১. সিক্খাপদসুত্তং-শিক্ষাপদ সূত্র
২০১. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে অসৎপুরুষ, অসৎপুরুষের চেয়ে অসৎপুরুষতর এবং সৎপুরুষ, সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর সম্বন্ধে দেশনা করব। তোমার তা শ্রবণ কর; উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ, ভদন্ত” বলে সেই ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর প্রদান করলেন। অতঃপর ভগবান এরূপ বললেন-
“ভিক্ষুগণ! অসৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যাকারী, অদত্তবস্তু গ্রহণকারী, মিথ্যাকামাচারী, মিথ্যাভাষী ও সুরা-মদ্যপায়ী বা সেবনকারী হয়। একে বলে অসৎপুরুষ।
অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণীহত্যাকারী হয় এবং অপরকেও প্রাণীহত্যা করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তবস্তু গ্রহণকারী হয় এবং অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ করতে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকামাচারী হয় এবং অপরকেও মিথ্যাকামাচারে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাভাষণকারী হয় এবং অপরকেও মিথ্যাভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সুরা-মদ্যপায়ী হয় আর অপরকেও সুরা-মদ্যপানে উৎসাহিত করে। একে বলে অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর।
সৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়, অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়, মিথ্যাকামাচার হতে বিরত হয়, মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয় এবং সুরা-মদ্যপান হতে বিরত হয়। ভিক্ষুগণ! একে বলে সৎপুরুষ।
সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয় এবং অপরকেও প্রাণীহত্যা হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয় এবং অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকামাচার হতে বিরত থাকে এবং অপরকেও মিথ্যাকামাচার হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয় এবং অপরকেও মিথ্যাভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সুরা-মদ্যপান হতে বিরত হয় এবং অপরকেও সুরা-মদ্যপান হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর।” (প্রথম সূত্র)
২. অস্সদ্ধসুত্তং-অশ্রদ্ধা সূত্র
২০২. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে অসৎপুরুষ, অসৎপুরুষ চেয়েও অসৎপুরুষতর এবং সৎপুরুষ, সৎপুরুষ চেয়েও সৎপুরুষতর সম্বন্ধে দেশনা করব। তোমার তা শ্রবণ কর; উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ ভদন্ত, বলে সেই ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর প্রদান করলেন। অতঃপর ভগবান এরূপ বললেন-
“হে ভিক্ষুগণ! অসৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি অশ্রদ্ধাসম্পন্ন হয়; পাপের প্রতি নির্লজ্জী, পাপের প্রতি নির্ভীক, অল্পশ্রুত, হয়; এবং আলস্যপরায়ণ, বিস্মৃতিসম্পন্ন ও দুষপ্রাজ্ঞ হয়। ভিক্ষুগণ! একে বলে অসৎপুরুষ।
অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে অশ্রদ্ধাসম্পন্ন হয় এবং অপরকেও অশ্রদ্ধাসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পাপের প্রতি নির্লজ্জী হয়ে অপরকেও পাপের প্রতি নির্লজ্জী হবার জন্য উৎসহিত করে। নিজেই পাপের প্রতি নির্ভীক হয়ে অপরকেও পাপের প্রতি নির্ভীক হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অল্পশ্রুত হয়ে অপরকেও অল্পশ্রুত হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে আলস্যপরায়ণ হয়ে অপরকেও আলস্যপরায়ণ হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে বিস্মৃতিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও বিস্মৃতিসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে দুষপ্রাজ্ঞ হয়ে অপরকেও দুষপ্রাজ্ঞ হবার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর।
সৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি শ্রদ্ধাসম্পন্ন হয়, পাপের প্রতি লজ্জাশীল, পাপের প্রতি ভয়শীল, বহুশ্রুত, আরদ্ধবীর্য, স্মৃতিমান এবং প্রজ্ঞাবান হয়। একে বলে সৎপুরুষ।
সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে শ্রদ্ধাসম্পন্ন হয়ে অপরকেও শ্রদ্ধাসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পাপের প্রতি লজ্জাশীল হয়ে অপরকেও পাপের প্রতি লজ্জাশীল হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পাপের প্রতি ভয়শীল হয়ে অপরকেও পাপের প্রতি ভয়শীল হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে বহুশ্রুত হয়ে অপরকেও বহুশ্রুত হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে আরদ্ধবীর্য হয়ে অপরকেও আরদ্ধবীর্য হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজেই স্মৃতিমান হয়ে অপরকেও স্মৃতিমান হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে প্রজ্ঞাবান হয়ে অপরকেও প্রজ্ঞাবান হবার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর।” (দ্বিতীয় সূত্র)
