১. সংখিত্তসুত্তং-সংক্ষিপ্ত সূত্র
২৩২. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা-অকুশল বা কৃষ্ণ কর্মে অকুশল বিপাক বা ফল প্রদায়ী, কুশল বা শুক্ল কর্মে কুশল বিপাক বা ফল প্রদায়ী, কুশলাকুশল বা কৃষ্ণ ও শুক্ল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক বা ফল প্রদায়ী এবং অকুশলও নয় কুশলও নয় বা কৃষ্ণও নয়, শুক্লও নয় (উপেক্ষা) কর্ম যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিলক্ষিত হয়। এই চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলদ্ধি করে আমা কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে।” (প্রথম সূত্র)
২. বিত্থারসুত্তং-বিস্তার সূত্র
২৩৩. ‘‘হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলদ্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- অকুশল বা কৃষ্ণ কর্মে অকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী, কুশল বা শুক্ল কর্মে কুশল বিপাক বা ফল প্রদায়ী, কুশলাকুশল বা কৃষ্ণ ও শুক্ল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক বা ফল প্রদায়ী এবং কুশলও নয় অকুশলও নয় বা উপেক্ষা কর্ম যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিলক্ষিত হয়।
ভিক্ষুগণ! অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি হিংসাযুক্ত (ব্যাপাদ) কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে হিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ দুঃখপূর্ণ স্থানে উৎপন্ন হয়। তথায় উৎপন্ন হয়ে সে দুঃখ অনুভব করে এবং নারকীয় সত্ত্বগণের ন্যায় একান্তই দুঃখ ভোগ করে থাকে। ভিক্ষুগণ! একে বলে অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
কুশল কর্মে কুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি অহিংসাযুক্ত (অব্যাপাদ) কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ সুখময় স্থানে উৎপন্ন হয়। তথায় উৎপন্ন হয়ে সে সুখ অনুভব করে এবং স্বর্গের দেবগণের ন্যায় একান্তই সুখ ভোগ করে থাকে। একে বলে কুশল কর্মে কুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি হিংসাযুক্ত ও অহিংসাযুক্ত (ব্যাপাদ ও অব্যাপাদ) কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে হিংসাযুক্ত ও অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ দুঃখ-সুখময় স্থানে উৎপন্ন হয়। তথায় সে কখনো দুঃখ, কখনো সুখ অনুভব করে এবং নারকীয় সত্ত্বগণের ন্যায় দুঃখ ও স্বর্গীয় সত্ত্বগণের ন্যায় সুখ ভোগ করে থাকে। এটাই কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক।
কিরূপ কর্ম ও ফল অকুশলও নয় কুশলও নয় কর্ম-যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিলক্ষিত হয়? তথায় কৃষ্ণকর্ম ও কৃষ্ণ বিপাক প্রহানের জন্য যেরূপ চেতনা, আবার শুক্লকর্ম ও শুক্লবিপাক প্রহানের জন্য যেরূপ চেতনা এবং কৃষ্ণ-শুক্লকর্ম কৃষ্ণ-শুক্ল বিপাক প্রহানের জন্যও সাদৃশ চেতনা বিদ্যমান- তাকেই বলা হয় অকুশলও নয়, কুশলও নয় কর্ম। যা অকুশল ও কুশল বিপাক, কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে।” (দ্বিতীয় সূত্র)
৩. সোণকাযনসুত্তং-শোণকায়ন সূত্র
