১.অসুরসুত্তং-অসুর সূত্র
৯১. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- অসুর পরিষদসম্পন্ন অসুর, দেব পরিষদসম্পন্ন অসুর, অসুর পরিষদসম্পন্ন দেব, দেব পরিষদসম্পন্ন দেব।
কিরূপ পুদগল অসুর পরিষদসম্পন্ন অসুর? এজগতে কোন পুদগল দুঃশীল, পাপধর্ম পরায়ণ হয় এবং তার পরিষদও দুঃশীল, পাপধর্ম পরায়ণ হয়ে থাকে। এরূপ পুদগল অসুর পরিষদসম্পন্ন অসুর।
কিরূপ পুদগল দেব পরিষদসম্পন্ন অসুর? এজগতে কোন পুদগল দুঃশীল, পাপধর্ম পরায়ণ হয়; কিন্তু তার পরিষদ সুশীল, কল্যাণধর্ম পরায়ণ হয়ে থাকে। এরূপ পুদগল দেব পরিষদসম্পন্ন অসুর।
কিরূপ পুদগল অসুর পরিষদসম্পন্ন দেব? এজগতে কোন পুদগল সুশীল, কল্যাণধর্ম পরায়ণ হয়ে থাকে কিন্তু তার পরিষদ দুঃশীল, পাপধর্ম পরায়ণ হয়। এরূপ পুদগল অসুর পরিষদসম্পন্ন দেব।
কিরূপ পুদগল দেব পরিষদসম্পন্ন দেব? এজগতে কোন পুদগল সুশীল, কল্যাণধর্ম পরায়ণ হয়ে থাকে এবং তার পরিষদও সুশীল, কল্যাণধর্ম পরায়ণ হয়। এরূপ পুদগল দেব পরিষদসম্পন্ন দেব।” (প্রথম সূত্র)
২. পঠম সমাধিসুত্তং-সমাধি সূত্র (প্রথম)
৯২. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী, কিন্তু অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী নয়। কোন পুদগল অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী, কিন্তু অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী নয়। কোন পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভীও নয় অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভীও নয়। কোন পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (দ্বিতীয় সূত্র)
৩. দুতিযসমাধিসুত্তং-সমাধি সূত্র (দ্বিতীয়)
৯৩. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- কোন পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী , কিন্তু অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী নয়। কোন পুদগল অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী, কিন্তু অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী নয়। কোন পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভীও নয়, অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভীও নয়। কোন পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী।
ভিক্ষুগণ, যে পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী, কিন্তু অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী নয়; তার অধ্যাত্মচিত্ত শমথে প্রতিষ্ঠিত হয়ে অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শন ভাবনা করা উচিত। ফলে পরবর্তীতে সে অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী ও অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী হয়।
যে পুদগল অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী, কিন্তু অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী নয়; তার অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে অধ্যাত্মচিত্ত শমথে ভাবনা করা উচিত। ফলে পরবর্তীতে সে অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী ও অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী হয়।
যে পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভীও নয়, অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভীও নয়; তার অতিমাত্রায় ঔৎসুক্য, উদ্যম, উদ্যোগ, উৎসাহ, সমপ্রজ্ঞান ও মনোযোগ সহকারে কুশল ধর্মসমূহ প্রতিলাভার্থে চেষ্টা করা উচিত। ভিক্ষুগণ, যেমন কারোর বস্ত্রে বা শির পাগড়িতে আগুন লাগলে সে অতিমাত্রায় ঔৎসুক্য, উদ্যম, উদ্যোগ, উৎসাহ, সমপ্রজ্ঞান ও মনোযোগ সহকারে তা’ নিভানোর চেষ্টা করে। ঠিক সেরূপে সেই পুদগলেরও অতিমাত্রায় ঔৎসুক্য, উদ্যম, উদ্যোগ, উৎসাহ, সমপ্রজ্ঞান ও মনোযোগ সহকারে কুশল ধর্মসমূহ প্রতিলাভার্থে চেষ্টা করা উচিত। ফলে পরবর্তীতে অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শন লাভী হয়।
যে পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী, তার কুশল ধর্মসমূহে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আস্রবক্ষয়ের জন্য ভাবনা করা উচিত। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (তৃতীয় সূত্র)