৩. সত্তকম্মসুত্তং-সপ্তকর্ম সূত্র
২০৩. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে অসৎপুরুষ, অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর এবং সৎপুরুষ, সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর সম্বন্ধে দেশনা করব। তোমরা তা শ্রবণ কর; উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ ভদন্ত”, বলে সেই ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর প্রদান করলেন। অতঃপর ভগবান এরূপ বললেন-
“ভিক্ষুগণ! অসৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যাকারী, অদত্তবস্তু গ্রহণকারী, মিথ্যাকামাচারী, মিথ্যাভাষী, পিশুনবাক্যভাষী, কর্কশবাক্যভাষী এবং সমপ্রলাপ বাক্যভাষী হয়। একে বলে অসৎপুরুষ।
অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণী হত্যাকারী হয়ে অপরকেও প্রাণীহত্যা করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তবস্তু গ্রহণকারী হয়ে অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যা কামাচারী হয়ে অপরকেও মিথ্যা কামাচারে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যা ভাষণকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পিশুন বাক্যভাষী হয়ে অপরকেও পিশুনবাক্য বলার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে কর্কশ বাক্যভাষী হয়ে অপরকেও কর্কশবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সমপ্রলাপ বাক্যভাষী হয়ে অপরকেও সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে অসৎপুরুষের চেয়ে অসৎপুরুষতর।
সৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়, অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়, মিথ্যাকামাচার হতে বিরত হয়, মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয়, পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয় এবং সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়। একে বলে সৎপুরুষ।
সৎপুরুষ, সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণীহত্যা বিরত হয়ে অপরকেও প্রাণীহত্যা হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তববস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকামাচার হতে বিরত হয়ে অপরকেও মিথ্যাকামাচার হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ বিরত হয়ে অপরকেও সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর।” (তৃতীয় সূত্র)
৪. দসকম্মসুত্তং-দশকর্ম সূত্র
২০৪. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে অসৎপুরুষ, অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর এবং সৎপুরুষ, সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর সম্বন্ধে দেশনা করব। তোমার তা শ্রবণ কর; উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ ভদন্ত” বলে ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর দিলেন। অতঃপর ভগবান এরূপ বললন-
“ভিক্ষুগণ! অসৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণী হত্যাকারী, অদত্তবস্তু গ্রহণকারী, মিথ্যাকামাচারী, মিথ্যাভাষণকারী, পিশুনবাক্য ভাষণকারী, কর্কশবাক্য ভাষণকারী, সমপ্রলাপবাক্য ভাষণকারী, লোভী, প্রদুষ্ট চিত্তসম্পন্ন এবং মিথ্যদৃষ্টিসম্পন্ন হয়। একে বলে অসৎপুরুষ।
অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণী হত্যাকারী হয়ে অপরকেও প্রাণীহত্যা করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তবস্তু গ্রহণকারী হয়ে অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকামাচারী হয়ে অপরকেও মিথ্যা কামাচারে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাভাষণ করে অপরকেও মিথ্যাভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পিশুনবাক্য ভাষণ করে অপরকেও পিশুনবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে কর্কশবাক্য ভাষণ করে অপরকেও কর্কশবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে লোভী হয়ে অপরকেও লোভী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে প্রদুষ্ট চিত্তসম্পন্ন হয়ে অপরকেও প্রদুষ্ট চিত্তসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর।
সৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়, অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়, মিথ্যাকামাচার হতে বিরত হয়, মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয়, পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, নির্লোভী হয়, প্রসন্ন চিত্তসম্পন্ন হয়, সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়। একে বলে সৎপুরুষ।”
সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়ে অপরকেও প্রাণীহত্যা হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকামাচার হতে বিরত হয়ে অপরকেও মিথ্যাকামাচার হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও মিথ্যাভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে নির্লোভী হয়ে অপরকেও লোভহীন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে প্রসন্ন চিত্তসম্পন্ন হয়ে অপরকেও প্রসন্ন চিত্তসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। এবং নিজে সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর।” (চতুর্থ সূত্র)
৫. অট্ঠঙ্গিকসুত্তং-অষ্টাঙ্গিক সূত্র
২০৫. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে অসৎপুরুষ, অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর এবং সৎপুরুষ, সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর সম্বন্ধে দেশনা করব। তোমরা তা শ্রবণ কর; উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ ভদন্ত,” বলে সেই ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর দিলেন। অতঃপর ভগবান এরূপ বললেন-
“ভিক্ষুগণ! অসৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি মিথ্যাদৃষ্টি, মিথ্যাসংকল্প, মিথ্যাবাক্য, মিথ্যাকর্ম, মিথ্যাজীবিকা, মিথ্যাব্যায়াম, মিথ্যাস্মৃতি এবং মিথ্যাসমাধিসম্পন্ন হয়। একে বলে অসৎপুরুষ।”
অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাদৃষ্টিতে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাসংকল্পী হয়ে অপরকেও মিথ্যাসংকল্পে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাবাক্যভাষী হয়ে অপরকেও মিথ্যাভাষণে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকর্ম সম্পাদনকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাকর্মে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাজীবিকাসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাজীবিকায় উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যা ব্যায়ামকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাব্যায়ামে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাস্মৃতিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাস্মৃতিতে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাসমাধিপরায়ণ হয়ে অপরকেও মিথ্যাসমাধিপরায়ণ হতে উৎসাহিত করে। একে বলে অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর।”
সৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি সম্যকদৃষ্টি, সম্যক সংকল্প, সম্যক বাক্য, সম্যক কর্ম, সম্যক জীবিকা, সম্যক ব্যায়াম, সম্যক স্মৃতি এবং সম্যক সমাধিসম্পন্ন হয়। একে বলে সৎপুরুষ।”
সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকসংকল্পী হয়ে অপরকেও সম্যকসংকল্পী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও সম্যকবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যককর্ম সম্পাদন করে অপরকেও সম্যককর্ম সম্পাদন করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকজীবিকাসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকজীবিকাসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকব্যায়াম বা সম্যকপ্রচেষ্টা করে অপরকেও সম্যকব্যায়াম বা সম্যকপ্রচেষ্টা করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যক স্মৃতিমান হয়ে অপরকেও সম্যক স্মৃতিমান হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যক সমাধিতে নিবিষ্ট হয়ে অপরকেও সম্যক সমাধিতে নিবিষ্ট হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর।” (পঞ্চম সূত্র)
৬. দসমগ্গসুত্তং-দশমার্গ সূত্র
২০৬. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে অসৎপুরুষ, অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর এবং সৎপুরুষ, সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর সম্বন্ধে দেশনা করব। তোমরা তা শ্রবণ কর; উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ ভদন্ত” বলে সেই ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর দিলেন।” অতঃপর ভগবান এরূপ বললেন-
“ভিক্ষুগণ! অসৎপুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি মিথ্যাদৃষ্টি, মিথ্যাসংকল্প, মিথ্যাস্মৃতি, মিথ্যাসমাধি, মিথ্যাজ্ঞান এবং মিথ্যাবিমুক্তিসম্পন্ন হয়। একে বলে অসৎপুরুষ।
অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাসংকল্পকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাসংকল্পকারী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকর্ম সম্পাদনকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাকর্ম সম্পাদন করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাজীবিকাসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাজীবিকা সম্পাদন করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাব্যায়াম বা মিথ্যাপ্রচেষ্টাকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাব্যায়াম করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাস্মৃতিমান হয়ে অপরকেও মিথ্যাস্মৃতিসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাসমাধিতে নিবিষ্ট হয়ে অপরকেও মিথ্যাসমাধিতে নিবিষ্ট হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাজ্ঞানী হয়ে অপরকেও মিথ্যাজ্ঞানী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যা বিমুক্তিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যা বিমুক্তিসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে অসৎপুরুষের চেয়েও অসৎপুরুষতর।”
