সেই ভগবান অরহত সম্যক সম্বদ্ধকে নমস্কার।
অঙ্গুত্তর-নিকায় ২য় খন্ড
১. প্রথম পঞ্চাশক
১. অনুবুদ্ধসুত্তং - সম্যকরূপে জ্ঞাত সূত্র
১. আমি এরূপ শুনেছি- একসময় ভগবান বৃজিদের ভণ্ডগ্রামে অবস্থান করছিলেন। তথায় ভগবান ভিক্ষুগণকে “হে ভিক্ষুগণ” বলে আহ্বান করলেন। “হ্যাঁ ভদন্ত” বলে ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর প্রদান করলেন। ভগবান এরূপ বললেন-
“হে ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে অনুপলব্ধি এবং অজ্ঞতার কারণে আমাকে এবং তোমাদেরকে এসংসারে সুদীর্ঘকাল ভব হতে ভবান্তরে নানা যোনিতে জন্মগ্রহণ করতে হয়েছে। সেই চার ধর্ম কি কি?
ভিক্ষুগণ! আর্যশীলে অনুপলব্ধি এবং অজ্ঞতার কারণে আমাকে এবং তোমাদেরকে এসংসারে সুদীর্ঘকাল ভব হতে ভবান্তরে নানা যোনিতে জন্মগ্রহণ করতে হয়েছে। আর্য সমাধিতে অনুপলব্ধি এবং অজ্ঞতার কারণে আমাকে এবং তোমাদেরকে এসংসারে সুদীর্ঘকাল ভব হতে ভবান্তরে নানা যোনিতে জন্ম গ্রহণ করতে হয়েছে। আর্য প্রজ্ঞায় অনুপলব্ধি এবং অজ্ঞতার কারণে আমাকে এবং তোমাদেরকে এসংসারে সুদীর্ঘকাল ভব হতে ভবান্তরে নানা যোনিতে জন্মগ্রহণ করতে হয়েছে। আর্য বিমুক্তিতে অনুপলব্ধি এবং অজ্ঞতার কারণে আমাকে এবং তোমাদেরকে এসংসারে সুদীর্ঘকাল ভব হতে ভবান্তরে নানা যোনিতে জন্মগ্রহণ করতে হয়েছে।
ভিক্ষুগণ! এআর্য শীল, আর্য সমাধি, আর্য প্রজ্ঞা এবং আর্য বিমুক্তি সম্যকরূপে জ্ঞাত, উপলব্ধ হলে ভব তৃষ্ণা সমূলে উৎপাটিত হয়, পুনর্জন্মের আকাঙক্ষা ক্ষীণ হয় এবং পুনর্জন্ম নিরুদ্ধ হয়।”
ভগবান এমন বললেন। অতঃপর সুগত গাথায় এরূপ বললেন-
“শীল, সমাধি, প্রজ্ঞায় বিমুক্তি শ্রেষ্ঠেতে,
যশস্বী গৌতম দ্বারা ধর্ম অধিগমে।
ধর্মদানে ভিক্ষুগণে বুদ্ধ অভিজ্ঞায়,
চক্ষুষ্মান দুঃখান্তকারী নৈর্বাণিক শাস্তায়।”
(প্রথম সূত্র)
২. পপতিতসুত্তং - প্রপতিত সূত্র
২. “হে ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে অসমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে প্রপতিত’ (বিশেষভাবে পতন) বলে ব্যক্ত হয়। সেই চার ধর্ম কি কি? যথা- আর্য শীলে অসমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে প্রপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়। আর্য সমাধিতে অসমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে প্রপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়। আর্য প্রজ্ঞায় অসমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে প্রপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়। আর্য বিমুক্তিতে অসমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে প্রপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়।
ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে সমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে অপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- আর্য শীলে সমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে অপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়। আর্য সমাধিতে সমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে অপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়। আর্য প্রজ্ঞায় সমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে অপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়। আর্য বিমুক্তিতে সমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে অপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়।
ভিক্ষুগণ! এই চার ধর্মে সমন্বিত হলে ‘এধর্ম বিনয় হতে অপতিত’ বলে ব্যক্ত হয়।”
“লোভ যদি হয় পুণরাগত চ্যুত পতিত হয় সেজন,
সুখ অনুগত হয় কিসে, রমণীয় নয় যেজন?”
