১. সংযোজনসুত্তং-সংযোজন সূত্র
১৩১. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন পুদগলের অধঃভাগীয় সংযোজন, উৎপত্তি লাভ সংযোজন এবং ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয় না। কোন পুদগলের অধঃভাগীয় সংযোজন প্রহীন হয়; কিন্তু উৎপত্তি লাভ সংযোজন ও ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয় না। কোন পুদগলের অধঃভাগীয় সংযোজন, উৎপত্তি লাভ সংযোজন প্রহীন হয়; কিন্তু ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয় না। কোন পুদগলের অধঃভাগীয় সংযোজন, উৎপত্তি লাভ এবং সংযোজন ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয়।
কোন পুদগলের অধঃভাগীয়, উৎপত্তি লাভ, ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয় না? সকৃদাগামী লাভী পুদগলের। এই পুদগলের অধঃভাগীয়, উৎপত্তি লাভ ও ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয় না।
কোন পুদগলের অধঃভাগীয় সংযোজন প্রহীন হয়; কিন্তু উৎপত্তি লাভ, ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয় না? উর্দ্ধস্রোতাসম্পন্ন অকনিষ্ট ব্রহ্মলোকগামির। এই পুদগলের অধঃভাগীয়, উৎপত্তি লাভ সংযোজন প্রহীন হয়; কিন্তু ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয় না।
কোন পুদগলের অধঃভাগীয়, উৎপত্তি লাভ সংযোজন প্রহীন হয়; কিন্তু ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয় না? অনাগামী লাভী পুদগলের। এই পুদগলের অধঃভাগীয় সংযোজন প্রহীন হয়; কিন্তু উৎপত্তি লাভ ও ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয় না।
কোন পুদগলের অধঃভাগীয়, উৎপত্তি লাভ, ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয়? অর্হতের। এই পুদগলের অধঃভাগীয়, উৎপত্তি লাভ, ভবপ্রাপ্তি সংযোজন প্রহীন হয়।
ভিক্ষুগণ, এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (প্রথম সূত্র)
২. পটিভানসুত্তং-প্রতিভ সূত্র
১৩২. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- যথার্থ প্রতিভ, কিন্তু ক্ষিপ্র প্রতিভ নয়; ক্ষিপ্র প্রতিভ, কিন্তু যথার্থ প্রতিভ নয়; যথার্থ প্রতিভ ও ক্ষিপ্র প্রতিভ; যথার্থ প্রতিভও নয়, ক্ষিপ্র প্রতিভও নয়। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (দ্বিতীয় সূত্র)
৩. উগ্ঘটিতঞঞূসুত্তং-উদ্ঘাটিতজ্ঞ সূত্র
১৩৩. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- উদ্ঘাটিতজ্ঞ (যিনি আভাষে সব বোঝেন), বিপশ্চিতজ্ঞ (যিনি সামান্য ব্যাখ্যায় মর্মার্থ বুঝতে পারেন), নীয়মান (যিনি পদে পদে বুঝিয়ে বুঝিয়ে অর্থবোধ লাভ করেন), পদ-পরম (যিনি পদমাত্র মুখস্থ করতে অক্ষম, অর্থবোধেও অক্ষম)। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (তৃতীয় সূত্র)
৪. উট্ঠানফলসুত্তং-উত্থানফল সূত্র
