ব্রেকিং নিউজ

সোন স্থবির উপাসক থাকাকালীন সময়ে কি তথাগতের নিকট কি আকাঙ্খা করেছিলেন?

 

ইলা মুৎসুদ্দী

7-leg-buddha

একদিন শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠী ধর্ম সভায় বুদ্ধ কর্তৃক একজন ভিক্ষুকে বিশেষ প্রশংসা পূর্বক গুরুত্বপূর্ণ পদে সর্বাগ্র স্থানে প্রতিষ্ঠা করিতে দর্শন করিয়া সেই ভিক্ষুর ন্যায় শ্রেষ্ঠ উৎসাহী গুরুত্ব পূর্ণ পদ পাইবার ইচ্ছা করিলেন। এতদুদ্দেশ্যে পর দিন বুদ্ধ প্রমুখ ভিক্ষু সংঘকে মহাদান দিয়া তথাগত বুদ্ধের পাদমূলে প্রার্থনা করিলেন, “প্রভো, এই পূণ্যের প্রভাবে আমি যেন ভবিষ্যত বুদ্ধের শাসনে আপনি গতকল্য জনৈক ভিক্ষুকে বিশেষ উৎসাহী বলিয়া অগ্রস্থানে প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন সেই ভিক্ষুর ন্যায় উৎপন্ন হইতে সক্ষম হই।” বুদ্ধও ক্রমিক ধর্ম দেশনার মাধ্যমে (দান, শীল, ভাবনা স¤পর্কিত ক্রমিকভাবে) তাহার পূণ্যের ভবিষ্যত ফলের বর্ণনা করিলেন এবং  শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠীর আকাঙ্খা পরিপূর্ণ হইবে বলিয়া ভবিষ্যত বাণী করিলেন।

শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠীও সেই জন্মে আরও আরও অধিক কুশল কর্ম সম্পদন করিয়া বহু পূণ্য সঞ্চয় করিলেন এবং মৃত্যুর পর দেবলোকে জন্ম গ্রহণ করিলেন। দেবলোক হইতে যথা আয়ুষ্কাল সুখ ভোগের পর লোকান্তরিত হইলে পূণ্য ফল অনুযায়ী দেবলোক, মানব লোকে জন্মান্তর গ্রহণ পূর্বক ভ্রমণ করিতে করিতে পদুমুত্তর বুদ্ধের আবির্ভাবের এক লক্ষ কল্প পরে ভদ্র কল্পে কাশ্যপ বুদ্ধের নির্বাণ প্রাপ্তির পর বুদ্ধের শাসন প্রায় অবসানের কালে শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠী বারাণসীতে ধনী কুলে জন্ম গ্রহণ করিয়া মহাশাল নামে পরিচিত হন। মহাশাল শ্রেষ্ঠী সর্বদা পাঁচশত বন্ধু সহচর পরিবেষ্টি হইয়া চলাফেরা করিতেন।

একদিন একজন পচ্চেক বুদ্ধ বারানসি নগরে আসন্ন আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতে বর্ষাব্রত অধিষ্ঠানের ইচ্ছায় একটি কুটির নির্মাণ কল্পে গঙ্গা নদীতে ভাসিয়া আসা গাছ কাঠ বাঁশ ইত্যাদি সংগ্রহ করিতেছিলেন।

শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠী তার বন্ধু ও সহচর পাঁচশত জন সহ পচ্চেক বুদ্ধের এই কার্য্য দেখিয়া তাহার নিকট আগমন করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন “ এই সকল কাঠ, বাঁশ আপনি কেন সংগ্রহ করিতেছেন?” তখন পচ্চেক বুদ্ধ উত্তর করিলেন, “দায়কগন আমরা ভিক্ষু মাত্রেই আষাঢ়ী পূর্ণিমা হইতে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস ব্রত অবলম্বন করিয়া থাকি, এই বর্ষাবাসব্রত দীর্ঘ তিন মাস একই স্থানে যাপন করিতে হয়- তাই নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে  অবস্থান করার জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের প্রয়োজন হয়। আমিও নিরাপদ আশ্রয় নির্মাণ করিবার জন্য এই কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি সংগ্রহ করিতেছি।”

শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠী ও তাঁহার বন্ধুগণ বলিলেন, “ভদন্ত, ইহা খুবই আনন্দের কথা, আপনি কিছুই করিবেন না, আমরা সকলে মিলিয়া আগামী কল্যের মধ্যে একখানা কুটির নির্মাণ করিয়া দিব, আপনি আগামী পরশু আসিয়া কুটির খানার দান গ্রহণ করুন।”

পচ্চেক বুদ্ধ তাঁহাদের কথায় আশ্বস্ত হইলেন এবং তাঁহাদিগকে প্রশংসা করিয়া “উত্তম” বলিয়া চলিয়া গেলেন। মহাশাল শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠী ও বন্ধুগণ মিলিয়া একটি উপযুক্ত ও মনোরম স্থান নির্বাচন করিয়া সেখানে দিবা ও রাত্রিকালীন বিহার উপযোগী দুইটি মনোরম কুটির, ধর্মশালা, রন্ধন শালা, মন্ডপ, চংক্রমণ স্থান প্রভৃতি নির্মাণ করিয়া দিলেন। পচেচক বুদ্ধকে খাদ্যভোজ্য দ্বারা পূজা করিবার উদ্দেশ্যে প্রচুর উত্তম খাদ্য ভোজ্য সজ্জিত করিয়া ঐ নির্মিত বিহার দান করিবার জন্য পচ্চেক বুদ্ধের আগমনের জন্য অপেক্ষা করিতে লাগিলেন। যথাসময়ে পচ্চেক বুদ্ধ আগমন করিলেন এবং যাবতীয় নির্মিত বিহার ও অন্যান্য গৃহম-পাদি পচেচক বুদ্ধকে দান করিলেন।

শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠী পচেচক বুদ্ধের শয্যায় বিছাইবার জন্য লক্ষ টাকা মূল্যের কম্বল ও স্বীয় উত্তরীয় দান করিলেন। পচেচক বুদ্ধ এই মনোরম মহামূল্যবান কম্বল বিছানো শয্যায় উপবেশন করিলে তাঁহার পরিধেয় কাষায় বস্ত্রের রঙে উজ্জল আলোকে উদ্ভাসিত হইয়া অত্যন্ত বিশোভিত হইল। এইরূপ মনোরম শোভা দর্শন করতঃ অত্যন্ত আনন্দিত হইয়া শ্রীবর্ধন বলিলেন, “প্রভো, অদ্য আমার এই কৃত পূণ্যের ফল স্বরূপ আমি যেখানে জন্মধারণ করি না কেন সুন্দর সুগঠিত হস্তপদ সম্পন্ন আমার শরীর মনোরম ও সুমন পুষ্পের ন্যায় শরীর বর্ণ হউক। আমার শরীর পরিপুষ্ট ও সুকোমল হউক এবং শরীর আলোকজ্বল আভায় সব সময় দ্যুতিমান হউক” এইভাবে তিনবার প্রার্থনা করিলেন।

তিনমাস ব্যাপী পচেচক বুদ্ধকে আহারাদি চতুরপ্রত্যয় দ্বারা সেবা পূজা করিয়া বর্ষাবাস সমাপ্ত হইলে শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠী পচেচক বুদ্ধকে লক্ষ টাকা মূল্যের কম্বল এবং চীবর দান করিয়া পূজা করিলেন। পচেচক বুদ্ধও পুণ্যানুমোদন করিয়া হিমালয়ে প্রস্থান করিলেন।

মহাশাল শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠী সেই জন্ম হইতে মৃত্যুর পর তাবতিংস স্বর্গে দেবরাজ ইন্দ্র রূপে জন্মগ্রহণ করিলেন। যথা আয়ুষ্কাল দেবরাজ ইন্দ্রের দিব্য সুখ সমৃদ্ধি পরিভোগ করিয়া শ্রীবর্ধন শ্রেষ্ঠী দেবলোক ও মানবলোকে জন্মান্তর গ্রহণ করিয়া এই ভদ্রকল্পের এক সময় মহাসম্বত রাজা হইতে দুই লক্ষ পাঁচ অযুত, দুই হাজার পাঁচশত পঞ্চম রাজার পরে বারাণসী রাজ্যে আগ্নিক নামক রাজা হইয়া জন্মলাভ করেন। তিনি ঋদ্ধিমান ও মহাশক্তিশালী ছিলেন। কথা বলিবার সময় মুখ হইতে চক্রাকারে অগ্নি জ্বলিয়া উঠিত, শরীরের বর্ণও তখন অত্যুজ্বল ভাবে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিত।