(দ্বিতীয় সূত্র)
৩. পঠম খতসুত্তং - ক্ষত সূত্র (প্রথম)
২. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত হয়ে মূর্খ, অনভিজ্ঞ, অসৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পাপের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট নিন্দিত ও বর্জিত হয়। সেই চার প্রকার ধর্ম কি কি? যথা- উত্তমরূপে না জেনে এবং সম্যক অনুসন্ধান না করে নিন্দণীয়ের গুণ বর্ণনা করে। উত্তমরূপে না জেনে এবং সম্যক অনুসন্ধান না করে প্রশংসণীয়ের অগুণ বর্ণনা করে। উত্তমরূপে না জেনে এবং সম্যক অনুসন্ধান না করে নিরানন্দ বিষয়ে আনন্দ উৎপন্ন করে। উত্তমরূপে না জেনে এবং সম্যক অনুসন্ধান না করে আনন্দ বিষয়ে নিরানন্দ উৎপন্ন করে। ভিক্ষুগণ! এ’চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত হয়ে মূর্খ, অনভিজ্ঞ, অসৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পাপের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট নিন্দিত ও বর্জিত হয়।
“হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত হয়ে পণ্ডিত, সুশিক্ষিত, সৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত না করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পুণ্যের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট প্রংশসিত ও আদরনীয় হয়। সেই চার প্রকার ধর্ম কি কি? যথা- উত্তমরূপে জেনে এবং সম্যক অনুসন্ধান করে নিন্দণীয়ের অগুণ বর্ণনা করে। উত্তমরূপে জেনে এবং সম্যক অনুসন্ধান করে প্রশংসণীয়ের গুণ বর্ণনা করে। উত্তমরূপে জেনে এবং সম্যক অনুসন্ধান করে নিরানন্দ বিষয়ে নিরানন্দ উৎপন্ন করে। উত্তমরূপে জেনে এবং সম্যক অনুসন্ধান করে আনন্দ বিষয়ে আনন্দ উৎপন্ন করে।
ভিক্ষুগণ! এ’চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত পণ্ডিত, সুশিক্ষিত, সৎপুরুষ নিজের অক্ষত, অবিনষ্ট রক্ষা করে; পণ্ডিতগণের কাছে নিষ্পাপ, অনিন্দিত বলে পরিগণিত হয়; এবং বহু পুণ্য উৎপন্ন করে।”
“নিন্দিত বিষয়ে যেজন করে প্রশংসা স্তুতি,
প্রশংসনীয় তার কাছে নিন্দনীয় অতি।
পাপ সংগ্রহে যেন, যথা ইচ্ছা বলে,
সুখ হয় পরাহত সেই পাপের ফলে।
পাশা খেলায় কেহ যদি ধনহারা হন,
অল্পমাত্র পাপ তাহা জান ভিক্ষুগণ।
করিলে সুগতের প্রতি খারাপ ধারণা,
গুরুতর পাপ হয়, দুর্গতি তাড়না।
শত-সহস্র ছত্রিশ, পঞ্চাশ অব্বুদে,
জন্মে তথায় আর্য নিন্দায়, বাক্য-মনে। ”
(তৃতীয় সূত্র)
৪. দুতিযখতসুত্তং - ক্ষত সূত্র (দ্বিতীয়)
