীয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [একশঙ্খীয় স্থবির অপদান দ্বিতীয় সমাপ্ত]
৩.পাটিহীরসংজ্ঞক স্থবির অপদান
২৬.পরম পূজনীয় জিন পদুমুত্তর সম্বুদ্ধ তখন লাখো অর্হৎ পরিবেষ্টিত হয়ে নগরে প্রবেশ করেছিলেন।
২৭.উপশান্ত বুদ্ধ যখন নগরে প্রবেশ করছিলেন, তখন রত্নাবলী আকাশে জ্বল জ্বল করছিল, বজ্র নির্ঘোষ হচ্ছিল।
২৮.বুদ্ধ যখন নগরে প্রবেশ করছিলেন, তখন বুদ্ধের প্রভাবে আপনাতেই বজ্রঘর্ষিত ভেরি ও বীণা বেজে উঠেছিল।
২৯.আমি পদুমুত্তর মহামুনি বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে প্রণাম নিবেদন ।করবতার ঋদ্ধিপ্রতিহার্য দেখে আমি তাতে প্রসন্নচিত্ত হয়েছিলাম।
৩০.কী আশ্চর্য বুদ্ধ! কী আশ্চর্য ধর্ম! কী আশ্চর্য আমাদের শাস্তাসম্পদ! অচেতন জড়বস্তু তূর্য পর্যন্ত আপনাতেইবেজে উঠছে!
৩১.আজ থেকে লক্ষকল্প আগে আমি যেই সংজ্ঞা লাভ করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার বুদ্ধসংজ্ঞা লাভেরই ফল।
৩২.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
৩৩.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
৩৪.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানপাটিহীরসংজ্ঞক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [পাটিহীরসংজ্ঞক স্থবির অপদান তৃতীয়সমাপ্ত]
৪.জ্ঞানস্তুতিকারী স্থবির অপদান
৩৫.আমি সোনারঙা ফুলের মতো উজ্জ্বল, দীপবৃক্ষের মতো জ্যোর্তিময় ও কাঞ্চনের ন্যায় সমুজ্জ্বলদ্বিপতোত্তম ভগবান বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।
৩৬.জলপাত্র একপাশে রেখে, বল্কবস্ত্র ভাঁজ করে, পরিধেয় অজিন বস্ত্রকে একাংশ করে আমি বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে ভূয়শী প্রশংসা করেছিলাম।
৩৭.তমঃঅন্ধকারে আচ্ছন্ন, মোহজালে আবদ্ধ সত্ত্বগণকে জ্ঞানালোক প্রদর্শন করে হে মহামুনি, আপনিই সংসারস্রোতোত্তীর্ণ।
৩৮.আপনিই এই দুঃখতাপদগ্ধ সত্ত্বগণকে উদ্ধার করেছেন। আপনিই পরিপূর্ণঅনুত্তর সম্বুদ্ধ। এই বিশ্বচরাচরে আপনার জ্ঞানের কোন তুলনা নেই।
৩৯.সেই জ্ঞানের কারণেই আপনি সর্বজ্ঞ। তাই আপনাকে ‘বুদ্ধ’ বলা হয়। আমি সে মহাবীর, সর্বজ্ঞকে বন্দনা নিবেদন করছি।
৪০.আজ থেকে লক্ষকল্প আগে আমি বুদ্ধশ্রেষ্ঠকে ভূয়শী প্রশংসা করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার জ্ঞানস্তুতিরই ফল।
৪১.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
৪২.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
৪৩.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মান জ্ঞানস্তুতিকারীস্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [জ্ঞানস্তুতিকারী স্থবির অপদান চতুথসমাপ্তর্]
৫.উচ্ছুখণ্ডিকস্থবির অপদান
৪৪.বন্ধুমতি নগরে আমি এক দ্বারক্ষক ছিলাম। একদিন আমি সর্ববিধ ধর্মে বিশেষ পারদর্শী বিরজ বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।