রাজা অগ্নিকের হস্তা, চিত্রা, জম্বু, জ্বালিনী ও বিশাখা নামে পাঁচজন রাণী ছিলেন। প্রধানা মহিষী হস্তার চারিপুত্র ও পাঁচকন্যা ছিল। সেই চারি পুত্রের নাম উল্কা মুখ, করক-ু, হ¯িনিক ও মিনিসুর ছিল। পাঁচকন্যাগণের নাম ছিল প্রিয়া, সুপ্রিয়া, আনন্দা, বিজিতা ও বিজিতসেনা।

নয়জন পুত্রকন্যা জন্ম দানের পর প্রধানা মহিষী হস্তা পরলোক গমন করেন। রাজা দ্বিতীয় রাণী চিত্রাকে প্রধানা মহিষীরূপে বরণ করেন। চিত্রাকে পাটরাণী করার পর যথাসময়ে জন্তু নামে তাঁহার একটি পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করে। একবাজ রাজা অগ্নিকের তর্জনীতে স্ফোটক (ফোঁড়া) রোগ উৎপন্ন হইলে উক্ত স্ফোটক পরিপক্ক হইয়া ভীষণ যন্ত্রণা ভোগ করিতে লাগিলেন। রাজার এই যন্ত্রণাদায়ক অবস্থায় রাণী রাজার রোগ যন্ত্রণা উপশমের উদ্দেশ্যে রাজার তর্জনী অঙ্গুলিটি নিজের মুখের মধ্যে রাখিয়া বাতাস দিতে লাগিলেন। এইরকম অবস্থায় রাজা কখন ঘুমাইয়া পড়িলেন। ইহাতে রাজার আঙ্গুলেন পরিপক্ক স্ফোটক গলিয়া পুঁজ বাহির হইল এবং রাণীর মুখে লিপ্ত হইল। রাণী মুখভর্তি পুঁজ লইয়া অশ্বস্তি লাগিলেও রাজার নিদ্রাভঙ্গ হইবে এই ভয়ে মুখ হইতে রাজার অঙ্গুলি নিষ্ক্রান্ত না করিয়া পুঁজ গলাধকরণ করিলেন। রাজা প্রাতঃকালে গাত্রোত্থান করিয়া দেখিলেন তাঁহার বেদনার উপশম হইয়াছে এবং রাণী সারা রাত্রি তাঁহার অঙ্গুলি মুখে পুড়িয়া অঙ্গুলির ফোঁড়া হইতে নিষ্ক্রান্ত পুঁজ রাণী গলাধকরণ করিয়া রাজার ঘুম ভাঙেন নাই জানিয়া রাজা অতিশয় সন্তুষ্ট হইলেন। রাজা মহারাণীকে সাদরে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, “মহারাণী তোমার ন্যায় আমার দ্বিতীয় কোন প্রিয় পাত্রী নাই, তোমার যাহা ইচ্ছা হয় সেই বর আমার নিকট যাচঞা কর।”

রাণী চিত্রা তৎশ্রবণে বলিলেন, “মহারাজ আমার অন্য কোন বর নাই, আমার একমাত্র পুত্র জন্তুকে আপনার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী করিবার জন্য বর প্রার্থনা করিতেছি।”

তদুত্তরে রাজা বলিলেন, “জ্যেষ্ঠপুত্রের বর্তমানে তাহা সম্ভব নয় রাণী।” রাণী বার বার প্রার্থনা করিলেও রাজা বার বার প্রত্যাখ্যান করিলেন। রাণী কৌশল অবলম্বন করিয়া প্রার্থনা করিলেন এবং রাজাকে সম্মত করিলেন।