সৎপুুরুষ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি সম্যকদৃষ্টি, সম্যকসংকল্প, সম্যকবাক্য, সম্যককর্ম, সম্যকজীবিকা, সম্যকব্যায়াম, সম্যকস্মৃতি, সম্যকসমাধি, সম্যকজ্ঞান ও সম্যকবিমুক্তিসম্পন্ন হয়। একে বলে সৎপুরুষ।”
সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকসংকল্পকারী হয়ে অপরকেও সম্যকসংকল্পকারী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকবাক্যভাষী হয়ে অপরকেও সম্যকবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যককর্ম সম্পাদনকারী হয়ে অপরকেও সম্যককর্ম সম্পাদন করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকজীবিকাসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকজীবিকাসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকব্যায়াম বা সম্যক প্রচেষ্টাকারী হয়ে অপরকেও সম্যকব্যায়াম বা সম্যকপ্রচেষ্টা করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকস্মৃতিমান হয়ে অপরকেও সম্যকস্মৃতিমান হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকসমাধিতে নিবিষ্ট হয়ে অপরকেও সম্যক সমাধিতে নিবিষ্ট হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যক জ্ঞানী হয়ে অপরকে সম্যক জ্ঞানী হবার জন্য উৎসাহিত করে। এবং নিজে সম্যক বিমুক্তিতে উন্নীত হয়ে অপরকেও সম্যক বিমুক্তিতে উন্নীত হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে সৎপুরুষের চেয়েও সৎপুরুষতর।” (ষষ্ঠ সূত্র)
৭. পঠমপাপকম্মসুত্তং-পাপধর্ম সূত্র (প্রথম)
২০৭. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে পাপ, পাপের চেয়েও মহাপাপ এবং কল্যাণ, কল্যাণের চেয়েও মহাকল্যাণ সম্বন্ধে দেশনা করব। তোমরা তা শ্রবণ কর; উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ ভদন্ত”, বলে ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর দিলেন।” অতঃপর ভগবান এরূপ বললেন-
“হে ভিক্ষুগণ! পাপ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যাকারী, অদত্তবস্তু গ্রহণকারী, মিথ্যাকামাচারী, মিথ্যাভাষণকারী, পিশুনবাক্য ভাষণকারী, কর্কশবাক্য ভাষণকারী, সমপ্রলাপবাক্য ভাষণকারী, লোভী, প্রদুষ্ট চিত্ত ও মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হয়। একে বলে পাপ।
পাপের চেয়েও মহাপাপ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণীহত্যাকারী হয়ে অপরকেও প্রাণীহত্যা করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তবস্তু গ্রহণকারী হয়ে অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকামাচারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাকামাচারে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাভাষণকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পিশুনবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও পিশুনবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে কর্কশবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও কর্কশবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সমপ্রলাপবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে লোভী হয়ে অপরকেও লোভী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে হিংসা চিত্তসম্পন্ন হয়ে অপরকেও হিংসা চিত্তসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। এবং নিজে মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে পাপের চেয়েও মহাপাপ।
কল্যাণ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়, অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়, মিথ্যাকামাচার হতে বিরত হয়, মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয়, পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, নির্লোভী হয়; অহিংসা চিত্তসম্পন্ন এবং সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়। একে বলে কল্যাণ।”
কল্যাণের চেয়েও মহাকল্যাণ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়ে অপরকেও প্রাণীহত্যা হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকামাচার হতে বিরত হয়ে অপরকেও মিথ্যাকামাচার হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও মিথ্যাভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে নির্লোভী হয়ে অপরকেও লোভহীন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অহিংসা চিত্তসম্পন্ন হয়ে অপরকেও অহিংসা চিত্তসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। এবং নিজে সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে কল্যাণের চেয়েও মহাকল্যাণ।” (সপ্তম সূত্র)