৪. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার মিথ্যায় নিমজ্জিত মূর্খ, অনভিজ্ঞ, অসৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পাপের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট নিন্দিত ও বর্জিত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- মাতার প্রতি মিথ্যায় নিমজ্জিত মূর্খ, অনভিজ্ঞ, অসৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পাপের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট নিন্দিত ও বর্জিত হয়। পিতার প্রতি মিথ্যায় নিমজ্জিত মূর্খ, অনভিজ্ঞ, অসৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পাপের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট নিন্দিত ও বর্জিত হয়। তথাগতের প্রতি মিথ্যায় নিমজ্জিত মূর্খ, অনভিজ্ঞ, অসৎপুরুষ নিক্ষেত-বিক্ষত করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পাপের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট নিন্দিত ও বর্জিত হয়। তথাগত শ্রাবকের প্রতি মিথ্যায় নিমজ্জিত মূর্খ, অনভিজ্ঞ, অসৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পাপের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট নিন্দিত ও বর্জিত হয়।
ভিক্ষুগণ! এচার প্রকার মিথ্যায় নিমজ্জিত মূর্খ, অনভিজ্ঞ, অসৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পাপের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট নিন্দিত ও বর্জিত হয়।
“হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার সত্যে নিমজ্জিত পণ্ডিত, সুশিক্ষিত, সৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত না করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পুণের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট প্রংশসিত ও আদরনীয় হয়।
সেই চার প্রকার কি কি? যথা- মাতার প্রতি সত্যে নিমজ্জিত পণ্ডিত, সুশিক্ষিত, সৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত না করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পুণের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট প্রংশসিত ও আদরনীয় হয়। পিতার প্রতি সত্যে নিমজ্জিত পণ্ডিত, সুশিক্ষিত, সৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত না করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পুণের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট প্রংশসিত ও আদরনীয় হয়। তথাগতের প্রতি সত্যে নিমজ্জিত পণ্ডিত, সুশিক্ষিত, সৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত না করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পুণের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট প্রংশসিত ও আদরনীয় হয়। তথাগত শ্রাবকের প্রতি সত্যে নিমজ্জিত পণ্ডিত, সুশিক্ষিত, সৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত না করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পুণের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট প্রংশসিত ও আদরনীয় হয়।
ভিক্ষুগণ! এ’চার প্রকার সত্যে নিমজ্জিত পণ্ডিত, সুশিক্ষিত, সৎপুরুষ নিজের ক্ষত-বিক্ষত না করে অবস্থান করে থাকে। এবং বহু পুণের জন্ম দিয়ে বিজ্ঞজনের নিকট প্রংশসিত ও আদরনীয় হয়।”
