(৮) ৩. অপন্নকবগ্গো-সম্যক বর্গ

১.পধানসুত্তং-প্রধান সূত্র

৭১. “হে ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে সমন্বিত ভিক্ষু সম্যক প্রতিপদায় প্রতিপন্ন হয় এবং আস্রব ক্ষয়ার্থে তার সেই ধর্মসমূহ দৃঢ়ভাবে গৃহীত হয়। সেই চার ধর্ম কি কি? যথা- ভিক্ষু শীলবান হয়, বহুশ্রুত হয়, আরদ্ধ বীর্যসম্পন্ন হয় এবং প্রজ্ঞাবান হয়। ভিক্ষুগণ! এ’চার ধর্মে সমন্বিত ভিক্ষু সম্যক প্রতিপদায় প্রতিপন্ন হয় এবং আস্রব ক্ষয়ার্থে তার সেই ধর্মসমূহ দৃঢ়ভাবে গৃহীত হয়।” (প্রথম সূত্র)

২.সম্মাদিট্‌ঠিসুত্তং-সম্যকদৃষ্টি সূত্র

৭২. “হে ভিক্ষুগণ! চারধর্মে সমন্বিত ভিক্ষু সম্যক প্রতিপদায় প্রতিপন্ন হয় এবং আস্রব ক্ষয়ার্থে তার সেই ধর্মসমূহ দৃঢ়ভাবে গৃহীত হয়। সেই চার ধর্ম কি কি? যথা- নৈষ্ক্রম্য চিন্তা , অব্যাপাদ চিন্তা , অবিহিংসা চিন্তা এবং সম্যক দৃষ্টি। ভিক্ষুগণ! এ’চার ধর্মে সমন্বিত ভিক্ষু সম্যক প্রতিপদায় প্রতিপন্ন হয় এবং আস্রব ক্ষয়ার্থে তার সেই ধর্মসমূহ দৃঢ়ভাবে গৃহীত হয়।” (দ্বিতীয় সূত্র)

৩.সপ্পুরিসসুত্তং - সৎপুরুষ সূত্র

৭৩. “হে ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে সমন্বিত হলে অসৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য। সেই চার ধর্ম কি কি? যথা- এজগতে যেজন অজিজ্ঞাসিত হয়ে পরের নিন্দা করে, সে-ই অসৎ পুরুষ। প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে, তাদের জিজ্ঞাসার কী-ই-বা আছে! এবলে তা বর্জন না করে, স্থগিত না রেখে পরনিন্দাকারী হয়। এভাবে অসৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়।

পুুনশ্চ, যেজন জিজ্ঞাসিত হয়ে পরের প্রশংসা করে না, সে-ই অসৎ পুরুষ। প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে, তাদের জিজ্ঞাসার কী-ই-বা নেই! এবলে তা বর্জন করে, স্থগিত রেখে পরিপূর্ণ পরের প্রশংসাকারী হয় না। এভাবে অসৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়।

পুুনশ্চ, যেজন জিজ্ঞাসিত হয়ে নিজের নিন্দা করে না, সে-ই অসৎ পুরুষ। প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে, তাদের জিজ্ঞাসার কী-ই-বা নেই! এবলে তা বর্জন করে, স্থগিত রেখে পরিপূর্ণ নিজের নিন্দাকারী হয় না। এভাবে অসৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়।

পুুনশ্চ, যেজন অ-জিজ্ঞাসিত হয়ে নিজের প্রশংসা করে, সে-ই অসৎ পুরুষ। প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে, তাদের জিজ্ঞাসার কী-ই-বা আছে! এবলে তা বর্জন না করে, স্থগিত না রেখে পরিপূর্ণ নিজের প্রশংসাকারী হয়। এভাবে অসৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়। এ’চার ধর্মে সমন্বিত হলে অসৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়।

হে ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে সমন্বিত হলে সৎপুরুষ বলে জ্ঞাতব্য। সেই চার ধর্ম কি কি? যথা- এজগতে যেজন জিজ্ঞাসিত হয়ে পরের নিন্দা করে না, সে-ই সৎপুরুষ। প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে, তাদের জিজ্ঞাসার কী-ই-বা নেই! এবলে তা বর্জন করে, স্থগিত রেখে পরিপূর্ণ পরনিন্দাকারী হয় না। এভাবে সৎপুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়।