৮. দুতিযপাপকম্মসুত্তং-পাপধর্ম সূত্র (দ্বিতীয়)
২০৮. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে পাপ, পাপের চেয়েও মহাপাপ এবং কল্যাণ, কল্যাণের চেয়েও মহাকল্যাণ সম্বন্ধে দেশনা করব।; তোমরা তা শ্রবণ কর; উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ ভদন্ত”, বলে ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর দিলেন।” অতঃপর ভগবান এরূপ বললেন-
“ভিক্ষুগণ! পাপ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি মিথ্যাদৃষ্টি, মিথ্যাসংকল্প, মিথ্যাবাক্য, মিথ্যাকর্ম, মিথ্যাজীবিকা, মিথ্যাব্যায়াম, মিথ্যাস্মৃতি এবং মিথ্যাসমাধি সম্পন্ন হয়। একে বলে পাপ।”
পাপের চেয়েও মহাপাপ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাদৃষ্টিতে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাসংকল্পী হয়ে অপরকেও মিথ্যাসংকল্পে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাবাক্যভাষী হয়ে অপরকেও মিথ্যাভাষণে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকর্ম সম্পাদনকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাকর্মে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাজীবিকাসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাজীবিকায় উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাব্যায়ামকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাব্যায়াম উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাস্মৃতিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাস্মৃতিসম্পন্ন হতে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাসমাধিপরায়ণ হয়ে অপরকেও মিথ্যাসমাধিপরায়ণ হতে উৎসাহিত করে। একে বলে পাপের চেয়েও মহাপাপ।”
কল্যাণ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি সম্যকদৃষ্টি, সম্যকসংকল্প, সম্যকবাক্য, সম্যককর্ম, সম্যকজীবিকা, সম্যকব্যায়াম, সম্যকস্মৃতি এবং সম্যকসমাধিসম্পন্ন হয়। একে বলে কল্যাণ।”
কল্যাণের চেয়েও মহাকল্যাণ কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকসংকল্পী হয়ে অপরকেও সম্যকসংকল্পী হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও সম্যকবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যককর্ম সম্পাদন করে অপরকেও সম্যককর্ম সম্পাদন করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকজীবিকাসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকজীবিকাসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকব্যায়াম বা সম্যকপ্রচেষ্টাকারী হয়ে অপরকেও সম্যকব্যায়াম বা সম্যকপ্রচেষ্টা করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যক স্মৃতিমান হয়ে অপরকেও সম্যকস্মৃতিমান হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকসমাধিতে নিবিষ্ট হয়ে অপরকেও সম্যকসমাধিতে নিবিষ্ট হবার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে কল্যাণের চেয়েও মহাকল্যাণ।” (অষ্টম সূত্র)
৯. ততিযপাপকম্মসুত্তং-পাপধর্ম সূত্র (তৃতীয়)
২০৯. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে পাপধর্ম, পাপধর্মের চেয়েও পাপধর্মতর এবং কল্যাণধর্ম, কল্যাণধমের্র চেয়েও কল্যাণধর্মতর সম্বন্ধে দেশনা করব। তোমরা তা শ্রবণ কর; উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ ভদন্ত”, বলে ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর দিলেন।” অতঃপর ভগবান এরূপ বললেন-
“হে ভিক্ষুগণ! পাপধর্ম কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যাকারী, অদত্তবস্তু গ্রহণকারী, মিথ্যাকামাচারী, মিথ্যাভাষণকারী, পিশুনবাক্য ভাষণকারী, কর্কশবাক্য ভাষণকারী, সমপ্রলাপবাক্য ভাষণকারী; লোভী, হিংসা চিত্তসম্পন্ন ও মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হয়। একে বলে পাপধর্ম।
পাপধর্মের চেয়েও পাপধর্মতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণীহত্যাকারী হয় এবং অপরকেও প্রাণীহত্যা করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তবস্তু গ্রহণকারী হয়ে অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকামাচারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাকামাচারে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাভাষণকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পিশুনবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও পিশুনবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে কর্কশবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও কর্কশবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সমপ্রলাপবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে লোভী হয়ে অপরকেও লোভী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে হিংসা চিত্তসম্পন্ন হয়ে অপরকেও হিংসা চিত্তসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। এবং নিজে মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে পাপধর্মের চেয়েও পাপধর্মতর।