২৩৪. একসময় শিখামৌদগলায়ন ব্রাহ্মণ ভগবানের নিকট উপস্থিত হয়ে ভগবানের সাথে মিলিত হলেন। অতঃপর প্রীতিপূর্ণ কুশল আলাপান্তে একপাশে উপবেশন করলেন। একপাশে উপবিষ্ট শিখামৌদগলায়ন ব্রাহ্মণ ভগবানকে এরূপ বললেন-
“মাননীয় গৌতম! কয়েকদিন পূর্বে শোণকায়ন মানব আমার নিকট গিয়ে এরূপ বললেন- “শ্রমণ গৌতম সর্ববিধ কর্মের অক্রিয়া প্রজ্ঞাপন করেন। সর্ববিধ কর্মের অক্রিয়া প্রজ্ঞাপন কালে তিনি জগতের উচ্ছেদ সম্বন্ধে প্রচার করেন। আরে মহাশয়! এই জগত তো কর্মসত্য ও কর্ম তৎপরতায় প্রতিষ্ঠিত।”
“হে ব্রাহ্মণ! আমি শোণকায়ন মানবের দর্শনও জানি না; কোথায় আর এরূপ বাক্যালাপ হবে! ব্রাহ্মণ, চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক, কুশল কর্মে কুশল বিপাক, কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক এবং কুশলও নয় অকুশলও নয় কর্ম-যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়।
ব্রাহ্মণ! অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি ব্যাপাদ বা হিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনো সংস্কার সম্পাদন করে। সে হিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ দুঃখপূর্ণ স্থানে উৎপন্ন হয়। তথায় উৎপন্ন হয়ে সে দুঃখ ানুভব করে এবং নারকীয় সত্ত্বগণের ন্যায় একান্তই দুঃখ ভোগ করে থাকে। একে বলে অকুশলকর্মে অকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
কুশল কর্মে কুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি অব্যাপাদ বা অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ সুখময় স্থানে উৎপন্ন হয়। তথায় উৎপন্ন হয়ে সে সুখ অনুভব করে। এবং স্বর্গীয় দেবগণের ন্যায় একান্তই সুখ ভোগ করে থাকে। এটিই কুশল কর্মে কুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি হিংসা ও অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার, মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে হিংসা ও অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ দুঃখ ও সুখময় স্থানে উৎপন্ন হয়। তথায় সে কখনো দুঃখ, কখনো সুখ অনুভব করে। এবং নারকীয় সত্ত্বগণের ন্যায় দুঃখ ও স্বর্গীয় সত্ত্বগণের ন্যায় সুখ ভোগ করে থাকে। এটিই কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
কিরূপ কর্ম ও ফল অকুশলও নয় কুশলও নয়- যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়। তথায় কৃষ্ণকর্ম ও কৃষ্ণ বিপাক প্রহানের জন্য যেরূপ চেতনা, আবার শুক্লকর্ম ও শুক্লবিপাক প্রহানের জন্য যেরূপ চেতনা এবং কুশলাকুশলকর্ম ও কুশলাকুশল বিপাক প্রহানের জন্যও যাদৃশ চেতনা বিদ্যমান তাকে বলা অকুশলও নয় কুশলও নয় কর্মে অকুশলও নয় কুশলও নয় বিপাক, যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়। ব্রাহ্মণ! এই চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে।” (তৃতীয় সূত্র)
৪. পঠমসিক্খাপদসুত্তং-শিক্ষাপদ সূত্র (প্রথম)
২৩৫. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে। এই চার প্রকার কি কি? যথা- অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক, কুশল কর্মে কুশল বিপাক, কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশলবিপাক এবং কুশলও নয় অকুশলও নয় বা উপেক্ষা কর্ম যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়।