যেজন অ-জিজ্ঞাসিত হয়ে পরের প্রশংসা করে, সে-ই সৎ পুরুষ। প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে, তাদের জিজ্ঞাসার কী-ই-বা আছে! এবলে তা বর্জন না করে, স্থগিত না রেখে পরিপূর্ণ পরের প্রশংসাকারী হয়। এভাবে সৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়।

যেজন অ-জিজ্ঞাসিত হয়ে নিজের নিন্দা করে, সে-ই সৎ পুরুষ। প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে, তাদের জিজ্ঞাসার কী-ই-বা আছে! এবলে তা বর্জন না করে, স্থগিত না রেখে পরিপূর্ণ পরের প্রশংসাকারী হয়। এভাবে সৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়।

যেজন জিজ্ঞাসিত হয়ে নিজের প্রশংসা করে না, সে-ই সৎ পুরুষ। প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে, তাদের জিজ্ঞাসার কী-ই-বা নেই! এবলে তা বর্জন করে, স্থগিত রেখে পরিপূর্ণ নিজের প্রশংসাকারী হয় না। এভাবে সৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়। এ’চার ধর্মে সমন্বিত হলে সৎ পুরুষ বলে জ্ঞাতব্য হয়।
 

যেমন, ভিক্ষুগণ! যে রাতে অথবা দিনে নববধূ গৃহে আনা হয়, সে সময়ে শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী এমন কি দাস-দাসীরাও যদি তার সম্মুখে পড়ে, তাহলে বধূর তীব্র লজ্জা, ভয় উৎপন্ন হয়। পরবর্তীতে একত্রে বাস করার কারণে, ঘনিষ্ঠ হওয়াতে সেই বধূ শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামীকে এরূপ বলে- “দূর হোন, আপনারা কিছুই জানেন না।” ঠিক তেমনি এজগতে কোন ভিক্ষু যে রাতে অথবা দিনে আগার হতে অনাগারিকভাবে প্রব্রজিত হয়, সে সময়ে ভিক্ষু-ভিক্ষুণী, উপাসক-উপাসিকা এমনকি সেবকেরাও যদি তার সম্মুখে পড়ে, তাহলে তার তীব্র লজ্জা, ভয় উৎপন্ন হয়। পরবর্তীতে একত্রে বাস করার কারণে, ঘনিষ্ঠ হওয়াতে সেই প্রব্রজিত আচার্য, উপধ্যায়কে এরূপ বলে- “দূর হোন, আপনারা কিছুই জানেন না।” “তদ্ধেতু, ভিক্ষুগণ! তোমাদের এ’রূপ শিক্ষা করা উচিত- “আমরা অধুনাগত বধূর ন্যায় হয়ে অবস্থান করবো।”

হে ভিক্ষুগণ! এটি এরূপেই তোমাদের শিক্ষা করা উচিত।

(তৃতীয় সূত্র)

৪.পঠম-অগ্গসুত্তং- শ্রেষ্ঠ সূত্র (প্রথম)

৭৪. “হে ভিক্ষুগণ! শ্রেষ্ঠ চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- শীল শ্রেষ্ঠ, সমাধি শ্রেষ্ঠ, প্রজ্ঞা শ্রেষ্ঠ, বিমুক্তি শ্রেষ্ঠ। এগুলোই চার প্রকার শ্রেষ্ঠ। (চতুর্থ সূত্র)

৫.দুতিয-অগ্গসুত্তং- শ্রেষ্ঠ সূত্র (দ্বিতীয়)

৭৫. “হে ভিক্ষুগণ! শ্রেষ্ঠ চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- রূপ শ্রেষ্ঠ, বেদনা শ্রেষ্ঠ, সংজ্ঞা শ্রেষ্ঠ, ভব শ্রেষ্ঠ। এগুলোই চার প্রকার শ্রেষ্ঠ। (পঞ্চম সূত্র)

৬.কুসিনারসুত্তং-কুশীনগর সূত্র

৭৬. একসময় ভগবান কুশীনগরে মল্লদের শালবনে যমক শালবৃক্ষের মাঝখানে অবস্থান করছিলেন, পরিনির্বাণ মঞ্চে। তখন ভগবান ভিক্ষুগণকে আহ্বান করলেন- “হে ভিক্ষুগণ, “হ্যাঁ ভদন্ত” বলে ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর প্রদান করলেন। ভগবান এরূপ বললেন-

