১. চরসুত্তং - বিচরণ সূত্র
১১. “হে ভিক্ষুগণ! বিচরণ কালে কোন ভিক্ষুর যদি কাম, ব্যাপাদ, বিহিংসা বির্তক উৎপন্ন হয়; আর সেই ভিক্ষু যদি সেসব গ্রহণ করতঃ পরিত্যাগ, অপনোদন, সমূলে বিনষ্ট না করে এবং চিত্ত পরিশুদ্ধ না করে, তাহলে এরূপে বিচরণকারী ভিক্ষু ‘পাপে ভয়হীন, পাপাচরণে অভ্যস্ত, সতত আলস্য ও হীনবীর্য পরায়ণ’ বলে অভিহিত হয়।”
“স্থিতকালে কোন ভিক্ষুর যদি কাম, ব্যাপাদ, বিহিংসা বির্তক উৎপন্ন হয়; আর সেই ভিক্ষু যদি সেসব গ্রহণ করতঃ পরিত্যাগ, অপনোদন, সমূলে বিনষ্ট না করে এবং চিত্ত পরিশুদ্ধ না করে, তাহলে এরূপে বিচরণকারী ভিক্ষু ‘পাপে ভয়হীন, পাপাচরণে অভ্যস্ত, সতত আলস্য ও হীনবীর্য পরায়ণ’ বলে অভিহিত হয়।”
“উপবিষ্ট অবস্থায় কোন ভিক্ষুর যদি কাম, ব্যাপাদ, বিহিংসা বির্তক উৎপন্ন হয়; আর সেই ভিক্ষু যদি সেসব গ্রহণ করতঃ পরিত্যাগ, অপনোদন, সমূলে বিনষ্ট না করে এবং চিত্ত পরিশুদ্ধ না করে, তাহলে এরূপে বিচরণকারী ভিক্ষু ‘পাপে ভয়হীন, পাপাচরণে অভ্যস্ত, সতত আলস্য ও হীনবীর্য পরায়ণ’ বলে অভিহিত হয়।”
“শায়িত অবস্থায় কোন ভিক্ষুর যদি কাম, ব্যাপাদ, বিহিংসা বির্তক উৎপন্ন হয়; আর সেই ভিক্ষু যদি সেসব গ্রহণ করতঃ পরিত্যাগ, অপনোদন, সমূলে বিনষ্ট না করে এবং চিত্ত পরিশুদ্ধ না করে, তাহলে এরূপে বিচরণকারী ভিক্ষু ‘পাপে ভয়হীন, পাপাচরণে অভ্যস্ত, সতত আলস্য ও হীনবীর্য পরায়ণ’ বলে অভিহিত হয়।”
“দাঁড়ানে, গমনে, উপবেশনে আর শয়নে,
দেহ আশ্রয়ে পাপ চিন্তা করে যেইজনে।
অজ্ঞানে বিমোহিত জন যায় যে কুপথে,
অযোগ্য হয় সেই ভিক্ষু, সমাধি উত্তমে ।
দাঁড়ানে গমনে আর উপবেশন, শয়নে,
বির্তক উপশমে রত, বির্তক দমনে।
নিয়ত অভ্যাস যেজন করে এভাবে,
উপযুক্ত হন তিনি উত্তম সমাধি লাভে।”
(প্রথম সূত্র)
২. সীলসুত্তং - শীল সূত্র
১২. “হে ভিক্ষুগণ! তোমরা প্রাতিমোক্ষ শীলসম্পন্ন, প্রাতিমোক্ষ সংবরে সংযত, আচার-গোচরসম্পন্ন এবং অনুমাত্র পাপেও ভয়দর্শী হয়ে অবস্থান কর।
ভিক্ষুগণ! প্রাতিমোক্ষ শীলসম্পন্ন, প্রাতিমোক্ষ সংবরে সংযত, আচার-গোচরসম্পন্ন এবং অনুমাত্র পাপেও ভয়দর্শী হয়ে অবস্থানকারীদের পক্ষে শিক্ষাপদসমূহ গ্রহণ করে অতিরিক্ত আরো কি শিক্ষা করা কর্তব্য?