৪. ততিযসমাধিসুত্তং-সমাধি সূত্র (তৃতীয়)
৯৪. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী, কিন্তু অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী নয়, কোন পুদগল অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী, কিন্তু অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী নয়, কোন পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভীও নয়, অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভীও নয়। কোন পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শন লাভী।
ভিক্ষুগণ, যে পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী, কিন্তু অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী নয়, তদ্ধেতু সে অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী পুদগলের কাছে উপস্থিত হয়ে এরূপ বলে- ‘বন্ধু, কিভাবে সংস্কার দর্শন করা উচিত? কিভাবে সংস্কার জ্ঞাত হওয়া উচিত? কিভাবে সংস্কার অনুধাবন করা উচিত’? এর উত্তরে অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী তার যথাদৃষ্ট, যথাজ্ঞাত ব্যাখ্যা করে- ‘বন্ধু, এভাবে সংস্কার দ্রষ্টব্য, এভাবে সংস্কার জ্ঞাতব্য, এভাবে সংস্কার অনুধাবনীয়।’ তার নিকট হতে এরূপ শুনে পরবর্তীতে সেই পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শন লাভী হয়।
যে পুদগল অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী, কিন্তু অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী নয়, তদ্ধেতু সে অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী পুদগলের কাছে উপস্থিত হয়ে এরূপ বলে- ‘বন্ধু, কিভাবে চিত্তকে শান্ত করা উচিত? কিভাবে চিত্তকে অটল করা উচিত? কিভাবে চিত্তকে সন্নিকৃষ্ট করা উচিত’? এর উত্তরে অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী তার যথাদৃষ্ট, যথাজ্ঞাত ব্যাখ্যা করে- ‘বন্ধু, এভাবে চিত্তকে শান্ত করা উচিত, এভাবে চিত্তকে অটল করা উচিত, এভাবে চিত্তকে সন্নিকৃষ্ট করা উচিত।’ তার নিকট হতে এরূপ শুনে পরবর্তীতে সেই পুদগল অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী এবং অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী হয়।
যে পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভীও নয়, অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভীও নয়, তদ্ধেতু সে অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী পুদগলের কাছে উপস্থিত হয়ে এরূপ বলে- ‘বন্ধু, কিভাবে চিত্তকে শান্ত করা উচিত? কিভাবে চিত্তকে অটল করা উচিত? কিভাবে চিত্তকে সন্নিকৃষ্ট করা উচিত? এবং কিভাবে সংস্কার দর্শন করা উচিত? কিভাবে সংস্কার জ্ঞাত হওয়া উচিত? কিভাবে সংস্কার অনুধাবন করা উচিত’? এর উত্তরে অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী তার যথাদৃষ্ট, যথাজ্ঞাত ব্যাখ্যা করে- ‘বন্ধু, এভাবে চিত্তকে শান্ত করা উচিত? এভাবে চিত্তকে অটল করা উচিত, এভাবে চিত্তকে সন্নিকৃষ্ট করা উচিত। এবং এভাবে সংস্কার দৃষ্টব্য, এভাবে সংস্কার জ্ঞাতব্য, এভাবে সংস্কার অনুধাবনীয়’। তার নিকট হতে এরূপ শুনে পরবর্তীতে সেই পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী হয়।
যে পুদগল অধ্যাত্মচিত্ত শমথলাভী এবং অধিপ্রজ্ঞাধর্ম বিদর্শনলাভী, (তদ্ধেতু) তার কুশল ধর্মসমূহে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আস্রবক্ষয়ের জন্য ভাবনা করা উচিত। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (চতুর্থ সূত্র)
৫. ছবালাতসুত্তং-চিতার পোড়া কাষ্ঠ সূত্র
৯৫. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়; পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়; আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়; আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর।
ভিক্ষুগণ, যেমন চিতায় ব্যবহৃত উভয়দিকে পোড়া, তদুপরি মাঝখানে বিষ্ঠালিপ্ত কাষ্ঠ গ্রামেও আর জ্বালানী কাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয় না অরণ্যেও হয় না; এই আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয় পুদগলকে আমি তাদৃশ-ই বলি।