রাজা রানী চিত্রার বর অনুমোদন করিয়া জ্যেষ্ঠ চারিজন পুত্রকে আহ্বান করিয়া একদিন বলিলেন, “প্রিয় বৎসগণ, বর্তমান মহারাণী তাঁহার পুত্র জন্তুকে রাজা করার জন্য বার বার অনুরোধ করায় আমার উত্তরাধিকারী করিবার আমি প্রতিশ্রুতি দিয়াছি। আমার অবর্তমানে তোমাদের মধ্যে রাজ সিংহাসন লইয়া গন্ডগোল হইবে কাজেই বর্তমানে  তোমরা রাজার মঙ্গলহস্তী , ঘোড়া, শ্বেতছত্র ও সিংহাসন ব্যতীত অন্যান্য অশ্ব, হস্তী,, রথ, ধন রত্ন ও প্রজা ইচ্ছামত লইয়া তোমরা অন্যত্র গমন কর। পরে আমার অবর্তমানে ফেরৎ আসিয়া রাজ্য দখলের চেষ্টা করিও।”

রাজার এই কথায় রাজপুত্রগণ তাহাদের পাঁচজন ভগ্নীগণকে লইয়া ও আটজন বিচক্ষণ মন্ত্রী সঙ্গে করিয়া প্রচুর ধনরত্ন সহ রাজার পদ বন্দনা করিয়া অন্যত্র চলিয়া গেলেন। বহু প্রজা ও সৈন্য রাজপুত্র ও রাজকন্যাগণের সহিত গমন করিল। তাঁহাদের পরিষদ তিন যোজন প্রমাণ দীর্ঘ হইয়াছিল।

রাজপুত্রগণ সঙ্গে একসংখ্যক সৈন্য দর্শন করিয়া বলিলেন, “আমরা যে রাজ্য ফেলিয়া আসিয়াছি সেই রাজ্যের প্রায় সকল সৈন্য সামন্তই আমাদের সঙ্গে চলিয়া আসিয়াছে, বলিতে গেলে সেই রাজ্য এখন খুবই দুর্বল হইয়াছে, কাজেই সেই রাজ্যকে আমাদের পিতার অবর্তমানে পুনর্দখল করিয়া কোন লাভ নাই। এই বিশাল জম্বুদ্বীপের পরিধি ব্যাপক, আমরা মুক্ত এলাকাতে রাজ্য প্রতিষ্ঠা করিয়া রাজত্ব করিব।” এই বলিয়া তাঁহারা জনমানবহীন এলাকার সন্ধান করিতে লাগিলেন।

এই রকম মুক্ত এলাকা সন্ধান করিতে করিতে তাঁহারা এক সময় একটি নিগ্রোধারণ্যে উপনীত হইলেন। এই অরণ্যটি গৌতম বুদ্ধের জন্মের বহু পূর্বে বহু সম্পত্তি পরিত্যাগ করিয়া ঋষি প্রব্রজ্যা গ্রহণকারী কপিল ঋষি নামক এক মহর্ষির সাধন ক্ষেত্র।

এই অরণ্যে অবস্থিত তৃণ, লতা অরণ্যগুচছ সমহ সবই দক্ষিণ দিকে হেলিয়া রহিয়াছে। সিংহ, ব্যাঘ্র ও অপরাপর হিংস্র জন্তুগণ মৃগ, বরাহ প্রভৃতি তাহাদের শিকার ধরিতে এই অরণ্যে প্রবেশ করিলে সঙ্গে সঙ্গে হিংস্রতা ভুলিয়া যায়, পর¯পর হিংসা ও ভয় বিস্মৃত হইয়া -পরম মৈত্রী পরায়ণ হইয়া একসঙ্গে বিচরণ করিয়া থাকে। রাজপুত্র ূ এই অত্যাশ্চর্য্য ব্যাপার লক্ষ্য করিয়া “এই স্থানটি খুবই পবিত্র এবং মূল্যবান ভূমি” বলিয়া সেখানে নতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠার বিষয় বিবেচনা করিলেন।

কপিল ঋষি ভূমিজাল মন্ত্রে পারঙ্গম ছিলেন। সেই মন্ত্রের প্রভাবে মাটির অভ্যন্তরে হউক কিংবা উপরে শূন্যে হউক আশিহস্ত প্রমাণ স্থানের হিতাহিত অবস্থা জানা যায়। রাজপুত্রগণ কপিল ঋষির সহিত দর্শন লাভ হইলে তাঁহাদের নগর স্থাপনের জন্য স্থান নির্ণয় করিয়া দিবার জন্য কপিল ঋষিকে অনুরোধ করিলেন।

