(১১) ১. বলাহকবগ্গো-বলাহক বর্গ

১. পঠমবলাহকসুত্তং-বলাহক সূত্র (প্রথম)

১০১. আমি এরূপ শুনেছি- একসময় ভগবান শ্রাবস্তীতে অনাথপিণ্ডিক কর্তৃক নির্মিত জেতবন বিহারে অবস্থান করছিলেন। তখন ভগবান “হে ভিক্ষুগণ” বলে ভিক্ষুগণকে আহ্বান করলেন। “হ্যাঁ ভদন্ত” বলে ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর প্রদান করলেন। ভগবান এরূপ বললেন-

হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার বলাহক বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- গর্জন করে, কিন্তু বর্ষণ করে না; বর্ষণ করে, কিন্তু গর্জন করে না; গর্জনও করে না, বর্ষণও করে না; গর্জনও করে, বর্ষণও করে। এ’চার প্রকার বলাহক। ঠিক এরূপে, ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার বলাহক সদৃশ পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- গর্জনকারী কিন্তু বর্ষণকারী নয়; বর্ষণকারী কিন্তু গর্জনকারী নয়; গর্জনকারীও নয়, বর্ষণকারীও নয়; গর্জনকারী ও বর্ষণকারী।

কিরূপ পুদগল গর্জনকারী কিন্তু বর্ষণকারী নয়? এজগতে কোন পুদগল বক্তা হয় কিন্তু কর্তা হয় না। এরূপ পুদগল গর্জনকারী কিন্তু বর্ষণকারী নয়। যেমন কোন বলাহক গর্জন করে কিন্তু বর্ষণ করে না। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল বর্ষণকারী কিন্তু গর্জনকারী নয়? এজগতে কোন পুদগল কর্তা হয় কিন্তু বক্তা হয় না। এরূপ পুদগল বর্ষণকারী কিন্তু গর্জনকারী নয়। যেমন কোন বলাহক বর্ষণ করে কিন্তু গর্জন করে না। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল গর্জনকারীও নয় বর্ষণকারীও নয়? এজগতে কোন পুদগল বক্তাও হয় না, কর্তাও হয় না। এরূপ পুদগল গর্জনকারীও নয়, বর্ষণকারীও নয়। যেমন কোন বলাহক গর্জনও করে না, বর্ষণও করে না। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল গর্জনকারী ও বর্ষণকারী? এজগতে কোন পুদগল বক্তাও হয়, কর্তাও হয়। এরূপ পুদগল গর্জনকারী ও বর্ষণকারী। যেমন কোন বলাহক গর্জনও করে, বর্ষণও করে। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি। এই চার প্রকার বলাহক সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (প্রথম সূত্র)

২. দুতিযবলাহক সুত্তং-বলাহক সূত্র (দ্বিতীয়)

১০২. “হে ভিক্ষুগণ! বলাহক চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- গর্জন করে কিন্তু বর্ষণ করে না; বর্ষণ করে কিন্তু গর্জন করে না; গর্জনও করে না, বর্ষণও করে না; গর্জনও করে, বর্ষণও করে। এ’চার প্রকার বলাহক। ভিক্ষুগণ, ঠিক এরূপে চার প্রকার বলাহক সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- গর্জনকারী কিন্তু বর্ষণকারী নয়; বর্ষণকারী কিন্তু গর্জনকারী নয়; গর্জনকারীও নয়, বর্ষণকারীও নয়; গর্জনকারী ও বর্ষণকারী।