বিচরণ বা গমনকালে ভিক্ষুর যদি লোভ ও বিদ্বেষ বিমুক্ত হয়, তন্দ্রালস্য বিমুক্ত হয়, উদ্বেগ চঞ্চলতা বিমুক্ত হয় এবং সন্দেহ প্রহীণ হয়; তাহলে সেই ভিক্ষুর আরদ্ধবীর্য অটল হয়, উৎপন্ন স্মৃতি দৃঢ় হয়, কায় প্রশান্তি সুস্থির হয়, সমাহিত চিত্ত একাগ্র হয়। এরূপে বিচরণকারী ভিক্ষু ‘পাপে ভয়দর্শী, পাপাচরণে অনভ্যস্ত, সতত আরদ্ধবীর্য এবং উদ্যমশীল’ বলে অভিহিত হয়।
স্থিতকালে ভিক্ষুর যদি লোভ ও বিদ্বেষ বিমুক্ত হয়, তন্দ্রালস্য বিমুক্ত হয়, উদ্বেগ চঞ্চলতা বিমুক্ত হয় এবং সন্দেহ প্রহীণ হয়; তাহলে সেই ভিক্ষুর আরদ্ধবীর্য অটল হয়, উৎপন্ন স্মৃতি দৃঢ় হয়, কায় প্রশান্তি সুস্থির হয়, সমাহিত চিত্ত একাগ্র হয়। এরূপে বিচরণকারী ভিক্ষু ‘পাপে ভয়দর্শী, পাপাচরণে অনভ্যস্ত, সতত আরদ্ধবীর্য এবং উদ্যমশীল’ বলে অভিহিত হয়।
উপবিষ্ট অবস্থায় ভিক্ষুর যদি লোভ ও বিদ্বেষ বিমুক্ত হয়, তন্দ্রালস্য বিমুক্ত হয়, উদ্বেগ চঞ্চলতা বিমুক্ত হয় এবং সন্দেহ প্রহীণ হয়; তাহলে সেই ভিক্ষুর আরদ্ধবীর্য অটল হয়, উৎপন্ন স্মৃতি দৃঢ় হয়, কায় প্রশান্তি সুস্থির হয়, সমাহিত চিত্ত একাগ্র হয়। এরূপে বিচরণকারী ভিক্ষু ‘পাপে ভয়দর্শী, পাপাচরণে অনভ্যস্ত, সতত আরদ্ধবীর্য এবং উদ্যমশীল’ বলে অভিহিত হয়।
শায়িত অবস্থায় ভিক্ষুর যদি লোভ ও বিদ্বেষ বিমুক্ত হয়, তন্দ্রালস্য বিমুক্ত হয়, উদ্বেগ চঞ্চলতা বিমুক্ত হয় এবং সন্দেহ প্রহীণ হয়; তাহলে সেই ভিক্ষুর আরদ্ধবীর্য অটল হয়, উৎপন্ন স্মৃতি দৃঢ় হয়, কায় প্রশান্তি সুস্থির হয়, সমাহিত চিত্ত একাগ্র হয়। এরূপে বিচরণকারী ভিক্ষু ‘পাপে ভয়দর্শী, পাপাচরণে অনভ্যস্ত, সতত আরদ্ধবীর্য এবং উদ্যমশীল’ বলে অভিহিত হয়।”
“দাঁড়ানে, গমনে ভিক্ষু হয়ে সুসংযত,
শয়নে, উপবেশনেও হয় সেই মত।
উর্ধে, অধে পৃথিবীতে ঘুরে অবিরত,
স্কন্ধের উদয়-ব্যয়ে হয় অনুসন্ধান রত।
চিত্ত উপশমে দক্ষ, সৎ শিক্ষাকামী,
তাদৃশ উদ্যমশীলে ভিক্ষু বলি আমি।”
(দ্বিতীয় সূত্র)
৩. পধানসুত্তং - উদ্যম সূত্র
১৩. “হে ভিক্ষুগণ! সম্যক উদ্যম চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? এজগতে ভিক্ষু অনুৎপন্ন পাপ বা অকুশল ধর্মের অনুৎপাদনের জন্য ইচ্ছা, চেষ্টা, উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং চিত্তকে দৃঢ় করে। উৎপন্ন পাপ বা অকুশল ধর্মের ক্ষয়ের জন্য ইচ্ছা, চেষ্টা, উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং চিত্তকে দৃঢ় করে। অনুৎপন্ন কুশল ধর্মের উৎপাদনের জন্য ইচ্ছা, চেষ্টা, উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং চিত্তকে দৃঢ় করে। উৎপন্ন কুশল ধর্মের স্থিতি, সুরক্ষা, বৃদ্ধি, বৈপুল্য, বর্দ্ধন ও পূর্ণতার জন্য ইচ্ছা, চেষ্টা, উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং চিত্তকে দৃঢ় করে।