ভিক্ষুগণ! অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যাকারী হয়, অদত্তবস্তু গ্রহণকারী হয়, মিথ্যাকামাচারী হয়, মিথ্যাভাষী হয় এবং সুরা-মদ্যপায়ী হয়। এটিই অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
কুশল কর্মে কুশলবিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়, চুরি হতে বিরত হয়, মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয় এবং সুরা-মদ্যপান হতে বিরত হয়। এটিই কুশল কর্মে কুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি হিংসা ও অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে হিংসা ও অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ দুঃখ ও সুখময় স্থানে উৎপন্ন হয়। তথায় উৎপন্ন হয়ে সে কখনো দুঃখ, কখনো সুখ অনুভব করে। এবং নারকীয় সত্ত্বগণের ন্যায় দুঃখ ও স্বগীয় সত্ত্বগণের ন্যায় সুখ ভোগ করে থাকে। ভিক্ষুগণ! এটিই কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক।
কিরূপ কর্ম ও ফল অকুশলও নয় কুশলও নয়, যা কর্ম ক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়? তথায় অকুশল ও অকুশল বিপাক প্রহানের জন্য যেরূপ চেতনা, আবার কুশল কর্ম ও কুশল বিপাক প্রহানের জন্য যেরূপ চেতনা, এবং কুশলাকুশল কর্ম ও কুশলাকুশল বিপাক প্রহানের জন্যও যাদৃশ চেতনা বিদ্যমান তাকে বলা হয় কুশলও নয় অকুশলও নয় কুশলও নয় অকুশলও নয় বিপাক, যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা তারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে। (চতুর্থ সূত্র)
৫. দুতিযমিক্খাপদুসুত্তং-শিক্ষাপদ সূত্র (দ্বিতীয়)
২৩৬. “হে ভিক্ষুগণ! এ’চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হযেছে। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কৃষ্ণ বা অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী, কুশল কর্মে কুশল বিপাক, কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক এবং অকুশলও নয় কুশলও নয় কর্মে অকুশল ও নয় কুশলও নয় বিপাক, যা কর্ম ক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়।
ভিক্ষুগণ! অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি মাতৃ-হত্যাকারী হয়, পিতৃ-হত্যাকারী হয়, অর্হৎ হত্যাকারী হয়, হিংসাচিত্তে বুদ্ধের রক্তপাতকারী হয় এবং সংঘ ভেদকারী হয়। এটিই অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
কুশলকর্মে কুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? এজগতে কোন কোন ব্যক্তি প্রাণীহত্যা হতে বিরত হয়, অদত্তবস্তু গ্রহণ হতে বিরত হয়, মিথ্যাকামাচর হতে বিরত হয়, মিথ্যাভাষণ হতে বিরত হয়, পিশুনবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, কর্কশবাক্য ভাষণ হতে বিরত হয়, সমপ্রলাপ বাক্যভাষণ হতে বিরত হয়, র্নিলোভী হয়, অহিংসাযুক্ত চিত্ত ও সম্যকদৃষ্টি সম্পন্ন হয়। এটিই কুশলকর্মে কুশল বিপাক।
কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক কিরূপ? এজগতে কান কোন ব্যক্তি হিংসা ও অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনো সংস্কার সম্পাদন করে। সে হিংসা ও অহিংসাযুক্ত কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ দুঃখপূর্ণ ও সুখময় স্থানে উৎপন্ন হয়। তথায় উৎপন্ন হয়ে সে কখনো দুঃখ, কখনো সুখ অনুভব করে। নারকীয় সত্ত্বগণের ন্যায় দুঃখ ও স্বর্গীয় সত্ত্বগণের ন্যায় সুখ ভোগ করে থাকে। এটিই কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
কিরূপ কর্ম ও ফল অকুশলও নয় কুশলও নয়, যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়? তথায় অকুশল কর্ম ও কুশল বিপাক প্রহানের জন্য যেরূপ চেতনা, আবার কুশল কর্ম ও অকুশল বিপাক প্রহানের জন্য যেরূপ চেতনা এবং কুশলাকুশল কর্ম ও কুশলাকুশল বিপাক প্রহানের জন্যও যাদৃশ চেতনা বিদ্যমান, এটিই অকুশলও নয় কুশলও নয় কর্মে অকুশলও নয় কুশলও নয় বিপাক, যা কর্ম ক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়। (পঞ্চম সূত্র)
৬. অরিযমগ্গসুত্তং-আর্যমার্গ সূত্র
২৩৭. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে। সেই চার কি কি? যথা- অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক, কুশল কর্মে কুশল বিপাক, কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক এবং কর্ম ও বিপাক অকুশলও নয় কুশলও নয় যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়।
ভিক্ষুগণ! অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক কিরূপ? ভিক্ষুগণ! এজগতে কোন কোন ব্যক্তি হিংসামূলক কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে হিংসামূলক কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ হিংসা ভরা জগতে বা নরকে উৎপন্ন হয়। ব্যাপাদময় জগতে উৎপন্ন হয়ে সে ব্যাপাদময় স্পর্শ পায় এবং ব্যাপাদময় স্পর্শে স্পৃষ্ট হয়ে নারকীয় সত্ত্বগণের ন্যায় একান্তই দুঃখ অনুভব করে। ভিক্ষুগণ! এটাই অকুশল কর্ম অকুশল বিপাক।
ভিক্ষুগণ! কুশল কর্মে কুশলা বিপাক কিরূপ? ভিক্ষুগণ! এজগতে কোন কোন ব্যক্তি অহিংসামূলক বা অব্যাপাদ কায়সংস্কার বাকসংস্কার ও মনো সংস্কার সম্পাদন করে। সে অহিংসামূলক কায়সংস্কার বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ অহিংসায় ভরা জগতে বা স্বর্গে উৎপন্ন হয়। অব্যাপাদময় জগতে উৎপন্ন হয়ে সে অব্যাপাদময় পায়। অব্যাপাদময় স্পর্শে স্পৃষ্ট হয়ে স্বর্গীয় সত্ত্বগণের ন্যায় একান্তই সুখ অনুভব করে। ভিক্ষুগণ! এটাই কুশল কর্ম কুশলবিপাক বা ফলপ্রদায়ী।”
ভিক্ষুগণ! কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? ভিক্ষুগণ! এজগতে কোন কোন ব্যক্তি হিংসামূলক ও অহিংসামূলক কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে অহিংসামূলক ও অহিংসামূলক কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ হিংসায় ও অহিংসায় ভরা জগতে বা নরকে ও স্বর্গে উৎপন্ন হয়। ব্যাপাদময় ও অব্যাপাদময় জগতে উৎপন্ন হয়ে সে অব্যাপাদময় ও ব্যাপাদময় পায় এবং অব্যাপাদময় ও অব্যাপাদময় স্পর্শে স্পৃষ্ট হয়ে নারকীয় ও স্বর্গীয় সত্ত্বগণের ন্যায় একান্ত দুঃখ ও সুখ অনুভব করে। ভিক্ষুগণ! এটাই কুশলাকুশল কর্মে কশলাকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