১৩৪. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- উত্থান ফলোপজীবি, কিন্তু কর্ম (পুণ্য) ফলোপজীবি নয়; কর্ম ফলোপজীবি কিন্তু উত্থান ফলোপজীবি নয়; উত্থান ফলোপজীবি ও কর্ম ফলোপজীবি; উত্থান ফলোপজীবিও নয়; কর্ম ফলোপজীবিও নয়। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (চতুর্থ সূত্র)
৫. সাবজ্জসুত্তং-সদোষ সূত্র
১৩৫. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- সদোষযুক্ত পুদগল, দোষবহূল পুদগল, অল্পদোষযুক্ত পুদগল, নির্দোষ পুদগল।
সদোষযুক্ত পুদগল কিরূপ? এজগতে কোন পুদগল দোষযুক্ত কায়-বাক্-মনোকর্ম সম্পাদন করে। এরূপ পুদগল সদোষযুক্ত।
দোষবহূল পুদগল কিরূপ? এজগতে কোন পুদগল বহুল দোষযুক্ত কায়-বাক্-মনোকর্ম সম্পাদন করে। অল্পই মাত্র নির্দোষমূলক কায়-বাক্-মনোকর্ম সম্পাদন করে। এরূপ পুদগল বহূল দোষযুক্ত।
অল্পদোষযুক্ত পুদগল কিরূপ? এজগতে কোন পুদগল বহু (পরিমাণ) নির্দোষমূলক কায়-বাক্-মনোকর্ম সম্পাদন করে। অপরদিকে নিতান্ত অল্প দোষযুক্ত কায়-বাক্-মনোকর্ম সম্পাদন করে। এরূপ পুদগল অল্পদোষযুক্ত।
নির্দোষ পুদগল কিরূপ? এজগতে কোন পুদগল কেবল নির্দোষমূলক কায়-বাক্-মনোকর্ম সম্পাদন করে। এরূপ পুদগল নির্দোষ।
ভিক্ষুগণ, জগতে এই চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান।” (পঞ্চম সূত্র)
৬. পঠমসীলসুত্তং-শীল সূত্র (প্রথম)
১৩৬. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন পুদগল শীল, সমাধি, প্রজ্ঞা কোনটা-ই পরিপূরণকারী হয় না। কোন পুদগল শীল পরিপূরণকারী; কিন্তু সমাধি, প্রজ্ঞা পরিপূরণকারী হয় না। কোন পুদগল শীল, সমাধি পরিপূরণকারী, কিন্তু প্রজ্ঞা পরিপূরণকারী হয় না। কোন পুদগল শীল, সমাধি, প্রজ্ঞা পরিপূরণকারী হয়। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (ষষ্ঠ সূত্র)
৭. দুতিযসীলসুত্তং- শীল সূত্র (দ্বিতীয়)
১৩৭. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন পুদগল শীল গৌরবী, শীল অধিপতি; সমাধি গৌরবী, সমাধি অধিপতি; প্রজ্ঞা গৌরবী, প্রজ্ঞা অধিপতি কোনটা-ই হয় না। কোন পুদগল শীল গৌরবী, শীল অধিপতি হয়; কিন্তু সমাধি গৌরবী, সমাধি অধিপতি; প্রজ্ঞা গৌরবী, প্রজ্ঞা অধিপতি হয় না। কোন পুদগল শীল গৌরবী, শীল অধিপতি; সমাধি গৌরবী, সমাধি অধিপতি হয়; কিন্তু প্রজ্ঞা গৌরবী, প্রজ্ঞা অধিপতি হয় না। কোন পুদগল শীল গৌরবী, শীল অধিপতি; সমাধি গৌরবী, সমাধি অধিপতি; প্রজ্ঞা গৌরবী, প্রজ্ঞা অধিপতি হয়। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (সপ্তম সূত্র)
৮. নিকট্ঠসুত্তং-উন্নত সূত্র
১৩৮. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- উন্নতকায় কিন্তু অনুন্নত চিত্তসম্পন্ন; অনুন্নতকায় কিন্তু উন্নত চিত্তসম্পন্ন; অনুন্নতকায় এবং অনুন্নত চিত্তসম্পন্ন; উন্নতকায় এবং উন্নত চিত্তসম্পন্ন।