৪৫.আমি অতীব প্রসন্নমনে মহর্ষি বুদ্ধশ্রেষ্ঠ বিপশ্বী ভগবানকে এক খণ্ড আঁখ দান করেছিলাম।
৪৬.আজ থেকে একানব্বই কল্প আগে আমি যেই আঁখ দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার এক খণ্ড আঁখ দানেরই ফল।
৪৭.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
৪৮.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
৪৯.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মান উচ্ছুখণ্ডিক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [উচ্ছুখণ্ডিক স্থবির অপদান পঞ্চম সমাপ্ত]
৬.কলম্বদায়ক স্থবির অপদান
৫০.রোমসো নামক এক পচ্চেক সম্বুদ্ধ এক পর্বতে বসবাস করছিলেন। তখন তাঁকে নিজ হতে কলম্ব দান করেছিলাম।
৫১.আজ থেকে চুরানব্বই কল্প আগে আমি যেইফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার কলম্ব দানেরই ফল।
৫২.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
৫৩.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
৫৪.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানকলম্বদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন।
[কলম্বদায়ক স্থবির অপদান ষষ্ঠ সমাপ্ত]
৭.অম্বাটকদায়ক স্থবির অপদান
৫৫.একদিন আমি গভীর অরন্যে অপরাজিত সয়মূ্ভ বুদ্ধকে দেখে আমড়া ফল হতে নিয়ে তাঁকে দান করেছিলাম।
৫৬.আজ থেকে একত্রিশ কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ফল দানেরই সুফল।
৫৭.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
৫৮.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
৫৯.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানঅম্বাটকদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [অম্বাটকদায়ক স্থবির অপদান সপ্তম সমাপ্ত]
৮.হরীতকীদায়ক স্থবির অপদান
৬০.হরীতকী, আমলকী, আম, জাম, কলা, বহেরা, বিল্বফল প্রভৃতি আমি নিজেই সংগ্রহ করেছিলাম।
৬১.একদিন আমি গিরিখাদে ধ্যানী, ধ্যানরত মুনি ও ভীষণভাবে রোগপীড়িত অদ্বিতীয় মহামণিকে দেখতে পেয়েছিলাম।
৬২.আমি তখন হরিতকি নিয়ে সয়সমূ্ভ বুদ্ধকে দান করেছিলাম। সেই হরীতকী খাওয়া মাত্রই তৎক্ষণাৎ তাঁর ব্যাধি উপশম হয়েছিল।
৬৩.আমার সেই ভৈষজ্য খেয়ে নিরোগ সুস্থ হয়ে সদ্যরোগমুক্ত বুদ্ধ আশাকে এই বলে আর্শীবাদ করেছিলেন।
৬৪.দেবলোকে অথবা মনুষ্যলোকে যেখানেই জন্মগ্রহণ কর না কেন, সর্বত্রই তুমি সুখী হও। ব্যাধি তোমাকে কখনো পীড়িত না করুক।
৬৫.ইহা বলার পর অপরাজিত সয়মূ,্ভ ধীরসম্বুদ্ধ হংসরাজের ন্যায় আকাশ মার্গ দিয়ে উড়ে চলে গিয়েছিলন।
৬৬.মহর্ষি সয়মূক্ভে যেদিন আমি হরীতকী দান করেছিলামসেই থেকে আজ অবধি ব্যাধি আমাকে কখনো আক্রান্ত করেনি।
৬৭.এই ভবসংসারে এই আমার শেষ জন্ম। ত্রিবিদ্যা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
৬৮.আজ থেকে চুরানব্বইকল্প আগে আমি যেই ভৈষজ্য দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ভৈষজ্য দানেরই ফল।
৬৯.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