“মিথ্যা প্রতিপন্ন যে মাতা-পিতা প্রতি,
তথাগত ও শ্রাবকগণে পোষে সেই মতি।
এতাদৃশ কর্ম সাধনে যারা থাকে নিয়োজিত,
মাতপিতা পণ্ডিত হয় তাতে অধর্মচার,
ইহলোকে হয় নিন্দিত, মরণে অপায় তার।
করলে সম্যক ধারণা মাতা-পিতার প্রতি,
তথাগত ও শ্রাবকগণে সেই একই মতি।
এতাদৃশ নরের জান, বহু পুণ্যই গতি ॥
আচরি ধর্ম মাতাপিতা, বুদ্ধ ও শ্রাবকের প্রতি,
এজগতে প্রশংসিত, মরণে লভে স্বর্গসুখ অতি।”
(চতুর্থ সূত্র)
৫. অনুসোতসুত্তং - অনুস্রোত সূত্র
৫. “হে ভিক্ষুগণ! পৃথিবীতে চার প্রকার পুদ্গল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- অনুস্রোতগামী পুদ্গল, প্রতিস্রোতগামী পুদ্গল, প্রতিষ্ঠিত পুদ্গল, ত্রিলোক অতিক্রান্ত নির্বাণেস্থিত পুদ্গল।
ভিক্ষুগণ! অনুস্রোতগামী পুদ্গল কাকে বলে? এজগতে কোন পুদ্গল কামের প্রতি অনুরক্ত হয় এবং পাপকর্ম সম্পাদন করে। একেই বলা হয় অনুস্রোতগামী পুদ্গল।
প্রতিস্রোতগামী পুদ্গল কাকে বলে? এজগতে কোন পুদ্গল কামের প্রতি অনুরক্ত হয় না এবং পাপকর্ম সম্পাদন করে না। তবে দুঃখ এবং দৌর্মনস্যের সাথে অশ্রু বিসর্জনে কেঁদে কেঁদে পরিপূর্ণ, পরিশুদ্ধ ব্রহ্মচর্য পালনে রত হয়। একেই বলা হয় প্রতিস্রোতগামী পুদ্গল।
প্রতিষ্ঠিত পুদ্গল কাকে বলে? এজগতে কোন পুদ্গল পঞ্চবিধ অধোভাগীয় সংযোজন ধ্বংস করে উপপাতিক সত্ত্ব হন এবং সেখানে পরিনির্বাপিত হন। পুনঃ আর জন্ম গ্রহণ করেন না। একেই বলা হয় প্রতিষ্ঠিত পুদ্গল।
ত্রিলোক অতিক্রান্ত নির্বাণেস্থিত পুদ্গল কাকে বলে? এজগতে কোন পুদ্গল আস্রবসমূহ ক্ষয় করে এজীবনে স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা নিরাস্রবযুক্ত চিত্ত বিমুক্তি, প্রজ্ঞা বিমুক্তি লাভ করে অবস্থান করেন। একেই বলা হয় ত্রিলোক অতিক্রান্ত নির্বাণেস্থিত পুদ্গল। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার পুদ্গল পৃথিবীতে বিদ্যমান।”
“হয়ে থাকে যারা কামে অসংযতাচারি,
অবীতরাগ বশে হয় মহা কামভোগী।
পুনঃ পুনঃ জন্ম জরায় হয় বিচরণকারী,
তৃষ্ণায় প্রবিষ্ট তারা অনুস্রোতগামী।
এজগতে যারা হয় ধীর আর প্রতিষ্ঠিত,
পাপে বিরত তারা, কামে নহে অনুরক্ত।
দুঃখ জ্ঞানে অবস্থানে, নাহি কামচারী,
তাই আমি বলি তাদের প্রতিস্রোতগামী।
পঞ্চবিধ ক্লেশ ধ্বংসে হয়ে পূর্ণ শৈক্ষ্য,
অপরিহানীধর্ম লভি মনের আধিপত্য।
চিত্ত যার বশীভূত, ইন্দ্রিয় সমাহিত,
সেই নরকে বলি আমি যথা প্রতিষ্ঠিত।
পূর্বাপর ধর্ম যার হয়েছে অধিগত,
ব্রহ্মচর্যপূর্ণকারী মুনি তিনি, নির্বাণ উপগত।”
(পঞ্চম সূত্র)
৬. অপ্পস্সুতসুত্তং - অল্পশ্রুত সূত্র
৬. “হে ভিক্ষুগণ! পৃথিবীতে চার প্রকার পুদ্গল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার পুদ্গল কি কি? যথা- শ্রুতি দ্বারা অনধিকৃত অল্পশ্রুত, শ্রুতি দ্বারা অধিকৃত অল্পশ্রুত, শ্রুতি দ্বারা অনধিকৃত বহুশ্রুত , শ্রুতি দ্বারা অধিকৃত বহুশ্রুত।