ভিক্ষুগণ! কিরূপ কর্ম ও ফল অকুশলও নয় কুশলও নয় যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়? যথা- সম্যকদৃষ্টি, সম্যকসংকল্প, সম্যকবাক্য, সম্যককর্ম, সম্যকজীবিকা, সম্যকপ্রচেষ্টা, সম্যকস্মৃতি ও সম্যকসমাধি। ভিক্ষুগণ! এই কর্ম ও ফল অকুশলও নয় কুশলও নয় যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমা কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে।” (ষষ্ঠ সূত্র)
৭. বোজ্ঝঙ্গসুত্তং-বোধ্যাঙ্গ সূত্র
২৩৮. “হে ভিক্ষুগণ! চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে। সেই চার কি কি? যথা- অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক আছে, কুশল কর্মে কুশল বিপাক আছে, কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক আছে এবং কর্ম ও ফল অকুশলও নয় কুশলও নয় যা কর্ম ক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়।
ভিক্ষুগণ! অকুশল কর্মে অকুশল বিপাক কিরূপ? ভিক্ষুগণ! এজগতে কোন কোন ব্যক্তি হিংসামূলক কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে হিংসামূলক কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ হিংসা ভরা জগতে বা নরকে উৎপন্ন হয়। ব্যাপাদময় জগতে উৎপন্ন হয়ে সে ব্যাপাদময় স্পর্শ পায় এবং ব্যাপাদময় স্পর্শে স্পৃষ্ট হয়ে নারকীয় সত্ত্বগণের ন্যায় একান্তই দুঃখ অনুভব করে। ভিক্ষুগণ! এটাই অকুশল কর্ম অকুশল বিপাক।
ভিক্ষুগণ! কুশল কর্মে কুশলা বিপাক কিরূপ? ভিক্ষুগণ! এজগতে কোন কোন ব্যক্তি অহিংসামূলক বা অব্যাপাদ কায়সংস্কার বাকসংস্কার ও মনো সংস্কার সম্পাদন করে। সে অহিংসামূলক কায়সংস্কার বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ অহিংসায় ভরা জগতে বা স্বর্গে উৎপন্ন হয়। অব্যাপাদময় জগতে উৎপন্ন হয়ে সে অব্যাপাদময় পায়। অব্যাপাদময় স্পর্শে স্পৃষ্ট হয়ে স্বর্গীয় সত্ত্বগণের ন্যায় একান্তই সুখ অনুভব করে। ভিক্ষুগণ! এটাই কুশল কর্ম কুশলবিপাক বা ফলপ্রদায়ী।”
ভিক্ষুগণ! কুশলাকুশল কর্মে কুশলাকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী কিরূপ? ভিক্ষুগণ! এজগতে কোন কোন ব্যক্তি হিংসামূলক ও অহিংসামূলক কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করে। সে অহিংসামূলক ও অহিংসামূলক কায়সংস্কার, বাকসংস্কার ও মনোসংস্কার সম্পাদন করতঃ হিংসায় ও অহিংসায় ভরা জগতে বা নরকে ও স্বর্গে উৎপন্ন হয়। ব্যাপাদময় ও অব্যাপাদময় জগতে উৎপন্ন হয়ে সে অব্যাপাদময় ও ব্যাপাদময় পায় এবং অব্যাপাদময় ও অব্যাপাদময় স্পর্শে স্পৃষ্ট হয়ে নারকীয় ও স্বর্গীয় সত্ত্বগণের ন্যায় একান্ত দুঃখ ও সুখ অনুভব করে। ভিক্ষুগণ! এটাই কুশলাকুশল কর্মে কশলাকুশল বিপাক বা ফলপ্রদায়ী।
ভিক্ষুগণ! কিরূপ কর্ম ও ফল অকুশলও নয় কুশলও নয় যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়? যথা- স্মৃতিসম্বোধ্যাঙ্গ, ধর্মবিচয়সম্বোধ্যাঙ্গ, বীর্যসম্বোধ্যাঙ্গ, প্রীতিসম্বোধ্যাঙ্গ, প্রশ্রদ্ধিসম্বোধ্যাঙ্গ বা প্রশান্তি, সমাধিসম্বোধ্যাঙ্গ ও উপেক্ষাসম্বোধ্যাঙ্গ। ভিক্ষুগণ! এই কর্ম ও ফল অকুশলও নয় কুশলও নয় যা কর্মক্ষয়ের জন্য পরিচালিত হয়। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার কর্ম স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা উপলব্ধি করে আমার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়েছে।” (সপ্তম সূত্র)