কপিল ঋষি রাজপুত্রগণকে দেখিয়া সন্তুষ্ট হইলেন এবং বলিলেন “ এই স্থানটি শ্রেষ্ঠ স্থান, ইহার ভূমি খুবই সরস। সমগ্র জম্বুদ্বীপের মধ্যে  এই স্থানটি অতি উত্তম স্থান। এইখানে রাজ্য প্রতিষ্ঠা করিলে সেই রাজ্যটি অতুলণীয় হইবে। তোমাদের রাজধানী প্রতিষ্ঠার জন্য আমি একটু উপযুক্ত স্থান নির্ণয় করিয়া দিব এবং রাজ্যের সীমা সঙ্কেত করিব- তোমাদের এই সঙ্কেতের মধ্যে অবস্থা করিয়া রাজ্য প্রতিষ্ঠা কর। এই বলিয়া কপিল ঋষি রাজপুত্রদিগকে উপদেশ প্রদান করিরেন। রাজপুত্রগণও কপিল ঋষির উপদেশ অনুসারে একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করিলেন। সেই রাজ্যটি কপিল ঋষির দ্বারা বিরচিত হইবার কারণে কপিলাবস্তু নামে অখ্যায়িত হইল।

রাজ্য প্রতিষ্ঠা কার্য্য সমাপ্ত হইলে রাজকীয় কার্যাবলী সম্পন্ন করিবার জন্য আটজন অমাত্য কর্মরত হইলেন। তাঁহারা একদিন এইরূপ বলাবলি করিলেন “রাজপুত্রগণ এখন উপযুক্ত বয়সে উপনীত হইয়াছেন, তাঁহাদের পিতা বর্তমানে এখানে নাই, অমাত্য হিসাবে আমাদেরই দায়িত্ব উপস্থিত হইয়াছে।” তখন রাজপুত্রদিগকে এইরূপ বলিলেন, “ রাজপুত্রগণ, আপনারা বিবাহযোগ্য বয়সে উপনীত হইয়াছেন, আপনাদের সঙ্গে অন্য কোন রাজকন্যা নাই, বংশের বৈশিষ্ট মর্যাদা রক্ষার্থে আপনাদের জ্যৈষ্ঠা ভগ্নি অনুপ্রিয়াকে মাতৃস্থানে স্থাপন করিয়া অন্য চারি ভগ্নির সহিত আপনারা প্রত্যেকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইয়া আপনারা আপনাদের বংশের বিশুদ্ধতা রক্ষা করুন।”

রাজপুত্রগণ অমাত্যগণের পরামর্শে সম্মত হইলেন এবং জ্যৈষ্ঠ ভগ্নি অনুপ্রিয়া মাতৃ স্থানে স্থাপন করিয়া চারি ভ্রাতা অপর চারি ভগ্নির সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইলেন। অমাত্যগণ যথা শাস্ত্র বিধিমতে বিবাহ কার্য্য সম্পন্ন করিলেন।

এই সংবাদ অগ্নিক রাজাকে প্রেরণ করা হইল। অগ্নিক রাজা পুত্রকন্যাগণের এই বৈবাহিক কাজে — আমার পুত্র কন্যাগণ বংশের বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য পরষ্পর সম্মত বা সক্য হইয়া বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইয়াছেন। এই বাক্য অনুসারে কপিলাবস্তুতে নতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠাকারী বংশের নাম “শাক্যবংশ” নামে বিখ্যাত হইয়াছে।

সূত্র – বুদ্ধের সমকালীন ভিক্ষুসংঘ, মুদিতারত্ন ভিক্ষু

সম্মন্ধে ela mutsuddi

এটা ও দেখতে পারেন

খুব সংক্ষেপে মহাসতিপট্ঠান সহায়িকা

একূশটি উপায়ে অরহ্ত্ত্ব লাভের উপায় তথা কর্মস্থান সংযূক্ত গভীর অর্থসংযুক্ত মহাসতিপট্ঠান সূত্তI এখানে একুশটি উপায়ে …

Leave a Reply

Translate »