ভিক্ষুগণ! কিভাবে পুদ্গল শ্রুতি দ্বারা অনধিকৃত অল্পশ্রুত হয়? এজগতে কোন পুদ্গল সূত্র, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল এই নবাঙ্গ শাসন সম্পর্কে অল্পশ্রুত হয়। সেই অল্পশ্রুত হওয়ার কারণে তার অর্থ, ধর্ম যথার্থ জ্ঞাত হয় না; ফলে সে ধর্মানুধর্মে প্রতিপন্ন হয় না। এভাবে পুদ্গল শ্রুতি দ্বারা অনধিকৃত অল্পশ্রুত হয়।
কিভাবে পুদ্গল শ্রুতি দ্বারা অধিকৃত অল্পশ্রুত হয়? এজগতে কোন পুদ্গল সূত্র, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদু্ভতধর্ম, বেদল্ল এই নবাঙ্গ শাসন সম্পর্কে অল্পশ্রুত হয়। সেই অল্পশ্রুত হওয়ার কারণে তার অর্থ, ধর্ম যথার্থ জ্ঞাত হয় না; ফলে সে ধর্মানুধর্মে প্রতিপন্ন হয় না। এভাবে পুদ্গল শ্রুতি দ্বারা অধিকৃত অল্পশ্রুত হয়।
কিভাবে পুদ্গল শ্রুতি দ্বারা অনধিকৃত বহুশ্রুত হয়? এজগতে কোন পুদ্গল সূত্র, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল এই নবাঙ্গ শাসন সম্পর্কে অল্পশ্রুত হয়। সেই অল্পশ্রুত হওয়ার কারণে তার অর্থ, ধর্ম যথার্থ জ্ঞাত হয় না; ফলে সে ধর্মানুধর্মে প্রতিপন্ন হয় না। এভাবে পুদ্গল শ্রুতি দ্বারা অনধিকৃত বহুশ্রুত হয়।
কিভাবে পুদ্গল শ্রুতি দ্বারা অধিকৃত বহুশ্রুত হয়? এজগতে কোন পুদ্গল সূত্র, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল এই নবাঙ্গ শাসন সম্পর্কে অল্পশ্রুত হয়। সেই অল্পশ্রুত হওয়ার কারণে তার অর্থ, ধর্ম যথার্থ জ্ঞাত হয় না; ফলে সে ধর্মানুধর্মে প্রতিপন্ন হয় না। এভাবে পুদ্গল শ্রুতি দ্বারা অধিকৃত বহুশ্রুত হয়। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার পুদ্গল জগতে বিদ্যমান।”
“অল্পশ্রুত হয়ে যদি শীলে হয় অসমাহিত,
শ্রুতি আর শীল হীনে সে হয় নিন্দিত।
অল্পশ্রুত হয়ে যদি শীলে হয় সুসমাহিত,
শীল হেতু প্রশংসা তার, শ্রুতিতে নন্দিত।
বহুশ্রুত হয়ে যদি শীলে হয় অসমাহিত,
শ্রুতিতে প্রশংসা তার, শীলেতে নিন্দিত।
বহুশ্রুত হয়ে যদি শীলে হয় সুসমাহিত,
শ্রুতি আর শীল হেতু হয় সে প্রশংসিত।
সপ্রাজ্ঞ বুদ্ধশিষ্য বহুশ্রুত ধর্মধর,
খাঁটি স্বর্ণ তল্য তারে কেবা অনাদর?
ব্রহ্মের প্রশংসা, দেবেরও পায় সে আদর।”
(ষষ্ঠ সূত্র)
৭. সোভন সুত্তং - শোভন সূত্র
৭. “হে ভিক্ষুগণ! চার জন ব্যক্তি শিক্ষিত, বিনীত, বিশারদ, বহুশ্রুত, ধর্মধর এবং ধর্মানুধর্ম প্রতিপন্ন হয়ে সঙ্ঘের গৌরব বৃদ্ধি করে। সেই চার জন ব্যক্তি কারা? যথা- ভিক্ষু শিক্ষিত, বিনীত, বিশারদ, বহুশ্রুত , ধর্মধর এবং ধর্মানুধর্ম প্রতিপন্ন হয়ে সঙ্ঘের গৌরব বৃদ্ধি করে। ভিক্ষুণী শিক্ষিত বিনীত, বিশারদ, বহুশ্রুত, ধর্মধর এবং ধর্মানুধর্ম প্রতিপন্ন হয়ে সঙ্ঘের গৌরব বৃদ্ধি করে। উপাসক শিক্ষিত বিনীত, বিশারদ, বহুশ্রুত, ধর্মধর এবং ধর্মানুধর্ম প্রতিপন্ন হয়ে সঙ্ঘের গৌরব বৃদ্ধি করে। উপাসিকা শিক্ষিত বিনীত, বিশারদ, বহুশ্রুত, ধর্মধর এবং ধর্মানুধর্ম প্রতিপন্ন হয়ে সঙ্ঘের গৌরব বৃদ্ধি করে। ভিক্ষুগণ! এই চার জন ব্যক্তি শিক্ষিত বিনীত, বিশারদ, বহুশ্রুত, ধর্মধর এবং ধর্মানুধর্ম প্রতিপন্ন হয়ে সঙ্ঘের গৌরব বৃদ্ধি করে।