কিরূপ পুদগল গর্জনকারী কিন্তু বর্ষণকারী নয়? এজগতে কোন পুদগল সূত্র, গেয়, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, উদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল ইত্যাদি ধর্মসমূহ সম্পূর্ণরূপে শিক্ষা করে। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’ বলে যথাযথভাবে জানে না, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’ বলে যথাযথভাবে জানে না, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’ বলে যথাযথভাবে জানে না, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপদা’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল গর্জনকারী কিন্তু বর্ষণকারী নয়। যেমন কোন বলাহক গর্জন করে কিন্তু বর্ষণ করে না। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল বর্ষণকারী কিন্তু গর্জনকারী নয়? এজগতে কোন পুদগল সূত্র, গেয়, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল ইত্যাদি ধর্মসমূহ সম্পূর্ণরূপে শিক্ষা করে না। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’ বলে যথাযথভাবে জানে, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’ বলে যথাযথভাবে জানে, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’ বলে যথাযথভাবে জানে, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপদা’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল বর্ষণকারী কিন্তু গর্জনকারী নয়। যেমন কোন বলাহক বর্ষণ করে কিন্তু গর্জন করে না। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল গর্জনকারীও নয়, বর্ষণকারীও নয়? এজগতে কোন পুদগল সূত্র, গেয়, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল ইত্যাদি ধর্মসমূহ সম্পূর্ণরূপে শিক্ষা করে না। অন্যদিকে সে ‘এটা দুঃখ’ বলে যথাযথভাবে জানে না, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’ বলে যথাযথভাবে জানে না, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’ বলে যথাযথভাবে জানে না, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপদা’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল গর্জনকারীও নয়, বর্ষণকারীও নয়। যেমন কোন বলাহক গর্জনও করে না বর্ষণও করে না। এ’পুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল গর্জনকারী ও বর্ষণকারী? এজগতে কোন পুদগল সূত্র, গেয়, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, উদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল ইত্যাদি ধর্মসমূহ সম্পূর্ণরূপে শিক্ষা করে এবং সে ‘এটা দুঃখ’ বলে যথাযথভাবে জানে, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’ বলে যথাযথভাবে জানে, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’ বলে যথাযথভাবে জানে, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপদা’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল গর্জনকারী ও বর্ষণকারী। যেমন কোন বলাহক গর্জনও করে বর্ষণও করে। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি। ভিক্ষুগণ, এই চার প্রকার বলাহক সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (দ্বিতীয় সূত্র)

৩. কুম্ভসুত্তং-কুম্ভ সূত্র

১০৩. “হে ভিক্ষুগণ! কুম্ভ চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- শূন্য কিন্তু বহিরাবৃত; পূর্ণ কিন্তু অনাবৃত; শূন্য ও অনাবৃত; পূর্ণ ও বহিরাবৃত। এ’চার প্রকার কুম্ভ। ভিক্ষুগণ, ঠিক এরূপে চার প্রকার কুম্ভ সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান। যেই চার প্রকার কি কি? শূন্যগর্ভ কিন্তু বহিরাবৃত, পূর্ণগর্ভ কিন্তু অনাবৃত, শূন্যগর্ভ ও অনাবৃত, পূর্ণগর্ভ ও বহিরাবৃত।

কিরূপ পুদগল শূন্যগর্ভ কিন্তু বহিরাবৃত? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার খুবই সন্তোষজনক। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল শূন্যগর্ভ কিন্তু বহিরাবৃত। যেমন কোন কুম্ভ শূন্য, কিন্তু বহিরাকৃত। এ পুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল পূর্ণগর্ভ কিন্তু অনাবৃত? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার সন্তোষজনক নয়। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল পূর্ণগর্ভ কিন্তু অনাবৃত। যেমন কোন কুম্ভ পূর্ণ, কিন্তু অনাবৃত। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল শূন্যগর্ভ ও অনাবৃত? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার সন্তোষজনক নয়। এবং সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল শূন্যগর্ভ ও অনাবৃত। যেমন কোন কুম্ভ শূন্য ও অনাবৃত। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল পূর্ণগর্ভ ও আবৃত? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার খুবই সন্তোষজনক। এবং সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল পূর্ণগর্ভ ও আবৃত। যেমন কোন কুম্ভ পূর্ণ ও আবৃত। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি। ভিক্ষুগণ, এই চার প্রকার কুম্ভ সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (তৃতীয় সূত্র)