ভিক্ষুগণ! এগুলো-ই চার প্রকার সম্যক উদ্যম।
“সম্যক উদ্যমে যিনি অধিষ্ঠিত, সুরক্ষিত হন,
মাররাজ্য বিজয়ী তিনি জন্ম-মৃত্যু হন উত্তোরণ।
সসৈন্য মার জয়ী তৃষ্ণা মুক্ত তিনি,
মৃত্যুর অতীত হয়ে পরম সুখী ইনি।”
(তৃতীয় সূত্র)
৪. সংবরসুত্তং- সংবরণ সূত্র
১৪. “হে ভিক্ষুগণ! উদ্যম চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- সংবরণ উদ্যম, পরিত্যাগ উদ্যম, ভাবনা উদ্যম, অনুরক্ষণ উদ্যম। সংবরণ উদ্যম কাকে বলে? এজগতে ভিক্ষু চক্ষু দিয়ে রূপ দেখে নিমিত্তগ্রাহী , অনুব্যঞ্জনগ্রাহী হয় না। এহেতুতে সামান্য অসংযতভাবে বিচরণকারী চক্ষু ইন্দ্রিয়কে অভিধ্যা-দৌর্মনস্যাদি অকুশল পাপধর্ম আক্রমণ করলেও আচ্ছন্ন করতে পারে না। যেহেতু ভিক্ষু চক্ষু সংবরণে অভিনিবিষ্ট থাকে, চক্ষু ইন্দ্রিয়কে রক্ষা করে, চক্ষু ইন্দ্রিয়ে সংবরণ উৎপন্ন করে। কর্ণ দিয়ে শব্দ শুনে নিমিত্তগ্রাহী, অনুব্যঞ্জনগ্রাহী হয় না। এহেতুতে সামান্য অসংযতভাবে বিচরণকারী কর্ণ ইন্দ্রিয়কে অভিধ্যা-দৌর্মনস্যাদি অকুশল পাপধর্ম আক্রমণ করলেও আচ্ছন্ন করতে পারে না। যেহেতু ভিক্ষু কর্ণ সংবরণে অভিনিবিষ্ট থাকে, কর্ণ ইন্দ্রিয়কে রক্ষা করে, কর্ণ ইন্দ্রিয়ে সংবরণ উৎপন্ন করে। নাসিকা দিয়ে ঘ্রাণ নিয়ে নিমিত্তগ্রাহী, অনুব্যঞ্জনগ্রাহী হয় না। এহেতুতে সামান্য অসংযতভাবে বিচরণকারী নাসিকা ইন্দ্রিয়কে অভিধ্যা-দৌর্মনস্যাদি অকুশল পাপধর্ম আক্রমণ করলেও আচ্ছন্ন করতে পারে না। যেহেতু ভিক্ষু নাসিকা সংবরণে অভিনিবিষ্ট থাকে, নাসিকা ইন্দ্রিয়কে রক্ষা করে, নাসিকা ইন্দ্রিয়ে সংবরণ উৎপন্ন করে। জিহ্বা দিয়ে রস আস্বাদন করে নিমিত্তগ্রাহী, অনুব্যঞ্জনগ্রাহী হয় না। এহেতুতে সামান্য অসংযতভাবে বিচরণকারী জিহ্বা ইন্দ্রিয়কে অভিধ্যা-দৌর্মনস্যাদি অকুশল পাপধর্ম আক্রমণ করলেও আচ্ছন্ন করতে পারে না। যেহেতু ভিক্ষু জিহ্বা সংবরণে অভিনিবিষ্ট থাকে, জিহ্বা ইন্দ্রিয়কে রক্ষা করে, জিহ্বা ইন্দ্রিয়ে সংবরণ উৎপন্ন করে। কায় দিয়ে স্পর্শ অনুভব করে নিমিত্তগ্রাহী, অনুব্যঞ্জনগ্রাহী হয় না। এহেতুতে সামান্য অসংযতভাবে বিচরণকারী কায় ইন্দ্রিয়কে অভিধ্যা-দৌর্মনস্যাদি অকুশল পাপধর্ম আক্রমণ করলেও আচ্ছন্ন করতে পারে না। যেহেতু ভিক্ষু কায় সংবরণে অভিনিবিষ্ট থাকে, কায় ইন্দ্রিয়কে