“সুশিক্ষিত বিশারদ বহুশ্রুত ধর্মধর যিনি,
ধর্মানুধর্মচারী সঙ্ঘে সুশোভিত তিনি।
“ভিক্ষু হলে শীলবান, ভিক্ষুণী বহুশ্রুতা,
উপাসক শ্রদ্ধাবান, উপাসিকা শ্রদ্ধান্বিতা।
সঙ্ঘে শোভা পায় সকলে সবে,
সুশোভিত হন তারা, সেই সঙ্ঘ মাঝে।”
(সপ্তম সূত্র)
৮. বেসারজ্জসুত্তং - বৈশারদ্য সূত্র
৮. “হে ভিক্ষুগণ! তথাগতের চার বৈশারদ্য (বিশারদত্ত্ব) বিদ্যমান, যেই বৈশারদ্যে সমন্বিত হয়ে তথাগত অগ্রত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন বলে বিশেষভাবে জানেন, পরিষদের মধ্যে সিংহনাদে ধর্মচক্র প্রবর্তন করেন। সেই চার বৈশারদ্য কি কি? যথা- জগতে এমন কোন শ্রমণ-ব্রাহ্মণ, দেবতা, ব্রহ্মা ও মার আমি দেখি না, যে জন বলতে পারে যে ‘সম্যক সম্বুদ্ধের জ্ঞাত এ’ধর্মসমূহ অধিগত হয়নি’ বলে আমাকে এ’বিষয়ে ধর্মানুসারে নিন্দা করতে পারে। এ’বিষয় না দেখে আমি ক্ষমাশীল, ভয়হীন এবং বৈশারদ্য প্রাপ্ত হয়ে অবস্থান করছি।”
জগতে এমন কোন শ্রমণ-ব্রাহ্মণ, দেবতা, ব্রহ্মা ও মার আমি দেখি না, যে জন বলতে পারে যে ‘ক্ষীণাস্রবের জ্ঞাত এ’ধর্মসমূহ অপরিক্ষীণ’ বলে আমাকে এবিষয়ে ধর্মানুসারে নিন্দা করতে পারে। এ’বিষয় না দেখে আমি ক্ষমাশীল, ভয়হীন এবং বৈশারদ্য প্রাপ্ত হয়ে অবস্থান করছি।
জগতে এমন কোন শ্রমণ-ব্রাহ্মণ, দেবতা, ব্রহ্মা ও মার আমি দেখি না, যে জন বলতে পারে যে ‘তাদের (বুদ্ধগণের) দ্বারা ব্যক্ত অন্তরায়কর ধর্মসমূহ অনুশীলন করলে মোটেই অন্তরায় হয় না’ বলে আমাকে এ’বিষয়ে ধর্মানুসারে নিন্দা করতে পারে। এ’বিষয় না দেখে আমি ক্ষমাশীল, ভয়হীন এবং বৈশারদ্য প্রাপ্ত হয়ে অবস্থান করছি।
জগতে এমন কোন শ্রমণ-ব্রাহ্মণ, দেবতা, ব্রহ্মা ও মার আমি দেখি না, যে জন বলতে পারে যে ‘ যেরূপ মঙ্গলার্থে ধর্ম দেশিত, সেভাবে অনুশীলন করলে অনুশীলনকারীর সম্যকভাবে দুঃখ ক্ষয় হয় না, দুঃখ নির্বাপিত হয় না’ বলে আমাকে এ’বিষয়ে ধর্মানুসারে নিন্দা করতে পারে। এ’বিষয় না দেখে আমি ক্ষমাশীল, ভয়হীন এবং বৈশারদ্য প্রাপ্ত হয়ে অবস্থান করছি। ভিক্ষুগণ তথাগতের এই চার বৈশারদ্য বিদ্যমান, যেই বৈশারদ্যে সমন্বিত হয়ে তথাগত অর্হত্ত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন বলে জানেন, পরিষদের মধ্যে সিংহনাদে ধর্মচক্র প্রবর্তন করেন।”
“আমার স্পষ্ট কথায় কে-বা আছে নিন্দাতে,
শ্রমণ ব্রহ্মণাদি কোথাও, কোন হেতুতে।
তথাগতের সম কেহ নাই-রে পণ্ডিত,
বৈশারদ্য, জয়ী তিনি ভাষণেও নন্দিত।”
ধর্মচক্র আয়ত্তে যিনি মহান অদ্বিতীয়,
অনুকম্পায় দেশনা করেন, যা প্রবর্তনীয়।
দেব-নরে তাদৃশ শ্রেষ্ঠ যেই জন হন,
ভব উত্তীর্ণে দক্ষ সত্ত্বগণের নমস্য সেজন।”
(অষ্টম সূত্র)
৯. তণ্হূপ্পাদসুত্তং - তৃষ্ণা উৎপন্ন সূত্র