“ভিক্ষুগণ! তোমাদের মধ্যে একজন ভিক্ষুর মনেও কি বুদ্ধ, ধর্ম, সংঘ, মার্গ, পটিপদা সম্বন্ধে কোন প্রকার সন্দেহ, সংশয় রয়েছে? সন্দেহ থাকলে জিজ্ঞাসা কর। যাতে করে পরবর্তীতে এরূপ মনস্তাপ করতে না হয়- ‘শাস্তা আমাদের সামনে ছিলেন, অথচ সেই সম্মুখস্থ ভগবানকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে সক্ষম হইনি।’ শাস্তা এরূপ বললেও সেই ভিক্ষুগণ নীরব রইলেন। ভগবান দ্বিতীয়বার ভিক্ষুগণকে আহ্বান করে বললেন- “ভিক্ষুগণ, তোমাদের মধ্যে একজন ভিক্ষুর মনেও কি বুদ্ধ, ধর্ম, সংঘ, মার্গ, পটিপদা সম্বন্ধে কোন প্রকার সন্দেহ, সংশয় রয়েছে? সন্দেহ থাকলে জিজ্ঞাসা কর। যাতে করে পরবর্তীতে এরূপ মনস্তাপ করতে না হয়- ‘শাস্তা আমাদের সামনে ছিলেন, অথচ সেই সম্মুখস্থ ভগবানকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে সক্ষম হইনি।’ শাস্তা এরূপ বললেও সেই ভিক্ষুগণ দ্বিতীয়বারের মত নীরব রইলেন। ভগবান তৃতীয়বার ভিক্ষুগণকে আহ্বান করে বললেন- “ভিক্ষুগণ, তোমাদের মধ্যে একজন ভিক্ষুর মনেও কি বুদ্ধ, ধর্ম, সংঘ, মার্গ, পটিপদা সম্বন্ধে কোন প্রকার সন্দেহ, সংশয় রয়েছে? সন্দেহ থাকলে জিজ্ঞাসা কর। যাতে করে পরবর্তীতে এরূপ মনস্তাপ করতে না হয়- ‘শাস্তা আমাদের সামনে ছিলেন, অথচ সেই সম্মুখস্থ ভগবানকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে সক্ষম হইনি।’ শাস্তা এরূপ বললেও সেই ভিক্ষুগণ তৃতীয়বারের মতো নীরব রইলেন।

অতঃপর ভগবান ভিক্ষুগণকে আহ্বান করে বললেন- “ভিক্ষুগণ, যদি শাস্তার গৌরববশে জিজ্ঞাসা না কর, তাহলে বন্ধু বিবেচনা করে, বন্ধুর কাছে প্রকাশ করার মতো প্রকাশ করো।” শাস্তা এরূপ বললেও সেই ভিক্ষুগণ নীরব রইলেন। তখন আয়ুষ্মান আনন্দ ভগবানকে এরূপ বললেন- “অতি আশ্চর্য! ভন্তে, আমি অতীব প্রসন্ন। এই ভিক্ষুসঙ্ঘের মধ্যে একজন ভিক্ষুর মনেও বুদ্ধ, ধর্ম, সংঘ, মার্গ, পটিপদা সম্বন্ধে কোন প্রকার সন্দেহ, সংশয় নেই।”

আনন্দের এ’কথা শুনে ভগবান বললেন- “হে আনন্দ! তুমি প্রসন্ন বলতেছ। আনন্দ! তথাগতের জ্ঞানে ইহা জ্ঞাত যে- ‘এই ভিক্ষুসঙ্ঘের মধ্যে একজন ভিক্ষুর মনেও বুদ্ধ, ধর্ম, সংঘ, মার্গ, পটিপদা সম্বন্ধে কোন প্রকার সন্দেহ, সংশয় নেই’। আনন্দ, এই পাঁচশত ভিক্ষুর মধ্যে যে সবচেয়ে পশ্চাদ্বর্তী সেও স্রোতাপন্ন, অপায় বিনিপাত নিরয় হতে উত্তীর্ণ।” (ষষ্ঠ সূত্র)