৪. উদকরহদসুত্তং-হ্রদ সূত্র

১০৪. “হে ভিক্ষুগণ! হ্রদ চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- অগভীর কিন্তু গভীর প্রতীয়মান; গভীর কিন্তু অগভীর প্রতীয়মান; অগভীর, অগভীর প্রতীয়মান; গভীর, গভীর প্রতীয়মান। এ’চার প্রকার হ্রদ। ভিক্ষুগণ, ঠিক এরূপে চার প্রকার হ্রদ সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- অগভীর কিন্তু গভীর প্রকৃতির; গভীর কিন্তু অগভীর প্রকৃতির; অগভীর এবং অগভীর প্রকৃতির; গভীর এবং গভীর প্রকৃতির।

কিরূপ পুদগল অগভীর কিন্তু গভীর প্রকৃতির? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি ও পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার খুবই সন্তোষজনক। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল অগভীর কিন্তু গভীর প্রকৃতির। যেমন কোন হ্রদ অগভীর, কিন্তু গভীর প্রতীয়মান। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল গভীর কিন্তু অগভীর প্রকৃতির? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার সন্তোষজনক নয়। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল গভীর কিন্তু অগভীর প্রকৃতির। যেমন কোন হ্রদ গভীর কিন্তু অগভীর প্রতীয়মান। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল অগভীর এবং অগভীর প্রকৃতির? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার সন্তোষজনক নয়। এবং সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল অগভীর এবং অগভীর প্রকৃতির। যেমন কোন হ্রদ অগভীর এবং অগভীর প্রতীয়মান। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল গভীর এবং গভীর প্রকৃতির? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার খুবই সন্তোষজনক। এবং সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল গভীর এবং গভীর প্রকৃতির। যেমন কোন হ্রদ গভীর এবং গভীর প্রতীয়মান। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

ভিক্ষুগণ, এই চার প্রকার হ্রদ সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (চতুর্থ সূত্র)

৫. অম্বসুত্তং-আম্র সূত্র

১০৫. “হে ভিক্ষুগণ! আম্র চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কাঁচা কিন্তু পাকা প্রতীয়মান; পাকা কিন্তু কাঁচা প্রতীয়মান; কাঁচা এবং কাঁচা প্রতীয়মান; পাকা এবং পাকা প্রতীয়মান। এ’চার প্রকার আম্র। ভিক্ষুগণ, ঠিক এরূপে চার প্রকার আম্র সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কাঁচা কিন্তু পাকা প্রকৃতির; পাকা কিন্তু কাঁচা প্রকৃতির; কাঁচা এবং কাঁচা প্রকৃতির; পাকা এবং পাকা প্রকৃতির।

কিরূপ পুদগল কাঁচা কিন্তু পাকা প্রকৃতির? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার খুবই সন্তোষজনক। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল কাঁচা কিন্তু পাকা প্রকৃতির। যেমন কোন আম্র কাঁচা কিন্তু পাকা প্রতীয়মান। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল পাকা কিন্তু কাঁচা প্রকৃতির? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার সন্তোষজনক নয়। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল পাকা কিন্তু কাঁচা প্রকৃতির। যেমন কোন আম্র পাকা কিন্তু কাঁচা প্রতীয়মান। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল কাঁচা এবং কাঁচা প্রকৃতির? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার সন্তোষজনক নয়। এবং সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল কাঁচা এবং কাঁচা প্রকৃতির। যেমন কোন আম্র কাঁচা এবং কাঁচা প্রতীয়মান। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল পাকা এবং পাকা প্রকৃতির? এজগতে কোন পুদগলের গমনাগমন, অবলোকন, বিলোকন, সংকোচন, প্রসারণ; সংঘাটি, পাত্র-চীবর ধারণ ইত্যাদি বাহ্যিক ব্যবহার খুবই সন্তোষজনক। এবং সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধগামিনী প্রতিপাদ’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল পাকা এবং পাকা প্রকৃতির। যেমন কোন আম্র পাকা এবং পাকা প্রতীয়মান। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

ভিক্ষুগণ, এই চার প্রকার আম্র সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (পঞ্চম সূত্র)

৬. দুতিয অম্বসুত্তং- আম্র সূত্র (দ্বিতীয়)

(এ’সূত্রটি ষষ্ঠ সঙ্গীতি অট্‌ঠকথায় দেখা গেলেও মূল পালিপুস্তকে কোথাও দেখা যায় না)