৯. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকারে তৃষ্ণা উৎপন্ন হয়; যাতে ভিক্ষুগণের উৎপন্নশীল তৃষ্ণার উৎপত্তি হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- পিণ্ডপাত হেতু, ভিক্ষুগণের উৎপন্নশীল তৃষ্ণার উৎপত্তি হয়। শয়নাসন হেতু, ভিক্ষুগণের উৎপন্নশীল তৃষ্ণার উৎপত্তি হয়। এস্থানে পুনর্জন্ম গ্রহণ করবো, এস্থানে করবো না হেতু, ভিক্ষুগণের উৎপন্নশীল তৃষ্ণার উৎপত্তি হয়। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকারে তৃষ্ণার উৎপত্তি হয়; যাতে ভিক্ষুগণের উৎপন্নশীল তৃষ্ণার উৎপত্তি হয়।”
“সংসারের দীর্ঘপথে তৃষ্ণা হয় পুরুষ দ্বিতীয়,
তৃষ্ণার অন্যথাভাবে, সংসার হয় অপ্রবর্তিত।
এবম্বিধ উপদ্রব দুঃখ জ্ঞাত যেই জন,
তৃষ্ণাসক্তি বিনাশে তিনি সত্য ভিক্ষু হন।”
(নবম সূত্র)
১০. যোগসুত্তং - যোগ সূত্র
১০. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার যোগ । সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কাম যোগ, ভব যোগ, মিথ্যাদৃষ্টি যোগ, অবিদ্যা যোগ। ভিক্ষুগণ! কাম যোগ কাকে বলে? এজগতে কেউ কামের সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানে না। সেই কামের সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে না জানার দরুন সে কামে কামরাগ, কামনন্দী, কামপ্রেম, কামমোহ, কামপিপাসা, কামউন্মাদনা, কামাসক্তি, কামতৃষ্ণা পরিতৃপ্তি করতে চেষ্টা করে। একেই বলা হয় কাম যোগ। ইহাই কাম যোগ।
ভব যোগ কাকে বলে? এজগতে কেউ ভবের সমুদয়, অন্তর্ধান আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানে না। সেই ভবের সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে না জানার দরুন সে ভবে ভবরাগ, ভবনন্দী, ভবপ্রেম, ভবমোহ, ভবপিপাসা, ভবউন্মাদনা, ভবাসক্তি, ভবতৃষ্ণা পরিতৃপ্তি করতে চেষ্টা করে। একেই বলা হয় ভব যোগ। ইহাই ভব যোগ।
মিথ্যাদৃষ্টি যোগ কাকে বলে? এজগতে কেউ মিথ্যাদৃষ্টির সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানে না। সেই মিথ্যাদৃষ্টির সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে না জানার দরুন সে মিথ্যাদৃষ্টি মিথ্যাদৃষ্টি রাগ, মিথ্যাদৃষ্টি নন্দী, মিথ্যাদৃষ্টি প্রেম, মিথ্যাদৃষ্টি মোহ, মিথ্যাদৃষ্টি পিপাসা, মিথ্যাদৃষ্টি উন্মাদনা, মিথ্যাদৃষ্টি আসক্তি, মিথ্যাদৃষ্টি তৃষ্ণা পরিতৃপ্তি করতে চেষ্টা করে। একেই বলা হয় মিথ্যাদৃষ্টি যোগ। ইহাই মিথ্যাদৃষ্টি যোগ।
অবিদ্যা যোগ কাকে বলে? এজগতে কেউ ছয় স্পর্শায়তনের সমুদয়, অন্তর্ধান আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথ ভাবে জানে না। সেই ছয় স্পর্শায়তনের সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে না জানার দরুন সে ছয় স্পর্শায়তনের অবিদ্যা, অজ্ঞানকে পরিতৃপ্তি করতে চেষ্টা করে। একেই বলা হয় অবিদ্যা যোগ। এরূপে কাম যোগ, ভব যোগ, মিথ্যাদৃষ্টি যোগ, অবিদ্যা যোগাদি পাপজনক অকুশল কর্ম, সংক্লেশ, পুনর্জন্ম প্রদান, ক্লেশজনক দুঃখ বিপাক, ভবিষ্যতে জন্ম-জরা-মরণাদি দ্বারা সংযুক্ত করে। তদ্ধেতু একে অযোগক্ষেম (আসক্তি) বলা হয়। ভিক্ষুগণ! ইহাই চার প্রকার যোগ।