৭.অচিন্তেয্যসুত্তং-অচিন্তনীয় সূত্র

৭৭. “হে ভিক্ষুগণ! চারটি বিষয় অচিন্তনীয়, চিন্তা করা উচিত নয়; যেগুলো চিন্তা করলে উম্মাদগ্রস্ত ও দুঃখের ভাগী হতে হয়। সেই চার বিষয় কি কি? যথা- বুদ্ধগণের বুদ্ধজ্ঞান অচিন্তনীয়, চিন্তা করা উচিত নয়; যা চিন্তা করলে উম্মাদগ্রস্ত ও দুঃখের ভাগী হতে হয়। ধ্যানীগণের ধ্যান বিষয় অচিন্তনীয়, চিন্তা করা উচিত নয়; যা চিন্তা করলে উম্মাদগ্রস্ত ও দুঃখের ভাগী হতে হয়। কর্ম বিপাক অচিন্তনীয়, চিন্তা করা উচিত নয়; যা চিন্তা করলে উম্মাদগ্রস্ত ও দুঃখের ভাগী হতে হয়। লোক চিন্তা অচিন্তনীয়, চিন্তা করা উচিত নয়; যা চিন্তা করলে উম্মাদগ্রস্ত ও দুঃখের ভাগী হতে হয়।” (সপ্তম সূত্র)

৮.দক্‌খিনসুত্তং-দাক্ষিণ্য সূত্র

৭৮. “হে ভিক্ষুগণ! দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এরূপ দাক্ষিণ্য আছে- যা দাতা পক্ষ হতে বিশুদ্ধ হয়, গ্রহীতা পক্ষ হতে হয় না। এরূপ দাক্ষিণ্য আছে- যা গ্রহীতা পক্ষ হতে বিশুদ্ধ হয়, দাতা পক্ষ হতে হয় না। এরূপ দাক্ষিণ্য আছে- যা দাতা পক্ষ হতেও বিশুদ্ধ হয় না, গ্রহীতা পক্ষ হতেও বিশুদ্ধ হয় না। এরূপ দাক্ষিণ্য আছে- যা দাতা পক্ষ হতেও বিশুদ্ধ হয়, গ্রহীতা পক্ষ হতেও বিশুদ্ধ হয়।

কিভাবে দাতা পক্ষ হতে দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ হয়, গ্রহীতা পক্ষ হতে হয় না? এজগতে দাতা শীলবান, কল্যাণধর্মী হয়; কিন্তু গ্রহীতা দুঃশীল, পাপধর্মী। এভাবে দাতা পক্ষ হতে দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ হয়, গ্রহীতা পক্ষ হতে হয় না।

কিভাবে গ্রহীতা পক্ষ হতে দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ হয়, দাতা পক্ষ হতে হয় না? এজগতে দাতা দুঃশীল, পাপধর্মী হয়; কিন্তু গ্রহীতা শীলবান, কল্যাণধর্মী। এভাবে গ্রহীতা পক্ষ হতে দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ হয়, দাতা পক্ষ হতে হয় না।

কিভাবে দাতা পক্ষ হতেও দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ হয় না, গ্রহীতা পক্ষ হতেও বিশুদ্ধ হয় না? এজগতে দাতাও দুঃশীল, পাপধর্মী হয়; গ্রহীতাও দুঃশীল, পাপধর্মী হয়। এভাবে দাতা পক্ষ হতেও দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ হয় না, গ্রহীতা পক্ষ হতেও বিশুদ্ধ হয় না।

কিভাবে দাতা পক্ষ হতেও দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ হয়, গ্রহীতা পক্ষ হতেও বিশুদ্ধ হয়? এজগতে দাতাও শীলবান, কল্যাণধর্মী হয়; গ্রহীতাও শীলবান, কল্যাণধর্মী হয়। এভাবে দাতা পক্ষ হতেও দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ হয়, গ্রহীতা পক্ষ হতেও বিশুদ্ধ হয়। এগুলো-ই চার প্রকার দাক্ষিণ্য বিশুদ্ধ।” (অষ্টম সূত্র)

৯.বণিজ্জসুত্তং-বাণিজ্য সূত্র

৭৯. একসময় আয়ুষ্মান শারীপুত্র ভগবানের কাছে উপস্থিত হলেন; উপস্থিত হয়ে ভগবানকে অভিবাদন করে একপার্শ্বে উপবেশন করেন। উপবিষ্ট অবস্থায় তিনি ভগবানকে এরূপ বললেন- “ভন্তে! কোন হেতুতে, কোন কারণে এজগতে কারোর কার্যকর বাণিজ্য ধ্বংস হয়? কারোর কার্যকর বাণিজ্য যথোচিতভাবে হয় না? কারোর কার্যকর বাণিজ্য যথোচিতভাবে হয়? কারোর কার্যকর বাণিজ্য পর অভিপ্রায়ে হয়?”