৭০.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
৭১.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মানহরীতকীদায়ক স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [হরীতকীদায়ক স্থবির অপদান অষ্টম সমাপ্ত]
৯.অম্বপিণ্ডিয় স্থবির অপদান
৭২.তখন আমি ঈষাদন্ত মস্তমড় এক হস্তিরাজ ছিলাম। গভীর অরন্যে বিচরণ করতে করতে একদিন আমি লোকনায়ক বুদ্ধকে দেখতে পেয়েছিলাম।
৭৩.আমি কয়েকটি আম হাতে নিয়ে শাস্তাকে দান করেছিলাম। মহাবীর লোকনায়ক সিদ্ধার্থ ভগবান সেগুলো গ্রহণ করেছিলেন।
৭৪.আমার বিশেষ প্রার্থনায় সির্দ্ধাথ জিন সেগুলো গ্রহণ করে আমার সামনেই খেয়েছিলেন। তাতে আমি প্রসন্নচিত্ত হয়ে তুষিত স্বর্গে জন্মেছিলাম।
৭৫.সেখান থেকে চ্যুত হয়ে আমি চক্রবর্তী রাজা হয়েছিলাম। এভাবেই আমি দেবমনুষ্য সম্পত্তি ভোগ করেছিলাম।
৭৬.ভাবনা নিরত হয়ে আজ আমি সম্পূর্ণ উপশান্ত ও নিরূপধি। অভিজ্ঞা দ্বারা সর্বাসব ক্ষয় করে সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়েই অবস্থান করছি।
৭৭.আজ থেকে চুরানব্বইকল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার ফল দানেরই সুফল।
৭৮.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
৭৯.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
৮০.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মান অম্বপিণ্ডিয় স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [অম্বপিণ্ডিয় স্থবির অপদান নবম সমাপ্ত]
১০. অম্বফলিয় স্থবির অপদান
৮১-৮২. পিণ্ডারে বিচরণরত মহান যশস্বী, লোকশ্রেষ্ঠ, দক্ষিণার যোগ্য, বীর পদুমুত্তর বুদ্ধকে আমি অগ্রফল হাতে নিয়ে অতীব প্রসন্নমনে দান করেছিলাম।
৮৩.হে দ্বিপদেন্দ্র লোকশ্রেষ্ঠ নরোত্তম, সেই কর্মের প্রভাবেই আজ আমি সমস্ত জয়-পরাজয় ত্যাগ করে অচল স্থান নির্বাণ লাভ করেছি।
৮৪.। আজ থেকে লক্ষ কল্প আগে আমি যেই ফল দান করেছিলাম, সেই থেকে একবারও আমাকে অপায় দুর্গতিতে পড়তে হয়নি। ইহা আমার অগ্রফল দানেরই সুফল।
৮৫.আমার সমস্ত ক্লেশ দগ্ধ হয়েছে, আমার সমস্ত জন্ম বিধ্বংস হয়েছে এবং নাগের ন্যায় সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে আমি সম্পূর্ণ অনাসক্ত হয়ে অবস্থান করছি।
৮৬.বুদ্ধের কাছে আসাটা আমার অতীব শুভপ্রদ হয়েছে। ত্রিবিদ্যা লাভ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
৮৭.চারি প্রতিসম্ভিদা অষ্ট বিমোক্ষ ও ষড়াভিজ্ঞা সাক্ষাৎ করে আমি বুদ্ধের শাসনে কৃতকার্য হয়েছি।
ঠিক এভাবেই আয়ুষ্মান অম্বফলিয়স্থবির এই গাথাগুলো ভাষণ করেছিলেন। [অম্বফলিয় স্থবির অপদান দশম সমাপ্ত]
[একবিহারী বর্গ চুয়াল্লিমতম সমাপ্ত]
স্মারক-গাথা
স্থবির একবিহারী, একশঙ্খীয়, পাটিহীসংজ্ঞক, জ্ঞানস্তুতিকারী, উচ্ছুখণ্ডিক, কলম্বদায়ক, অম্বাটক, হরীতকী, অম্বপিণ্ডিয় ও অম্বফলিয় স্থবির এই দশে মিলে মোট সাতশিটি গাথায় এই বর্গ হয়েছে সমাপ্ত।