কিরূপ পুদগল উন্নতকায় কিন্তু অনুন্নত চিত্তসম্পন্ন? এজগতে কোন পুদগল গভীর অরণ্যে, নির্জন স্থানে বাস করে কিন্তু কাম, ব্যাপাদ, বিহিংসা চিন্তায় মগ্ন থাকে। এরূপ পুদগল উন্নতকায় কিন্তু অনুন্নত চিত্তসম্পন্ন।
কিরূপ পুদগল অনুন্নতকায় কিন্তু উন্নত চিত্তসম্পন্ন? এজগতে কোন পুদগল গভীর অরণ্যে, নির্জন স্থানে বাস করে না কিন্তু নৈষ্ক্রম্য, অব্যাপাদ, অবিহিংসা চিন্তায় নিমগ্ন থাকে। এরূপ পুদগল অনুন্নতকায় কিন্তু উন্নত চিত্তসম্পন্ন।
কিরূপ পুদগল অনুন্নতকায় এবং অনুন্নত চিত্তসম্পন্ন? এজগতে কোন পুদগল গভীর অরণ্যে, নির্জন স্থানে বাস করে না এবং কাম, ব্যাপাদ, বিহিংসা চিন্তায় মগ্ন থাকে। এরূপ পুদগল অনুন্নতকায় এবং অনুন্নত চিত্তসম্পন্ন।
কিরূপ পুদগল উন্নতকায় এবং উন্নত চিত্তসম্পন্ন? এজগতে কোন পুদগল গভীর অরণ্যে, নির্জন স্থানে বাস করে এবং নৈষ্ক্রম্য, অব্যাপাদ, অবিহিংসা চিন্তায় নিমগ্ন থাকে। এরূপ পুদগল উন্নতকায় এবং উন্নত চিত্তসম্পন্ন। জগতে এই চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান।” (অষ্টম সূত্র)
৯. ধম্মকথিকসুত্তং-ধর্মকথিক সূত্র
১৩৯. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার ধর্মকথিক বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন ধর্মকথিক পরিষদে অল্পমাত্র ভাষণ করে, কিন্তু সেটা অনর্থপূর্ণ। পরিষদও উক্ত ভাষণের অর্থ-অনর্থ বিবেচনায় দক্ষ নয়। এধর্মকথিক যেরূপ পরিষদ সেরূপ ধর্মকথিক বলে অভিহিত।
কোন ধর্মকথিক পরিষদে অল্পমাত্র ভাষণ করে, কিন্তু সেটা অর্থপূর্ণ। পরিষদও উক্ত ভাষণের অর্থ-অনর্থ বিবেচনায় সুদক্ষ। এধর্মকথিক যেরূপ পরিষদ সেরূপ ধর্মকথিক বলে অভিহিত।
কোন ধর্মকথিক পরিষদে বহু ভাষণ করে, কিন্তু সেটা অনর্থপূর্ণ। পরিষদও উক্ত ভাষণের অর্থ-অনর্থ বিবেচনায় দক্ষ নয়। এধর্মকথিক যেরূপ পরিষদ সেরূপ ধর্মকথিক বলে অভিহিত।
কোন ধর্মকথিক পরিষদে বহু ভাষণ করে, এবং সেটা অর্থপূর্ণ। পরিষদও উক্ত ভাষণের অর্থ-অনর্থ বিবেচনায় সুদক্ষ। এধর্মকথিক যেরূপ পরিষদ সেরূপ ধর্মকথিক বলে অভিহিত। জগতে এই চার প্রকার ধর্মকথিক বিদ্যমান।” (নবম সূত্র)
১০.বাদীসুত্তং-বক্তা সূত্র
১৪০. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার বক্তা বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কোন বক্তা অর্থ অনুসারে ব্যাখ্যা করে, কিন্তু ব্যঞ্জন অনুসারে ব্যাখ্যা করে না। কোন বক্তা ব্যঞ্জন অনুসারে ব্যাখ্যা করে, কিন্তু অর্থ অনুসারে ব্যাখ্যা করে না। কোন বক্তা অর্থ অনুসারেও ব্যাখ্যা করে এবং ব্যঞ্জন অনুসারেও ব্যাখ্যা করে। কোন বক্তা অর্থ অনুসারেও ব্যাখ্যা করে না এবং ব্যঞ্জন অনুসারেও ব্যাখ্যা করে না। এই চার প্রকার বক্তা। এটা অস্থানে অনবকাশ যে, শুধুমাত্র চারি প্রতিসম্ভিদায় সমন্বিত পুদগলই অর্থ ও ব্যঞ্জন অনুসারে ব্যাখ্যা করতে পারে।” (দশম সূত্র)
পুদগল বর্গ সমাপ্ত
স্মারক গাথা-
সংযোজন, প্রতিভ, উদ্ঘাটিতজ্ঞ, উত্থান সহ পাঁচ,
সদোষ, দুই শীল, উন্নত, ধর্মকথিক মিলে দশ।