কল্যাণধর্ম কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়, অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়, মিথ্যাকামাচার হতে বিরত হয়, মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয়, পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, নির্লোভী হয়; অহিংসা চিত্তসম্পন্ন এবং সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়। একে বলে কল্যাণধর্ম।
কল্যাণধর্মের চেয়েও কল্যাণধর্মতর কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়ে অপরকেও প্রাণীহত্যা হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকামাচার হতে বিরত হয়ে অপরকেও মিথ্যাকামাচার হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও মিথ্যাভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়ে অপরকেও সমপ্রলাপবাক্য ভাষণ হতে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে নির্লোভী হয়ে অপরকেও লোভহীন হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে অহিংসা চিত্তসম্পন্ন হয়ে অপরকেও অহিংসা চিত্তসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। এবং নিজে সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে কল্যাণধর্মের চেয়েও কল্যাণধর্মতর।” (নবম সূত্র)
১০. চতুত্থপাপধম্মসুত্তং-পাপধর্ম সূত্র (চতুর্থ)
২১০. “হে ভিক্ষুগণ! আমি তোমাদেরকে পাপধর্ম, পাপধর্মের চেয়েও পাপধর্মতর বা মহাপাপধর্ম এবং কল্যাণধর্ম, কল্যাণধর্মের চেয়েও মহাকল্যাণধর্ম সম্বন্ধে দেশনা করব। তোমরা তা শ্রবণ কর। উত্তমরূপে মনোনিবেশ কর। আমি দেশনা করছি।” “হ্যাঁ ভদন্ত”, বলে ভিক্ষুগণ ভগবানকে প্রত্যুত্তর দিলেন।” অতঃপর ভগবান এরূপ বললেন-
“ভিক্ষুগণ! পাপধর্ম কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি মিথ্যাদৃষ্টি, মিথ্যাসংকল্প, মিথ্যাবাক্য, মিথ্যাকর্ম, মিথ্যাজীবিকা, মিথ্যাব্যায়াম, মিথ্যাস্মৃতি এবং মিথ্যাসমাধিসম্পন্ন হয়। একে বলে পাপধর্ম।”
পাপধর্মের চেয়েও মহাপাপধর্ম কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাদৃষ্টিতে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাসংকল্পী হয়ে অপরকেও মিথ্যাসংকল্পে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাবাক্যভাষী হয়ে অপরকেও মিথ্যাভাষণে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাকর্ম সম্পাদনকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাকর্মে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাজীবিকাসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাজীবিকায় উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যা ব্যায়ামকারী হয়ে অপরকেও মিথ্যাব্যায়ামে উৎসাহিত করে। নিজে মিথ্যাস্মৃতিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও মিথ্যাস্মৃতিসম্পন্ন হতে উৎসাহিত করে। এবং নিজে মিথ্যাসমাধি পরায়ণ হয়ে অপরকেও মিথ্যাসমাধি পরায়ণ হতে উৎসাহিত করে। ভিক্ষুগণ! একে বলে পাপধর্মের চেয়েও মহাপাপধর্ম।”
কল্যাণধর্ম কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি সম্যকদৃষ্টি, সম্যকসংকল্প, সম্যকবাক্য, সম্যককর্ম, সম্যকজীবিকা, সম্যকব্যায়াম, সম্যকস্মৃতি এবং সম্যকসমাধিসম্পন্ন হয়। একে বলে কল্যাণধর্ম।”
কল্যাণধর্মের চেয়েও মহাকল্যাণধর্ম কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি নিজে সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যকদৃষ্টিসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকসংকল্পী হয়ে অপরকেও সম্যকসংকল্পী হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকবাক্য ভাষণকারী হয়ে অপরকেও সম্যকবাক্য ভাষণ করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যককর্ম সম্পাদন করে অপরকেও সম্যককর্ম সম্পাদন করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যক জীবিকাসম্পন্ন হয়ে অপরকেও সম্যক জীবিকাসম্পন্ন হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যকব্যায়াম বা প্রচেষ্টাকারী হয়ে অপরকেও সম্যকব্যায়াম বা সম্যক প্রচেষ্টা করার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যক স্মৃতিমান হয়ে অপরকেও সম্যক স্মৃতিমান হবার জন্য উৎসাহিত করে। নিজে সম্যক সমাধিতে নিবিষ্ট হয়ে অপরকেও সম্যক সমাধিতে নিবিষ্ট হবার জন্য উৎসাহিত করে। একে বলে কল্যাণধর্মের চেয়েও মহাকল্যাণধর্ম।”
সৎপুরুষ বর্গ সমাপ্ত
স্মারকগাথাঃ
শিক্ষাপদ, অশ্রদ্ধা, সপ্তকর্ম, দশকর্ম,
অষ্টাঙ্গিক, দশমার্গ, বাকী চার পাপধর্ম।