৭. মূসিকসুত্তং-মূষিক সূত্র

১০৫. “হে ভিক্ষুগণ! মূষিক চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- গর্ত খনন করে কিন্তু গর্তে বাস করে না; গর্তে বাস করে কিন্তু গর্ত খনন করে না; গর্ত খননও করে না, গর্তে বাসও করে না; গর্ত খননও করে, গর্তে বাসও করে। এ’চার প্রকার মূষিক। ভিক্ষুগণ, ঠিক এরূপে চার প্রকার মূষিক সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- গর্ত খননকারী কিন্তু গর্ত নিবাসী নয়; গর্ত নিবাসী কিন্তু গর্ত খননকারী নয়; গর্ত খননকারীও নয়, গর্ত নিবাসীও নয়; গর্ত খননকারী এবং গর্ত নিবাসী।

কিরূপ পুদগল গর্ত খননকারী কিন্তু গর্ত নিবাসী নয়? এজগতে কোন পুদগল সূত্র, গেয়্য, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল ইত্যাদি ধর্মসমূহ সম্পূর্ণরূপে শিক্ষা করে। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ গামিনী প্রতিপদা’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল গর্ত খননকারী কিন্তু গর্ত নিবাসী নয়। যেমন কোন মূষিক গর্ত খনন করে কিন্তু গর্তে বাস করে না। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল গর্ত নিবাসী কিন্তু গর্ত খননকারী নয়? এজগতে কোন পুদগল সূত্র, গেয়্য, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল ইত্যাদি ধর্মসমূহ সম্পূর্ণরূপে শিক্ষা করে না। কিন্তু সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ গামিনী প্রতিপদা’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল গর্ত নিবাসী কিন্তু গর্ত খননকারী নয়। যেমন কোন মূষিক গর্তে বাস করে কিন্তু গর্ত খনন করে না। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল গর্ত খননকারীও নয়, গর্ত নিবাসীও নয়? এজগতে কোন পুদগল সূত্র, গেয়্য, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল ইত্যাদি ধর্মসমূহ সম্পূর্ণরূপে শিক্ষা করে না। এবং সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ গামিনী প্রতিপদা’ বলে যথাযথভাবে জানে না। এরূপ পুদগল গর্ত খননকারীও নয়, গর্ত নিবাসীও নয়। যেমন কোন মূষিক গর্ত খননও করে না, গর্তে বাসও করে না। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল গর্ত খননকারী এবং গর্ত নিবাসী? এজগতে কোন পুদগল সূত্র, গেয়্য, ব্যাকরণ, গাথা, উদান, ইতিবুত্তক, জাতক, অদ্ভুতধর্ম, বেদল্ল ইত্যাদি ধর্মসমূহ সম্পূর্ণরূপে শিক্ষা করে। এবং সে ‘এটা দুঃখ’, ‘এটা দুঃখ সমুদয়’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ’, ‘এটা দুঃখ নিরোধ গামিনী প্রতিপদা’ বলে যথাযথভাবে জানে। এরূপ পুদগল গর্ত খননকারী এবং গর্ত নিবাসী। যেমন কোন মূষিক গর্ত খনন করে এবং গর্তে বাস করে। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

ভিক্ষুগণ, এই চার প্রকার মূষিক সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (সপ্তম সূত্র)

৮. বলীবদ্দসুত্তং-ষাড় সূত্র

১০৮. “হে ভিক্ষুগণ! ষাড় চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- স্বগবচণ্ড কিন্তু পরগবচণ্ড নয়; পরগবচণ্ড কিন্তু স্বগবচণ্ড নয়; স্বগবচণ্ড ও পরগবচণ্ড; স্বগবচণ্ডও নয়, পরগবচণ্ডও নয়। এ’চার প্রকার ষাড়। ভিক্ষুগণ, ঠিক এরূপে চার প্রকার ষাড় সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- স্বদলচণ্ড কিন্তু পরদলচণ্ড নয়; পরদলচণ্ড কিন্তু স্বদলচণ্ড নয়; স্বদলচণ্ড ও পরদলচণ্ড; স্বদলচণ্ডও নয়, পরদলচণ্ডও নয়।