যে পুদগল পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়- এই দ্বিতীয় পুদগল, প্রথম পুদগল হতে অগ্র, শ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্ট, প্রধান, পরমোৎকৃষ্টতর। যে পুদগল আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়- এই তৃতীয় পুদগল, দ্বিতীয় পুদগল হতে অগ্র, শ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্ট, প্রধান, পরমোৎকৃষ্টতর। যে পুদগল আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও- এই চতুর্থ পুদগল, তৃতীয় পুদগল হতে অগ্র, শ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্ট, প্রধান, পরমোৎকৃষ্টতর।
ভিক্ষুগণ, যেমন গাভী হতে দুগ্ধ, দুগ্ধ হতে দধি, দধি হতে মাখন, মাখন হতে ঘৃত, ঘৃত হতে ঘৃতমণ্ড হয়। এ’ঘৃতমণ্ড-ই এসবের মধ্যে অগ্র, শ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্ট, প্রধান, পরমোৎকৃষ্টতর। তেমনি যে পুদগল আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর সে এ’চার প্রকার পুদগলের মধ্যে অগ্র, শ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্ট, প্রধান, পরমোৎকৃষ্টতর। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (পঞ্চম সূত্র)
৬. রাগবিনযসুত্তং-রাগ ধ্বংস সূত্র
৯৬. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়; পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়; আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়; আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর।
কিরূপ পুদগল আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়? এজগতে কোন পুদগল স্বীয় রাগ-দ্বেষ-মোহ ধ্বংস করার জন্য তৎপর হয়, কিন্তু অপরকে রাগ-দ্বেষ-মোহ ধ্বংস করার জন্য উৎসাহিত করে না। এরূপ পুদগল আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়।
কিরূপ পুদগল পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়? এজগতে কোন পুদগল অপরকে রাগ-দ্বেষ-মোহ ধ্বংস করার জন্য উৎসাহিত করে, কিন্তু স্বীয় রাগ-দ্বেষ-মোহ ধ্বংস করার জন্য তৎপর হয় না। এরূপ পুদগল পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়।
কিরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়? এজগতে কোন পুদগল স্বীয় রাগ-দ্বেষ-মোহ ধ্বংস করার জন্য তৎপর হয় না, অপরকেও রাগ-দ্বেষ-মোহ ধ্বংস করার জন্য উৎসাহিত করে না। এরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়।
কিরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর? এজগতে কোন পুদগল স্বীয় রাগ-দ্বেষ-মোহ ধ্বংস করার জন্য তৎপর হয় এবং অপরকেও রাগ-দ্বেষ-মোহ ধ্বংস করার জন্য উৎসাহিত করে। এরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (ষষ্ঠ সূত্র)
৭. খিপ্পনিসন্তিসুত্তং-সত্বর মনযোগী সূত্র
৯৭. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়, আত্মহিতে তৎপর নয়, কিন্তু পরহিতে তৎপর; আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়; আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর।
কিরূপ পুদগল আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়? এজগতে কোন পুদগল কুশল ধর্মসমূহে সত্বর মনোযোগী হয় এবং শ্রুত ধর্মেও হৃদয়ঙ্গমকারী হয়; ধারণকৃত ধর্মসমূহের অর্থ অনুসন্ধানে রত হয় এবং অর্থ ও বিষয় জ্ঞাত হয়ে ধর্মানুধর্মে প্রতিপন্ন হয়। কিন্তু সুন্দর, শ্রুতিমধুর, উপমা দ্বারা প্রাঞ্জল এবং বিশুদ্ধভাবে অর্থের ব্যাখ্যা করে সব্রহ্মচারীদেরকে জ্ঞাপন, জ্ঞাত, উৎসাহ প্রদান, পরিতৃপ্ত করে না। এরূপ পুদগল আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়।
কিরূপ পুদগল পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়? এজগতে কোন পুদগল কুশল ধর্মসমূহে সত্বর মনোযোগী হয় না এবং শ্রুত ধর্মের হৃদয়ঙ্গমকারী হয় না; ধারণকৃত ধর্মসমূহের অর্থ অনুসন্ধানে রত হয় না এবং অর্থ ও বিষয় জ্ঞাত না হয়ে ধর্মানুধর্মে প্রতিপন্ন হয় না। কিন্তু সুন্দর, শ্রুতিমধুর, উপমা দ্বারা প্রাঞ্জল এবং বিশুদ্ধভাবে অর্থের ব্যাখ্যা করে সব্রহ্মচারীদেরকে জ্ঞাপন, জ্ঞাত, উৎসাহ প্রদান, পরিতৃপ্ত করে। এরূপ পুদগল পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়।
কিরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়? এজগতে কোন পুদগল কুশল ধর্মসমূহে সত্বর মনোযোগী হয় না এবং শ্রুত ধর্মের হৃদয়ঙ্গমকারী হয় না; ধারণকৃত ধর্মসমূহের অর্থ অনুসন্ধানে রত হয় না এবং অর্থ ও বিষয় জ্ঞাত না হয়ে ধর্মানুধর্মে প্রতিপন্ন হয় না। আর সুন্দর, শ্রুতিমধুর, উপমা দ্বারা প্রাঞ্জল এবং বিশুদ্ধভাবে অর্থের ব্যাখ্যা করে সব্রহ্মচারীদেরকে জ্ঞাপন, জ্ঞাত, উৎসাহ প্রদান, পরিতৃপ্ত করে না। এরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়।
কিরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর? এজগতে কোন পুদগল কুশল ধর্মসমূহে সত্বর মনোযোগী হয় এবং শ্রুত ধর্মের হৃদয়ঙ্গমকারী হয়; ধারণকৃত ধর্মসমূহের অর্থ অনুসন্ধানে রত হয় এবং অর্থ ও বিষয় জ্ঞাত না হয়ে ধর্মানুধর্মে প্রতিপন্ন হয়। আর সুন্দর, শ্রুতিমধুর, উপমা দ্বারা প্রাঞ্জল এবং বিশুদ্ধভাবে অর্থের ব্যাখ্যা করে সব্রহ্মচারীদেরকে জ্ঞাপন, জ্ঞাত, উৎসাহ প্রদান, পরিতৃপ্ত করে। এরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (সপ্তম সূত্র)
৮. অত্তহিতসুত্তং-আত্মহিত সূত্র
৯৮. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়; পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর; আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়; আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (অষ্টম সূত্র)
৯. সিক্খাপদসুত্তং-শিক্ষাপদ সূত্র
৯৯. “হে ভিক্ষুগণ! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়; পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়; আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়; আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর।”
কিরূপ পুদগল আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়? এজগতে কোন পুদগল নিজে প্রাণীহত্যা, অদত্তবস্তু গ্রহণ, ব্যভিচার, মিথ্যাবাক্য ভাষণ, মাদকদ্রব্য সেবন হতে প্রতিবিরত হয়। কিন্তু অপরজনকে প্রাণীহত্যা, অদত্তবস্তু গ্রহণ, ব্যভিচার, মিথ্যাবাক্য ভাষণ, মাদকদ্রব্য সেবন হতে প্রতিবিরত হতে উৎসাহিত করে না। এরূপ পুদগল আত্মহিতে তৎপর, কিন্তু পরহিতে তৎপর নয়।
কিরূপ পুদগল পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়? এজগতে কোন পুদগল নিজে প্রাণীহত্যা, অদত্তবস্তু গ্রহণ, ব্যভিচার, মিথ্যাবাক্য ভাষণ, মাদকদ্রব্য সেবন হতে প্রতিবিরত হয় না। কিন্তু অপরজনকে প্রাণীহত্যা, অদত্তবস্তু গ্রহণ, ব্যভিচার, মিথ্যাবাক্য ভাষণ, মাদকদ্রব্য সেবন হতে প্রতিবিরত হতে উৎসাহিত করে। এরূপ পুদগল পরহিতে তৎপর, কিন্তু আত্মহিতে তৎপর নয়।
কিরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়? এজগতে কোন পুদগল নিজে প্রাণীহত্যা অদত্তবস্তু গ্রহণ, ব্যভিচার, মিথ্যাবাক্য ভাষণ, মাদকদ্রব্য সেবন হতে প্রতিবিরত হয় না। অপরজনকেও প্রাণীহত্যা, অদত্তবস্তু গ্রহণ, ব্যভিচার, মিথ্যাবাক্য ভাষণ, মাদকদ্রব্য সেবন হতে প্রতিবিরত হতে উৎসাহিত করে না। এরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর নয়, পরহিতেও তৎপর নয়।
কিরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর? এজগতে কোন পুদগল নিজে প্রাণীহত্যা, অদত্তবস্তু গ্রহণ, ব্যভিচার, মিথ্যাবাক্য ভাষণ, মাদকদ্রব্য সেবন হতে প্রতিবিরত হয়। আর অপরজনকেও প্রাণীহত্যা, অদত্তবস্তু গ্রহণ, ব্যভিচার, মিথ্যাবাক্য ভাষণ, মাদকদ্রব্য সেবন হতে প্রতিবিরত হতে উৎসাহিত করে। এরূপ পুদগল আত্মহিতেও তৎপর, পরহিতেও তৎপর। এই চার প্রকার পুদগল জগতে বিদ্যমান।” (নবম সূত্র)
১০.পোতলিযসুত্তং-পোতলিয় সূত্র
১০০. “একসময় পোতলিয় পরিব্রাজক ভগবানের কাছে উপস্থিত হলেন। উপস্থিত হয়ে প্রীতিপূর্ণ কুশলালাপ করে একপার্শ্বে উপবেশন করলেন। উপবিষ্ট পোতলিয় পরিব্রাজককে ভগবান এরূপ বললেন-