রক্ষা করে, কায় ইন্দ্রিয়ে সংবরণ উৎপন্ন করে। মন দিয়ে ধর্ম জেনে নিমিত্তগ্রাহী, অনুব্যঞ্জনগ্রাহী হয় না। এহেতুতে সামান্য অসংযতভাবে বিচরণকারী মন ইন্দ্রিয়কে অভিধ্যা-দৌর্মনস্যাদি অকুশল পাপধর্ম আক্রমণ করলেও আচ্ছন্ন করতে পারে না। যেহেতু ভিক্ষু মন সংবরণে অভিনিবিষ্ট থাকে, মন ইন্দ্রিয়কে রক্ষা করে, মন ইন্দ্রিয়ে সংবরণ উৎপন্ন করে। একেই বলা হয় সংবরণ উদ্যম।
পরিত্যাগ উদ্যম কাকে বলে? এজগতে ভিক্ষু উৎপন্ন কাম বিতর্ক গ্রহণ না করে বরং উহাকে পরিত্যাগ, অপনোদন, সমূলে বিনষ্ট করে এবং চিত্ত পরিশুদ্ধ করে। উৎপন্ন ব্যাপদ বির্তক গ্রহণ না করে বরং উহাকে পরিত্যাগ, অপনোদন, সমূলে বিনষ্ট করে এবং চিত্ত পরিশুদ্ধ করে। উৎপন্ন বিহিংসা বিতর্ক গ্রহণ না করে বরং উহাকে পরিত্যাগ, অপনোদন, সমূলে বিনষ্ট করে এবং চিত্ত পরিশুদ্ধ করে। উৎপন্ন পাপজনক অকুশল ধর্ম গ্রহণ না করে বরং উহাকে পরিত্যাগ, অপনোদন, সমূলে বিনষ্ট করে এবং চিত্ত পরিশুদ্ধ করে। একেই বলা হয় পরিত্যাগ উদ্যম।
ভাবনা উদ্যম কাকে বলে? এজগতে ভিক্ষু স্মৃতি সম্বোধ্যঙ্গকে বিবেক , বিরাগ, নিরোধ দ্বারা আত্মসমর্পণে পরিপক্কতায় ভাবিত করে। ধর্ম বিচার সম্বোধ্যঙ্গকে বিবেক বিরাগ, নিরোধ দ্বারা আত্মসমর্পণে পরিপক্কতায় ভাবিত করে। বীর্য সম্বোধ্যঙ্গকে বিবেক বিরাগ, নিরোধ দ্বারা আত্মসমর্পণে পরিপক্কতায় ভাবিত করে। প্রীতি সম্বোধ্যঙ্গকে বিরাগ, নিরোধ দ্বারা আত্মসমর্পণে পরিপক্কতায় ভাবিত করে। প্রশ্রদ্ধি (প্রশান্তি) সম্বোধ্যঙ্গকে বিবেক বিরাগ, নিরোধ দ্বারা আত্মসমর্পণে পরিপক্কতায় ভাবিত করে। সমাধি সম্বোধ্যঙ্গকে বিবেক বিরাগ, নিরোধ দ্বারা আত্মসমর্পণে পরিপক্কতায় ভাবিত করে। উপেক্ষা সম্বোধ্যঙ্গকে বিবেক বিরাগ, নিরোধ দ্বারা আত্মসমর্পণে পরিপক্কতায় ভাবিত করে। একেই বলা হয় ভাবনা উদ্যম।
অনুরক্ষণ উদ্যম কাকে বলে? এজগতে ভিক্ষু উৎপন্ন উৎকৃষ্ট সমাধি নিমিত্তকে অস্থি সংজ্ঞা, পুলবক (ক্রিমি-কীট) সংজ্ঞা, বিবর্ণ সংজ্ঞা, ছিদ্র-বিছিদ্র সংজ্ঞা এবং স্ফীত (ফুলে কুৎসিৎ) সংজ্ঞা দ্বারা সংরক্ষণ বা পুনঃপুনঃ ভাবনা করে। একেই বলা হয় অনুরক্ষণ উদ্যম। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার উদ্যম।
“সংবরণ, পরিত্যাগ, ভাবনা আর অনুরক্ষণ,
এ’চার উদ্যমে আদিত্যবন্ধু বুদ্ধের ভাষণ।
উদ্যমী ভিক্ষু, দুঃখক্ষয়ে অর্হত্ব হন।”
(চতুর্থ)
৫. পঞ্ঞত্তিসূত্তং ণ্ড জ্ঞাপন সূত্র