কিরূপ পুদগল স্বদলচণ্ড কিন্তু পরদলচণ্ড নয়? এজগতে কোন পুদগল আপন পরিষদ বা আত্মীয়-স্বজনের সাথে ঝগড়া-বিবাদ করে কিন্তু অপরের (বাইরের লোকজন) সাথে ঝগড়া-বিবাদ করে না। এরূপ পুদগল স্বদলচণ্ড কিন্তু পরদলচণ্ড নয়। যেমন, কোন ষাড় স্ব-দলীয় গো সবকে নানারূপ উৎপীড়ন করে, কিন্তু অন্য গো সবকে উৎপীড়ন করে না। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল পরদলচণ্ড কিন্তু স্বদলচণ্ড নয়? এজগতে কোন পুদগল অপরের সাথে ঝগড়া-বিবাদ করে, কিন্তু আত্মীয়-স্বজনের সাথে ঝগড়া-বিবাদ করে না। এরূপ পুদগল পরদলচণ্ড কিন্তু স্বদলচণ্ড নয়। যেমন, কোন ষাড় অপরাপর গো সবকে উৎপীড়ন করে, কিন্তু স্বদলচণ্ড গো সবকে উৎপীড়ন করে না। এপুদলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল স্বদলচণ্ড ও পরদলচণ্ড? এজগতে কোন পুদগল আত্মীয়-স্বজনের সাথেও ঝগড়া-বিবাদ করে, অপরের সাথেও ঝগড়া-বিবাদ করে। এরূপ পুদগল স্বদলচণ্ড ও পরদলচণ্ড। যেমন, কোন ষাড় স্ব-দলীয় গো সব এবং অপরাপর গো সবকে নানারূপে উৎপীড়ন করে। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদ্গল স্বদলচণ্ডও নয় পরদলচণ্ডও নয়? এজগতে কোন পুদ্গল আত্মীয়-স্বজনের সাথেও ঝগড়া-বিবাদ করে না, অপরের সাথেও ঝগড়াও ঝগড়া-বিবাদ করে না। এরূপ পুদ্গল স্বদলচণ্ডও নয় পরদলচণ্ডও নয়। যেমন কোন ষাড় স্ব-দলীয় গো সবকেও নানাভাবে উৎপীড়ন কর না, অপরাপর গো সবকেও নানাভাবে উৎপীড়ন করে না। এ’পুদ্গলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

ভিক্ষুগণ, এই চার প্রকার ষাড় সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (অষ্টম সূত্র)

৯. রূক্‌খসুত্তং-বৃক্ষ সূত্র

১০৯. “হে ভিক্ষুগণ! বৃক্ষ চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- আঁশময়-আঁশবেষ্টিত; আঁশময়-সারবেষ্টিত; সারময়-আঁশবেষ্টিত; সারময়-সারবেষ্টিত। এ’চার প্রকার বৃক্ষ। ভিক্ষুগণ, ঠিক এরূপে চার প্রকার বৃক্ষ সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- আঁশ সমন্বিত-আঁশ পরিবৃত; আঁশ সমন্বিত-সার পরিবৃত; সার সমন্বিত-আঁশ পরিবৃত; সার সমন্বিত-সার পরিবৃত।

কিরূপ পুদগল আঁশ সমন্বিত-আঁশ পরিবৃত? এজগতে কোন পুদগল স্বয়ং দুঃশীল, পাপধর্ম পরায়ণ হয় এবং তার পরিষদও দুঃশীল, পাপধর্ম পরায়ণ হয়ে থাকে। এরূপ পুদগল আঁশ সমন্বিত-আঁশ পরিবৃত। যেমন কোন বৃক্ষ আঁশময়-আঁশবেষ্টিত। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল আঁশ সমন্বিত-সার পরিবৃত? এজগতে কোন পুদগল স্বয়ং দুঃশীল, পাপধর্ম পরায়ণ হয়, কিন্তু তার পরিষদ শীলবান, কল্যাণধর্ম পরায়ণ হয়ে থাকে। এরূপ পুদগল আঁশ সমন্বিত-সার পরিবৃত। যেমন কোন বৃক্ষ আঁশময়-সারবেষ্টিত। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল সার সমন্বিত-আঁশ পরিবৃত? এজগতে কোন পুদগল নিজে সুশীল, কল্যাণধর্ম পরায়ণ হয়, কিন্তু তার পরিষদ দুঃশীল, পাপধর্ম পরায়ণ হয়ে থাকে। এরূপ পুদগল সার সমন্বিত-আঁশ পরিবৃত। যেমন কোন বৃক্ষ সারময়-আঁশবেষ্টিত। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল সার সমন্বিত-সার পরিবৃত? এজগতে কোন পুদগল স্বয়ং সুশীল, কল্যাণধর্ম পরায়ণ হয়; তার পরিষদও সুশীল, কল্যাণধর্ম পরায়ণ হয়ে থাকে। এরূপ পুদগল সার সমন্বিত-সারবেষ্টিত। যেমন কোন বৃক্ষ সারময়-সারবেষ্টিত। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