ভিক্ষুগণ! বিসংযোগ (বিচ্ছেদ) চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কাম যোগ বিসংযোগ, ভব যোগ বিসংযোগ, মিথ্যাদৃষ্টি যোগ বিসংযোগ, অবিদ্যা যোগ বিসংযোগ।
ভিক্ষুগণ! কাম যোগ বিসংযোগ কাকে বলে? এজগতে কেউ কামের সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানে। সেই কামের সমুদয়, অন্তর্ধান আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানার দরুন সে কামে কামরাগ, কামনন্দী, কামপ্রেম, কামমোহ, কামপিপাসা, কামউন্মাদনা, কামাসক্তি, কামতৃষ্ণা পরিতৃপ্তি করতে চেষ্টা করে না। একেই বলা হয় কাম যোগ বিসংযোগ। ইহাই কাম যোগ বিসংযোগ।
ভব যোগ বিসংযোগ কাকে বলে? এজগতে কেউ ভবের সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানে। সেই ভবের সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানার দরুন সে ভবে ভবরাগ, ভবনন্দী, ভবপ্রেম, ভবমোহ, ভবপিপাসা, ভবউন্মাদনা, ভবাসক্তি, ভবতৃষ্ণা পরিতৃপ্তি করতে চেষ্টা করে না। একেই বলা হয় ভব যোগ বিসংযোগ । ইহাই ভব যোগ বিসংযোগ।
মিথ্যাদৃষ্টি যোগ বিসংযোগ কাকে বলে? এজগতে কেউ মিথ্যাদৃষ্টির সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানে। সেই মিথ্যাদৃষ্টির সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানার দরুন সে মিথ্যাদৃষ্টি মিথ্যাদৃষ্টি রাগ, মিথ্যাদৃষ্টি নন্দী, মিথ্যাদৃষ্টি প্রেম, মিথ্যাদৃষ্টি মোহ, মিথ্যাদৃষ্টি পিপাসা, মিথ্যাদৃষ্টি উন্মাদনা, মিথ্যাদৃষ্টি আসক্তি, মিথ্যাদৃষ্টি তৃষ্ণা পরিতৃপ্তি করতে চেষ্টা করে না। একেই বলা হয় মিথ্যাদৃষ্টি যোগ বিসংযোগ। ইহাই মিথ্যাদৃষ্টি যোগ বিসংযোগ।
অবিদ্যা যোগ বিসংযোগ কাকে বলে? এজগতে কেউ ছয় স্পর্শায়তনের সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানে। সেই ছয় স্পর্শায়তনের সমুদয়, অন্তর্ধান, আস্বাদ, আদীনব, নিঃসরণ যথাযথভাবে জানার দরুন সে ছয় স্পর্শায়তনের অবিদ্যা, অজ্ঞানকে পরিতৃপ্তি করতে চেষ্টা করে না। একেই বলা হয় অবিদ্যা যোগ বিসংযোগ। ইহাই কাম যোগ বিসংযোগ, ভব যোগ বিসংযোগ, মিথ্যাদৃষ্টি যোগ বিসংযোগ, অবিদ্যা যোগ বিসংযোগাদি পাপজনক অকুশলধর্ম, সংক্লেশ, পুনর্জন্ম প্রদান, ক্লেশজনক দুঃখ বিপাক, ভবিষ্যতের জন্ম-জরা-মরণাদি দ্বারা বিসংযুক্ত করে। তদ্ধেতু একে যোগক্ষেম বলা হয়। ভিক্ষুগণ! ইহাই চার প্রকার বিসংযোগ।
“কামযোগে সংযুক্ত আর ভবযোগে উভয়ে,
দৃষ্টিযোগে সংযুক্ত অবিদ্যাযোগ পূরভাগে।
অজ্ঞ নর এভাবে ভ্রমি ভব সংসারে,
জন্ম-মৃত্যুর অধীন হয় পুনঃ বারে বারে।
মিথ্যাদৃষ্টি সমুচ্ছেদ হয় অবিদ্যা বিদূরণ,
সর্বযোগ বিসংযোগ হয়, তাতেই মুণির যোগজয়।”
(দশম সূত্র)
স্মারক গাথা-
অনুবুদ্ধ, প্রপতিত দুই, ক্ষত, অনুশ্রুত পঞ্চমে,
অল্পশ্রুত, শোভন আর বৈশারদ্য, তৃষ্ণাযোগ দশমে।