১৫. “হে ভিক্ষুগণ! চারজন পুদ্গল অগ্র বলে জ্ঞাপনীয়। সেই চারজন কারা? যথা- আত্মভবসম্পন্নদের মধ্যে ইনি অগ্র-অসুরেন্দ্র রাহূ। কামভোগীদের মধ্যে ইনি অগ্র-রাজা মান্ধাতা। আধিপত্য বিস্তারকারীদের মধ্যে ইনি অগ্র-পাপীষ্ঠ মার। কিন্তু দেবলোক, ব্রহ্মলোক, মারভুবনসহ এজগতে শ্রম-ব্রাহ্মণ, দেব-মনুষ্য কাছে তথাগতই অগ্রে প্রকাশিত হন- অর্হৎ সম্যক সম্বুদ্ধরূপে। ভিক্ষুগণ! এই চারজন পুদ্গল অগ্র বলে জ্ঞাপনীয়।
আত্মভাবদের অগ্র রাহু, কামভোগীদের মান্ধাতা,
আধিপত্যে অগ্র মার, শির যেন উন্নতা।
বুদ্ধের কাছে এসব তুচ্ছ বারিকণা,
উর্ধে, অধেঃ তির্যকে সবদিকে বুদ্ধ অনন্যা,
ত্রিলোকে বুদ্ধই একমাত্র সদা অগ্রগণ্যা।
(পঞ্চম সূত্র)
৬. সোখুম্মসুত্তং - সূক্ষ্মতাসূত্র
১৬. “হে ভিক্ষুগণ! সূক্ষ্মতা চার প্রকার। সেই চার সূক্ষ্মতা কি কি? যথা- এজগতে ভিক্ষু শ্রেষ্ঠ রূপসূক্ষ্মতায় সমন্বিত হয়, সেই রূপসূক্ষ্মতা হতে অন্যরূপ সূক্ষ্মতাকে শ্রেষ্ঠ, উত্তম বলে দর্শন করে না; এবং সেই রূপসূক্ষ্মতা হতে অন্যরূপ সূক্ষ্মতাকে শ্রেষ্ঠ, উত্তম বলে আকাঙক্ষা করে না। শ্রেষ্ঠ বেদনা সূক্ষ্মতায় সমন্বিত হয়, সেই বেদনা সূক্ষ্মতা হতে অন্য বেদনা সূক্ষ্মতাকে শ্রেষ্ঠ, উত্তম বলে দর্শন করে না; এবং সেই বেদনা সূক্ষ্মতা হতে অন্য বেদনা সূক্ষ্মতাকে শ্রেষ্ঠ, উত্তম বলে আকাঙক্ষা করে না। শ্রেষ্ঠ সংজ্ঞা সূক্ষ্মতায় সমন্বিত হয়, সেই সংজ্ঞা সূক্ষ্মতা হতে অন্য সংজ্ঞা সূক্ষ্মতাকে শ্রেষ্ঠ, উত্তম বলে দর্শন করে না; এবং সেই সংজ্ঞা সূক্ষ্মতা হতে অন্য সংজ্ঞা সূক্ষ্মতাকে শ্রেষ্ঠ, উত্তম বলে আকাঙক্ষা করে না। শ্রেষ্ঠ সংস্কার সূক্ষ্মতায় সমন্বিত হয়, সেই সংস্কার সূক্ষ্মতা হতে অন্য সংস্কার সূক্ষ্মতাকে শ্রেষ্ঠ, উত্তম বলে দর্শন করে না; এবং সেই সংস্কার সূক্ষ্মতা হতে অন্য সংস্কার সূক্ষ্মতাকে শ্রেষ্ঠ, উত্তম বলে আকাঙক্ষা করে না। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার সূক্ষ্মতা।
রূপসূক্ষ্মতা জ্ঞাত আর বেদনা উৎপত্তিতে,
জ্ঞাতি আরো সংজ্ঞা, সংস্কার সূক্ষ্মতাতে,
তাই নাহি চাহে আর সূক্ষ্মতা প্রার্থিতে।
যে ভিক্ষু সমদর্শী, বিশুদ্ধ শান্তিপদে রত,
অন্তিম দেহধারী তিনি, হয় মার সসৈন্যে পরাজিত।
(ষষ্ঠ সূত্র)
৭. পঠম অগতিসুত্তং- অগ্রতি সূত্র (প্রথম)
১৭. “হে ভিক্ষুগণ! অগতিগমন চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- ছন্দগতিতে গমন, দ্বেষগতিতে গমন, মোহগতিতে গমন, ভয়গতিতে গমন। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার অগতিগমন।”
“ছন্দ, দ্বেষ, মোহ, ভয়ে ধর্ম যে করে লঙ্ঘন,
ক্ষয় তার যশঃকীর্তি, কৃষ্ণপক্ষ চন্দ্রের মতন।”
(সপ্তম সূত্র)
৮. দুতিয অগতিসুত্তং- অগতি সূত্র (দ্বিতীয়)