“হে পোতলিয়! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে, কিন্তু প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে না। কোন পুদগল প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে, কিন্তু প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে না। কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দাও করে না, প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসাও করে না। কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে এবং প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে। জগতে এই চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। পোতলিয়, এ’চার প্রকার পুদগলের মধ্যে তোমার কোন পুদগলকে শ্রেষ্ঠতর, উৎকৃষ্টতর বলে মনে হয়?”
“মহাশয় গৌতম! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে, কিন্তু প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে না। কোন পুদগল প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে, কিন্তু প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে না। কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দাও করে না, প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসাও করে না। কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে এবং প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে। জগতে এ’চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। মহাশয় গৌতম! এ’চার প্রকার পুদগলের মধ্যে যে পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে না এবং প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে না; আমার মনে হয় সেই পুদগলই শ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতর। তার কারণ কি? যেহেতু এটা সর্বোচ্চ উদাসীনতা।”
“পোতলিয়! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে, কিন্তু প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে না। কোন পুদগল প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে, কিন্তু প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে না। কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দাও করে না, প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসাও করে না। কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে এবং প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে। জগতে এ’চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। পোতলিয়, এ’চার প্রকার পুদগলের মধ্যে যে পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে এবং প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে; সেই পুদগলই শ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতর। তার কারণ কি? যেহেতু এটা সর্বত্র কালজ্ঞ।”
“মহাশয় গৌতম! জগতে চার প্রকার পুদগল বিদ্যমান। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- এজগতে কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে, কিন্তু প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে না। কোন পুদগল প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে, কিন্তু প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে না। কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দাও করে না, প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসাও করে না। কোন পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে এবং প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে। আমার মনে হয় এ’চার প্রকার পুদগলের মধ্যে যে পুদগল প্রকৃত নিন্দনীয়ের নিন্দা করে এবং প্রকৃত প্রশংসনীয়ের প্রশংসা করে; সেই পুদগলই শ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতর। তার কারণ কি? যেহেতু এটা সর্বত্র কালজ্ঞ।”
“মহাশয় গৌতম, খুবই উত্তম! খুবই উত্তম! যেমন অধোমুখীকে উর্দ্ধমুখী করে, আবৃতকে অনাবৃত করে, পথভ্রষ্টকে পথ নির্দেশ করে, অন্ধকারে তৈল প্রদীপ ধারণ করে- যাতে চক্ষুষ্মান রূপসমূহ দেখতে পায়। এরূপে মহাশয় গৌতম কর্তৃক অনেক পর্যায়ে ধর্ম প্রকাশিত করা হয়েছে। আমি মহাশয় গৌতমের, তাঁর প্রবর্তিত ধর্মের এবং ভিক্ষুসঙ্ঘের শরণাগত হলাম। আজ হতে আমরণ পর্যন্ত আমাকে আপনার শরণাগত উপাসক হিসেবে ধারণা করুন।” (দশম সূত্র)
অসুর বর্গ পঞ্চম সমাপ্ত।
স্মারক গাথা-
অসুর, তিন সমাধি, পোড়া কাষ্ঠসহ হয় পঞ্চম
রাগ, মনোযোগী, আত্মহিত, শিক্ষা, পোতলিয় দশম।
দ্বিতীয় পঞ্চাশক সমাপ্ত।
৩. ততিযপন্নাসকং-তৃতীয় পঞ্চাশক