ভগবান বললেন- “হে শারীপুত্র! এজগতে কেউ (কোন ব্যক্তি) শ্রমণ-ব্রাহ্মণের নিকট উপস্থিত হওতঃ আহ্বান করে বলে ‘ভন্তে! আপনার অভিপ্রায় বা কি প্রয়োজন বলুন।’ (শ্রমণ-ব্রাহ্মণগণ নিজেদের প্রয়োজনীয় বলার পর) সে যা প্রদান করতে মনোভাব ব্যক্ত করে, তা প্রদান করে না। তথা হতে চ্যুত হয়ে সে পুনঃ জন্মগ্রহণ করে এবং যে যে বাণিজ্যে নিয়োজিত হয় তা ধ্বংস হয়।

এজগতে কেউ (কোন ব্যক্তি) শ্রমণ-ব্রাহ্মণের নিকট উপস্থিত হওতঃ আহ্বান করে বলে ‘ভন্তে! আপনার অভিপ্রায় বা কি প্রয়োজন বলুন।’ সে যা প্রদান করতে মনোভাব ব্যক্ত করে, তা যথোচিতভাবে প্রদান করে না। তথা হতে চ্যুত হয়ে সে পুনঃ জন্মগ্রহণ করে এবং যে যে বাণিজ্যে নিয়োজিত হয়, তা যথোচিত হয় না।

এজগতে কেউ (কোন ব্যক্তি) শ্রমণ-ব্রাহ্মণের নিকট উপস্থিত হওতঃ আহ্বান করে বলে ‘ভন্তে! আপনার অভিপ্রায় বা কি প্রয়োজন বলুন।’ সে যা প্রদান করতে মনোভাব ব্যক্ত করে, তা যথোচিতভাবে প্রদান করে। তথা হতে চ্যুত হয়ে সে পুনঃ জন্মগ্রহণ করে এবং যে যে বাণিজ্যে নিয়োজিত হয়, তা যথোচিতভাবে হয়।”

এজগতে কেউ (কোন ব্যক্তি) শ্রমণ-ব্রাহ্মণের নিকট উপস্থিত হওতঃ আহ্বান করে বলে ‘ভন্তে! আপনার অভিপ্রায় বা কি প্রয়োজন বলুন।’ সে যা প্রদান করতে মনোভাব ব্যক্ত করে, তা পর অভিপ্রায়ে প্রদান করে। তথা হতে চ্যুত হয়ে সে পুনঃ জন্মগ্রহণ করে এবং যে যে বাণিজ্যে নিয়োজিত হয়, তা পর অভিপ্রায়ে হয়।”

শারীপুত্র! এহেতুতে, একারণে এজগতে কারোর কার্যকর বাণিজ্য ধ্বংস হয়; কারোর কার্যকর বাণিজ্য যথোচিতভাবে হয় না; কারোর কার্যকর বাণিজ্য যথোচিতভাবে হয়; কারোর কার্যকর বাণিজ্য পর অভিপ্রায়ে হয়।” (নবম সূত্র)

১০.কম্বোজসুত্তং-কম্বোজ সূত্র

৮০. একসময় ভগবান কৌশম্বিতে ঘোষিতারামে অবস্থান করছিলেন। তখন আয়ুষ্মান আনন্দ ভগবানের নিকট উপস্থিত হয়ে অভিবাদন করতঃ একপার্শ্বে উপবেশন করলেন। উপবিষ্ট অবস্থায় তিনি ভগবানকে এরূপ বললেন-

“ভন্তে! কোন হেতুতে, কোন কারণে কোন স্ত্রীলোক সভায় উপস্থিত হয় না, কর্মে নিয়োজিত হয় না এবং কম্বোজে (কম্বোজ নগরে) গমন করে না?”

“হে আনন্দ! ক্রোধ স্বভাবের কারণে, ঈর্ষাপরায়ণতার কারণে, পরশ্রীকাতরতার কারণে, দুষপ্রাজ্ঞ হবার কারণে- এ’হেতুতে, একারণে কোন স্ত্রীলোক সভায় উপস্থিত হয় না, কর্মে নিয়োজিত হয় না, কম্বোজে গমন করে না। (দশম সূত্র)

সম্যক বর্গ সমাপ্ত

স্মারক গাথা ঃ

প্রধান, দৃষ্টি, সৎ পুরুষ, দুই শ্রেষ্ঠ মিলে পাঁচ,

কুশীনগর, অচিন্তনীয়, দাক্ষিণ্য, বাণিজ্য, কম্বোজ এ’দশ।