১৮. “হে ভিক্ষুগণ! গতিগমন চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- ছন্দ গতিতে গমন না করা, দ্বেষগতিতে গমন না করা, মোহগতিতে গমন না করা, ভয়গতিতে গমন না করা। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার গতিগমন।
“ছন্দ দ্বেষ মোহ ভয়ে ধর্ম যে করে না লঙ্ঘন,
বাড়ে তার যশকীর্তি, শুক্লপক্ষ চন্দ্রের মতন।”
(অষ্টম সূত্র)
৯. ততিয অগতিসুত্তং- অগতি সূত্র (তৃতীয়)
১৯. “হে ভিক্ষুগণ! অগতিগমন চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- ছন্দগতিতে গমন, দ্বেষগতিতে গমন, মোহগতিতে গমন, ভয়গতিতে গমন। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার অগতিগমন।
ভিক্ষুগণ! গতিগমন চার প্রকার। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- ছন্দগতিতে গমন না করা, দ্বেষগতিতে গমন না করা, মোহগতিতে গমন না করা, ভয়গতিতে গমন না করা। ভিক্ষুগণ! এই চার প্রকার গতিগমন।”
“ছন্দ, দ্বেষ, মোহ, ভয়ে ধর্ম করে যে লঙ্ঘন,
ক্ষয় তার যশ কীর্তি, কৃষ্ণপক্ষ চন্দ্রের মতন।
ছন্দ, দ্বেষ, মোহ, ভয়ে ধর্ম করে না যে লঙ্ঘন,
বাড়ে তার যশ কীর্তি, শুক্লপক্ষ চন্দ্রের মতন।”
(নবম সূত্র)
১০. ভত্তুদ্দেসকসুত্তং- ভোজন উদ্দেশক সূত্র
২০. “হে ভিক্ষুগণ! চার ধর্মে সমন্বিত ভোজনউদ্দেশক নিশ্চিতরূপে নিরয়ে পতিত হয়। সেই চার ধর্ম কি কি? যথা- ছন্দগতিতে গমন, দ্বেষগতিতে গমন, মোহগতিতে গমন, ভয়গতিতে গমন। ভিক্ষুগণ! এই চার ধর্মে সমন্বিত ভোজনউদ্দেশক নিশ্চিতরূপে নিরয়ে পতিত হয়।
“হে ভিক্ষুগণ! এ চার ধর্মে সমন্বিত ভোজনউদ্দেশক নিশ্চিতরূপে স্বর্গে উৎপন্ন হয়। সেই চার প্রকার কি কি? যথা- ছন্দগতিতে গমন না করা, দ্বেষগতিতে গমন না করা, মোহগতিতে গমন না করা, ভয়গতিতে গমন না করা। ভিক্ষুগণ! এই চার ধর্মে সমন্বিত ভোজনউদ্দেশক নিশ্চিতরূপে স্বর্গে উৎপন্ন হয়।
“যে জন কামের প্রতি হয় জ্ঞানহীন,
ধর্মের অগৌরবে হয় সে পাপাধীন।
ছন্দ, দ্বেষ, মোহ আর ভয়গামী জন,
পরিষদে সেই জন নিষপ্রভ হন।
এভাবে জ্ঞাত শ্রমণ, হয় প্রকাশিত,
সাধু দ্বারা তিনি হন অতি প্রশংসিত।
ধর্মে যারা স্থিত হয় পাপে রত নয়,
পুণ্যকর্ম যত আছে, তাতে সেই নির্ভয়।
ছন্দ, দ্বেষ, মোহ ভয়ী নয় যে জন,
পরিষদে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলে সেই জন।
জ্ঞাত হয়ে শ্রমণধর্ম করে প্রকাশিত,
শ্রমণ বলে যান সবে হয় এই মত।”
(দশম সূত্র)
স্মারক গাথা-
বিচরণ, শীল, উদ্যম, সংবরণ, জ্ঞাপনতে হয় পাঁচ,
সূক্ষ্মতা, তিন অগতি, ভোজন উদ্দেশক সহ হয় দশ।”