ভিক্ষুগণ, এই চার প্রকার বৃক্ষ সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (অষ্টম সূত্র)

১০.আসীবিসসুত্তং-আশীবিষ সূত্র

১১০. “হে ভিক্ষুগণ! সর্প চার প্রকার। সেই চার প্রকার সর্প কি কি? যথা- আগতবিষ কিন্তু ঘোরবিষ নয়; ঘোরবিষ কিন্তু আগতবিষ নয়; আগতবিষ ও ঘোরবিষ; আগতবিষও নয়, ঘোরবিষও নয়। এ’চার প্রকার আশীবিষ বা সর্প। ভিক্ষুগণ, ঠিক এরূপে চার প্রকার সর্প সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- আগতবিষ কিন্তু ঘোরবিষ নয়; ঘোরবিষ কিন্তু আগতবিষ নয়; আগতবিষ ও ঘোরবিষ, আগতবিষও নয়, ঘোরবিষও নয়।

কিরূপ পুদগল আগতবিষ কিন্তু ঘোরবিষ নয়? এজগতে কোন পুদগল সহসা রেগে যায়। তবে সেই রাগ বেশীক্ষণ স্থায়ী হয় না। এরূপ পুদগল আগতবিষ কিন্তু ঘোরবিষ নয়। যেমন কোন সর্পের দন্তে সহসা বিষ আসে, কিন্তু তা ভয়ঙ্কর নয়। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল ঘোরবিষ কিন্তু আগতবিষ নয়? এজগতে কোন পুদগল সহসা রেগে যায় না; কিন্তু কোন কারণে একবার রেগে গেলে দীর্ঘকাল ব্যাপী স্থায়ী হয়। এরূপ পুদগল ঘোরবিষ কিন্তু আগতবিষ নয়। যেমন কোন সর্পের দন্তে সহসা বিষ আসে না, কিন্তু তা’ ভয়ঙ্কর। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল আগতবিষ ও ঘোরবিষ? এজগতে কোন পুদগল সহসা রেগে যায় এবং সেই রাগ দীর্ঘকাল ব্যাপী স্থায়ী হয় (সহজে ত্যাগ করতে পারে না)। এরূপ পুদগল আগতবিষ ও ঘোরবিষ। যেমন কোন সর্পের দন্তে সহসা বিষ আসে এবং তা ভয়ঙ্কর (সহসা নামে না)। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

কিরূপ পুদগল আগতবিষও নয়, ঘোরবিষও নয়? এজগতে কোন পুদগল সহসা রেগে যায় না এবং রেগে গেলেও অল্পক্ষণমাত্র স্থায়ী হয়। এরূপ পুদগল আগতবিষও নয়, ঘোরবিষও নয়। যেমন কোন সর্পের দন্তে সহসা বিষ আসে না, আসলেও তা ভয়ঙ্কর নয়। এপুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।

ভিক্ষুগণ, এই চার প্রকার সর্প সদৃশ পুদগল জগতে বিদ্যমান।”

বলাহক বর্গ প্রথম সমাপ্ত

স্মারক গাথা-

দুই বলাহক, কুম্ভ আর হ্রদ, আম্র দুই,

মূষিক, ষাড়, বৃক্ষ, সর্প মিলে দশম।