(২২) ২. পরিসাবগ্গো-পরিষদ বর্গ

১. পরিসাসুত্তং-পরিষদ সূত্র

২১১. “হে ভিক্ষুগণ! অপরিশুদ্ধ পরিষদ চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- দুঃশীল, পাপধর্মে অপরিশুদ্ধ ভিক্ষুপরিষদ; দুঃশীল, পাপধর্মে অপরিশুদ্ধ ভিক্ষুণীপরিষদ; দুঃশীল, পাপধর্মে অপরিশুদ্ধ উপাসকপরিষদ এবং দুঃশীল, পাপধর্মে অপরিশুদ্ধ উপাসিকাপরিষদ। একে বলে চার প্রকার অপরিশুদ্ধ পরিষদ।

“হে ভিক্ষুগণ! পরিশুদ্ধপরিষদ চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- শীলবান, কল্যাণধর্মে পরিশুদ্ধ ভিক্ষুপরিষদ; শীলবান, কল্যাণধর্মে পরিশুদ্ধ ভিক্ষুণীপরিষদ; শীলবান, কল্যাণধর্মে পরিশুদ্ধ উপাসকপরিষদ এবং শীলবান, কল্যাণধর্মে পরিশুদ্ধ উপাসিকাপরিষদ। একে বলে চার প্রকার পরিশুদ্ধ পরিষদ।” (প্রথম সূত্র)

২. দিট্‌িঠসুত্তং-দৃষ্টিসূত্র

২১২. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কায়দুশ্চরিত, বাকদুশ্চরিত, মনোদুশ্চরিত ও মিথ্যাদৃষ্টি। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয় বা পতিত হয়।

“হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কায়সুচরিত, বাকসুচরিত, মনোসুচরিত ও সম্যকদৃষ্টি। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (দ্বিতীয় সূত্র)

৩. অকতঞুতাসুত্তং-অকৃতজ্ঞতা সূত্র

২১৩. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কায়দুশ্চরিত, বাকদুশ্চরিত, মনোদুশ্চরিত ও অকৃতজ্ঞতা। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয় বা পতিত হয়।

“হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কায়সুচরিত, বাকসুচরিত, মনোসুচরিত ও কৃতজ্ঞতা। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (তৃতীয় সূত্র)

৪. পাপাতিপাতীসুত্তং-প্রাণীহত্যাকারী সূত্র

২১৪. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- প্রাণীহত্যা, অদত্তবস্তু গ্রহণ, মিথ্যাকামাচার ও মিথ্যাভাষণ। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়।”

ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করেন। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- প্রাণীহত্যা হতে বিরত, অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত, মিথ্যাকামাচার হতে বিরত এবং মিথ্যাভাষণ হতে বিরত। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (চতুর্থ সূত্র)

৫. পঠমমগ্গসুত্তং-মার্গ সূত্র (প্রথম)

২১৫. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- মিথ্যাদৃষ্টি, মিথ্যাসংকল্প, মিথ্যাবাক্য ভাষণ ও মিথ্যাকর্ম সম্পাদন। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়।

ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- সম্যকদৃষ্টি, সম্যকসংকল্প, সম্যকবাক্য ভাষণ এবং সম্যককর্ম সম্পাদন। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (পঞ্চম সূত্র)

৬. দুতিযমগ্গসুত্তং- মার্গ সূত্র (দ্বিতীয়)

২১৬. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- মিথ্যাজীবিকা, মিথ্যাপ্রচেষ্টা, মিথ্যাস্মৃতি এবং মিথ্যাসমাধি। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে পতিত হয়।

ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- সম্যকজীবিকা, সম্যকপ্রচেষ্টা, সম্যকস্মৃতি এবং সম্যকসমাধি। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (ষষ্ঠ সূত্র)

৭. পঠমবোহারপথসুত্তং-বোহারপথ সূত্র (প্রথম)

২১৭. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত বা পতিত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- অদৃষ্টে দৃষ্ট, অশ্রুতকে শ্রুত, অনুপলব্ধকে উপলব্ধ ও অজ্ঞাতকে জ্ঞাত মনে করা। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত বা পতিত হয়।

ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমৃদ্ধ ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- অদৃষ্টকে অদৃষ্ট, অশ্রুতকে অশ্রুত, অনুপলব্ধকে অনুপলব্ধ ও অজ্ঞাতকে অজ্ঞাত মনে করা। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (সপ্তম সূত্র)

৮. দুতিযবোহারপথসুত্তং-বোহারপথ সুত্র (দ্বিতীয়)

২১৮. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত বা পতিত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- দৃষ্টকে অদৃষ্ট, শ্রুতকে অশ্রুত, উপলব্ধকে অনুপলব্ধ ও জ্ঞাতকে অজ্ঞাত মনে করা। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে পতিত হয়।
 

ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমৃদ্ধ ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- দৃষ্টকে দৃষ্ট, শ্রুতকে শ্রুত, উপলব্ধকে উপলব্ধ ও জ্ঞাতকে জ্ঞাত মনে করা। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (অষ্টম সূত্র)

৯. অহিরিকসুত্তং-অহ্রী সূত্র

২১৯. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত বা পতিত হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- অশ্রদ্ধা, দুঃশীলতা, পাপের প্রতি লজ্জাহীনতা ও পাপের প্রতি ভয়হীনতা। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে পতিত হয়।

ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমৃদ্ধ ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- শ্রদ্ধাবান, শীলবান, পাপের প্রতি লজ্জা ও পাপের প্রতি ভয়। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (নবম সূত্র)

১০. দুস্‌সীলসুত্তং-দুঃশীল সূত্র

২২০. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে পতিত হয়। এই চার প্রকার কি কি? যথা- অশ্রদ্ধা, দুঃশীল, হীন বীর্য ও দুষপ্রাজ্ঞতা। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত বা পতিত হয়।

ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- শ্রদ্ধা, শীল, আরদ্ধ বীর্য ও প্রজ্ঞা। এই চার প্রকার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (দশম সূত্র)

পরিষদবর্গ সমাপ্ত

স্মারকগাথাঃ

পরিষদ, দৃষ্টি, অকৃতজ্ঞতা এবং প্রাণী হত্যাকারী,

মার্গ দুই, দুই বোহারপথ, অহ্রী ও দুঃশীল।