৮. সাবজ্জসুত্তং-হিংসাযুক্ত সূত্র
২৩৯. “হে ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়। সেই চার ধর্ম কি কি? যথা- হিংসা বা ব্যাপাদ কায়কর্ম, বাককর্ম, মনোকর্ম ও ব্যাপাদ দৃষ্টি। ভিক্ষুগণ! এই চার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়।
ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করেন। সেই চার ধর্ম কি কি? যথা- অহিংসা বা আব্যাপাদ কায়কর্ম, বাককর্ম, মনোকর্ম ও অহিংসা দৃষ্টি। ভিক্ষুগণ! এই চার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (অষ্টম সূত্র)
৯. অব্যাবজ্ঝসুত্ত-অব্যাপাদ সূত্র
২৪০. “হে ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়। সেই চার ধর্ম কি কি? যথা- হিংসাযুক্ত কায়কর্ম, বাককর্ম, মনোকর্ম ও ব্যাপাদ দৃষ্টি। ভিক্ষুগণ! এই চার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে নিরয়ে নিক্ষিপ্ত হয়।
ভিক্ষুগণ! এই চার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে। সেই চার কি কি? যথা- অহিংসাযুক্ত বা অব্যাপাদ কায়কর্ম, বাককর্ম মনোকর্ম ও অহিংসাত্মক দৃষ্টি। ভিক্ষুগণ! এই চার ধর্মে সমন্বিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে স্বর্গে গমন করে।” (নবম সূত্র)
১০. সমণাসুত্তং-শ্রমণ সুত্র
২৪১. “হে ভিক্ষুগণ! এজগতে প্রথম শ্রমণ, দ্বিতীয় শ্রমণ, তৃতীয় শ্রমণ ও চতুর্থ শ্রমণ রয়েছে; যারা অন্যের সাথে নির্জনে বাদানুবাদ করে। এবং এরূপে তারা উত্তমরূপে সিংহের ন্যায় গর্জন বা উল্লাস করে।
ভিক্ষুগণ! প্রথম শ্রমণ কি? এজগতে ভিক্ষু তিনটি সংযোজন ক্ষয় করে অবিনিপাতধর্মে নিয়ত সম্বোধিপরায়ণ স্রোতাপন্ন হয়। এটিই প্রথম শ্রমণ।
দ্বিতীয় শ্রমণ কি? এজগতে ভিক্ষু তিনটি সংযোজন ক্ষয় করে রাগ, দ্বেষ ও মোহের লঘুকরণে সকৃদাগামী হয়। তিনি শুধুমাত্র একবার জন্ম ধারণ করে দুঃখান্ত সাধন করে। এটিই দ্বিতীয় শ্রমণ।
তৃতীয় শ্রমণ কি? এজগতে ভিক্ষু পাঁচ প্রকার অধঃভাগীয় সংযোজন পরিক্ষয়ে উপপাতিকরূপে উৎপন্ন হয়। পুনরায় অন্যত্র উৎপন্ন হয় না, সেখানেই পরিনির্বাণ লাভ করে। এটিই তৃতীয় শ্রমণ।
চতুর্থ শ্রমণ কি? এজগতে ভিক্ষু আস্রবসমূহের ক্ষয়ে অনাস্রব হয়ে এজীবনে স্বয়ং অভিজ্ঞা দ্বারা চিত্ত বিমুক্তি ও প্রজ্ঞাবিমুক্তি উপলব্ধি, লাভ করে অবস্থান করে। এটিই চতুর্থ শ্রমণ।
ভিক্ষুগণ! এটিই প্রথম শ্রমণ, দ্বিতীয় শ্রমণ, তৃতীয় শ্রমণও চতুর্থ শ্রমণ। যারা অন্যের সাথে নির্জনে বাদানুবাদ করে এবং এরূপেই তারা উত্তমরূপে সিংহের ন্যায় গর্জন বা উল্লাস করে।” (দশম সুত্র)
১১. সপ্পুরিসানিসংসসুত্তং-সৎপুরুষের অনিশংস সূত্র
২৪২. “হে ভিক্ষুগণ! সৎপুরুষকে নিশ্রয় করে চার প্রকার আনিশংস প্রত্যাশা করা যায়। সেই চার কি কি? যথা- আর্যশীল, আর্যসমাধি, আর্যপ্রজ্ঞা ও আর্যবিমুক্তি। ভিক্ষুগণ, সৎপুরুষকে নিশ্রয় করে এই চার প্রকার অনিশংস প্রত্যাশা করা যায়।” (্একাদশ সূত্র)
কর্ম বর্গ সমাপ্ত
স্মারকগাথাঃ
সংক্ষিপ্ত, বিস্তার, শোণকায়ন শিক্ষাপদ, আর্যমার্গ, বোধ্যাঙ্গ,
ব্যাপাদ, অব্যাপাদ শ্রমণ এবং সৎপুরুষের আনিশংস হয়।